ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মহন মিয়া (১০) নামের এক এতিম শিশুর বকনা গরু চুরির ঘটনায় চোর চক্রের জবাইকৃত গরুসহ দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সরাইল থানার পুলিশ।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিকাল বাজার এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর আগে জবাইকৃত গরু নিয়ে সিএনজিযোগে পালানোর সময় জবাইকৃত গরুসহ ২ চোরকে আটক করেন স্থানীয় জনতা।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিকাল বাজার এলাকার হুমায়ূন মিয়ার ছেলে সোলাস মিয়া (২৯) ও কালিকচ্ছ ইউনিয়নের বিশুতারা গ্রামের মৃত আইয়ুব আলী ছেলে সাজু মিয়া (২৬)।

প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিশুতারা গ্রামের মৃত মমিন মিয়ার একমাত্র শিশুপুত্র মহন মিয়া (১০)। অনেক আগেই তার পিতা-মাতা মারা যায়। এতিম মহন মিয়াকে তার খালু একটি বকনা বাছুর লালন পালন করার জন্য আল্লাহর ওয়াস্তে কিনে দেয়। সেই থেকে মহন মিয়া বকনা গরুটি লালন পালন করে আসছে। শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) দিবাগত রাত ২ টার দিকে সংঘবদ্ধ একদল চোর বকনা গরুটি চুরি করে নিয়ে যায়।

সকাল ৬ টার দিকে সরাইল বিকাল বাজার মুলিহাটা নামক স্থানে একটি সিএনজিতে জবাইকৃত একটি বকনা গরু দেখতে পান খোরশেদ আলম নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী। এ সময় তিনি সন্দেহবশত বাজারের অন্যান্য লোকজনের সহযোগিতায় ২ চোর ও জবাইকৃত গরুসহ সিএনজিটি আটক করে পুলিশে খবর দেন।

সরাইল থানার এসআই কবির সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে জবাইকৃত গরুসহ সিএনজিটি উদ্ধার করে ও ২ চোরকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।

এ ব্যাপারে মহন মিয়া বলেন, আমার পিতা মাতা অনেক আগেই মারা গেছে। কোনো ভাই বোন নাই। আমার মুসলমানির সময় আমার খালু আমাকে আল্লাহরস্থে গরুটি কিনে দিয়েছে।

এ ব্যাপারে মহন মিয়ার নানা আবুল হোসেন বলেন, আমার নাতি এতিম। তার খালু একটি গরু কিনে দিয়েছে লালন পালন করে ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য। এই গরুটি রাত ২ টার দিকে চুরি করে নিয়ে জবাই করে ফেলল চোরেরা।

সিএনজি চালক সাইফুল ইসলাম বলেন, সোলাস নামে এক লোক সিএনজি স্টেশনে এসে রোগী নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আমাকে বিশুতারা গ্রামে নিয়ে যায়। সেখান থেকে জোরপূর্বক আমার সিএনজিতে একটি জবাইকৃত গরু উঠিয়ে সরাইল বিকাল বাজার মলিহাটা নিয়ে আসে।

এ বিষয়ে সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে এবং গ্রেফতারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হবে।

বিবার্তা/আকঞ্জি/জেএইচ