
সংক্রামক রোগ মাঙ্কিপক্সের প্রবেশ ঠেকাতে দেশের সব প্রবেশপথের মতোই চুয়াডাঙ্গার দর্শনা জয়নগর আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে বাড়তি নজরদারি শুরু করেছে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ।
১৯ আগস্ট, সোমবার সকালে বিবার্তাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. হেলেনা আক্তার নিপা।
তিনি বলেন, মাঙ্কিপক্স এটি এক ধরনের সংক্রামক রোগ। এটা অনেকটা গুটি বসন্তের মত, তবে তুলনামূলকভাবে কম গুরুতর। এর সংক্রমণও খুব বেশি ছড়ায় না। এর উপসর্গ অনেকটা জ্বর বা ফ্লুর মতো। এর সাধারণ লক্ষণগুলো হলো- জ্বর, মাথাব্যথা, পেশিব্যথা, পিঠে ব্যথা, দুর্বলতা ও ত্বকের ফুসকুড়ি বা ক্ষত। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে, এমনকি শ্বাসপ্রশ্বাস থেকেও অন্য কেউ এতে সংক্রমিত হতে পারেন।
ডা. হেলেনা আক্তার বলেন, জ্বর শুরু হওয়ার পর দেহে গুটি দেখা দেয়। এসব গুটি শুরুতে দেখা দেয় মুখে। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে হাত এবং পায়ের পাতাসহ দেহের সব জায়গায়। এই গুটির জন্য রোগী দেহে খুব চুলকানি হয়। পরে গুটি থেকে ক্ষত দেখা দেয়। জল বসন্তের মতই রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলেও দেহে এসব ক্ষত চিহ্ন রয়ে যায়। রোগ দেখা দেওয়ার ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যে রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন।
তিনি আরও বলেন, যদিও বাংলাদেশে এখনো ভাইরাসটি শনাক্ত হয়নি। আফ্রিকার পর দক্ষিণ এশিয়ার দেশ পাকিস্তানে এক ব্যক্তি এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ফলে বাংলাদেশেও প্রবেশের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। প্রতিবেশী দেশ থেকে মাঙ্কিপক্স নিয়ে কেউ যাতে প্রবেশ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এ প্রসঙ্গে দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারী (এসআইটি) শামীম খান বলেন, ভারত থেকে আগত যাত্রীদের তাপমাত্রা ইনফ্রারেড থার্মোমিটার দিয়ে স্ক্রিন করা হচ্ছে। শরীরের কোথাও কোনো র্যাশ বা মাঙ্কিপক্সের কোনো লক্ষণ আছে কিনা তা চেক করা হচ্ছে। মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত কোনো দেশে ভ্রমণ করেছে কি না— এমন তথ্য জানতে চাওয়া হচ্ছে। মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছে এমন সন্দেহ হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কতৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী যাত্রীদের দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অথবা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে।
এদিকে মাঙ্কিপক্স নিয়ে গত শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিদেশ থেকে আগমনের ২১ দিনের মধ্যে লক্ষণগুলো দেখা দিলে যাত্রীদের ১০৬৫৫ নম্বরে কল করতে অনুরোধ করা হয়েছে। কারণ আক্রান্ত দেশ বা ব্যক্তির সংস্পর্শে রোগটি বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি আফ্রিকার দেশ কঙ্গোয় প্রথম মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপরই মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়ে উগান্ডা, রুয়ান্ডা, কেনিয়ার মতো দেশগুলোতে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে পাকিস্তানে প্রথম রোগী শনাক্ত হয়েছে।
বিবার্তা/আসিম/এমজে
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]