টেকনাফগামী ট্রলারে মিয়ানমারের গুলি
প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২৪, ২২:২৫
টেকনাফগামী ট্রলারে মিয়ানমারের গুলি
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

মিয়ানমারের সংঘাতের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরের বিকল্প নৌপথ ব্যবহার করে সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফে আসা দুইটি ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।


১৭ জুলাই, বুধবার দুপুর ২টার দিকে টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ বদরমোকাম এলাকা অতিক্রমের সময় ট্রলার ২টিকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হয়।


সেন্টমার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।


তিনি জানান, দুপুর ১২টার দিকে সেন্টমার্টিন ঘাট থেকে ৭৫ জন যাত্রী নিয়ে টেকনাফের উদ্দেশে যাত্রা করে এফবি নাইম ও এফবি রাশেদ নামের দুইটি ট্রলার। একসঙ্গে যাত্রা করা ট্রলার দুইটি বেলা ২টার দিকে বিকল্প নৌপথ ব্যবহার করে বঙ্গোপসাগর অতিক্রম করে নাফনদীর মোহনায় প্রবেশ করছিল। এসময় মিয়ানমারের অংশ থেকে একের পর এক গুলিবর্ষণ শুরু করা হয়। ট্রলার চালকরা কৌশলে ট্রলার চালিয়ে গেলেও টানা আধা ঘণ্টা ধরে ট্রলার দুইটিকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। এতে কোনো যাত্রী হতাহত না হলেও ট্রলারে গুলি লেগেছে। আড়াইটার দিকে ট্রলার ২টি নিরাপদে শাহপরীরদ্বীপের জেটিতে পৌঁছায়। ট্রলার ২টি ঘাটে পৌঁছানো পর্যন্ত ওপার থেকে টানা গুলিবর্ষণ করা হয়।


আবদুর রশিদ বলেন, মিয়ানমার থেকে দূরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরের এলাকায় ট্রলার দুইটি চলাচল করছিল। এরপরও মিয়ানমার থেকে গুলিবর্ষণ করায় চালকসহ দ্বীপবাসীর মনে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।


কারা গুলি করেছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যতটুকু জানা গেছে মিয়ানমারের ওপারের অংশটি নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। এরাই গুলি করেছে।


টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, মিয়ানমার থেকে সেন্টমার্টিনের ২টি ট্রলারে আবারও গুলিবর্ষণের বিষয়টি জেনেছি। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন মহলকে অবহিত করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্তের পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।


এ বিষয় নিয়ে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।


এর আগে মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের জেরে ১ জুন বিকালে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওনা হওয়া পণ্যসহ ১০ যাত্রীর এক ট্রলারকে লক্ষ্য করে নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে গুলি বর্ষণ করা হয়। এছাড়া ৫ জুন সেন্টমার্টিনের স্থগিত হওয়া একটি কেন্দ্রে টেকনাফ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদের ফলাফল নির্ধারণের জন্য ভোট গ্রহণ হয়। আনুষ্ঠানিকতা শেষে ফেরার পথে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেটসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ট্রলারকে লক্ষ্য করে একই পয়েন্টে ফের গুলি করা হয়। ৮ জুন আরও এক ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয় একই পয়েন্টে।


সর্বশেষ ১১ জুন একটি স্পিড বোটকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হয়। প্রতিটি গুলিবর্ষণের ঘটনাই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ জলসীমায় ঘটেছে। গুলিবর্ষণের এসব ঘটনায় হতাহতের না হলেও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দ্বীপে খাদ্য সংকট ও জরুরি আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়।


১২ জুন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের জরুরি সভায় বঙ্গোপসাগরকে ব্যবহার করে যাত্রীদের আসা-যাওয়া ও পণ্য নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।


১৩ জুন থেকে টেকনাফের সাবরাং মুন্ডার ডেইল উপকূল ব্যবহার করে শুরু হয় যাত্রীদের আসা-যাওয়া।


১৪ জুন কক্সবাজার শহর থেকে দ্বীপে পণ্য নিয়ে যায় জাহাজ। আর বিকল্প পথ হিসেবে শাহপরীরদ্বীপ ও সেন্টমার্টিনে সীমিত পরিসরে কিছু নৌযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয়।


এরপর থেকে কিছু দিন পরপর বিকল্প নৌপথটি ব্যবহার করে সেন্টমার্টিনের আসা যাওয়া চলে আসছিল।


বিবার্তা/ফরহাদ/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com