লিবিয়ায় অপহৃত গুরুদাসপুরের চার যুবক উদ্ধার
প্রকাশ : ০৯ জুন ২০২৪, ২১:২৪
লিবিয়ায় অপহৃত গুরুদাসপুরের চার যুবক উদ্ধার
গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

লিবিয়ায় অপহরণকারীদের হাতে জিম্মি থাকার ১০ দিন পর উদ্ধার হয়েছেন নাটোরের গুরুদাসপুরের ৪ যুবক। লিবিয়ার সেনাবাহিনী কর্তৃক উদ্ধার হওয়া সোহান প্রাং (২০) তার মাকে ভিডিও কলে উদ্ধারের কথা জানান।


ছেলের মুক্তিতে খুশি হয়েছেন মা ধুলি বেগম। উদ্ধারের খবর পেয়ে অপহৃত চার যুবকের পরিবারসহ বিয়াঘাট এলাকাবাসীর মনে খুশির জোয়ার বইছে।


সোহান তার মাকে ভিডিও কলে বলেন- মা তুমি আর কোঁদো না। আমরা এখন মুক্ত। সবাই সুস্থ আছি। বর্তমানে আমরা সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রয়েছি।


উদ্ধারকৃত সোহান উপজেলার বিয়াঘাট গ্রামের মো. শাজাহান আলীর ছেলে। অপর তিনজন হলেন একই গ্রামের মো. তয়জাল শেখের ছেলে মো. সাগর হোসেন (২৪), মৃত শুকুর আলীর ছেলে নাজিম উদ্দিন (৩২) এবং এমদাদুলের ছেলে মো. বিদ্যুৎ হোসেন (২৬)।


জানা যায়- দীর্ঘদিন যাবত লিবিয়ায় চাকরি করছিলেন এমদাদুল হক। ছেলে বিদ্যুৎ হোসেনসহ গ্রামের অপর তিনজনকে নিয়ে পাড়ি জমান লিবিয়ায়। সংসারে ফিরবে সচ্ছলতা এমন আশায় নিঃস্ব হয়ে নিজ ভিটামাটি বন্দুক, ধার-দেনা, আর ঋণ করে তিন যুবককে বিদেশে পাঠান তার পরিবারবর্গ। সেখানে কাজ করে প্রতি মাসে পরিবারে পাঠাতেন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। সেই টাকা দিয়ে সংসারসহ ধার-দেনা আর ঋণ পরিশোধ করতে থাকেন তার পরিবার।


উল্লেখ্য গত ২ জুন ওই চার যুবককে অপহরণ করে নির্যাতনের ভিডিও বার্তা পরিবারের মাঝে পাঠালে তাদের মধ্যে নেমে নেমে আসে অন্ধকার। জনপ্রতি ১০ লাখ করে চার পরিবারের কাছে চাওয়া হয় ৪০ লাখ টাকা। কিন্তু সব মিলিয়ে ৪০ হাজার টাকা দেওয়ার মত সামর্থ্য তাদের পরিবারের কাছে ছিল না।


জিম্মি তাদের সন্তানকে ফিরে পেতে মুক্তিপণ হিসেবে চার পরিবারবর্গের কাছ চাওয়া হয় থেকে ৪০লাখ টাকা। তবে যারা অপহরণ করেছেন তারাও বাঙালি। জানা যায় না তাদের পরিচয়। পরিবারবর্গের ‘ইমু’ নম্বরে জিম্মি যুবকদের শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও পাঠানো হয়েছিল। টাকা দিতে দেরি হলে বাড়ানো হবে নির্যাতনের পরিমাণ। মুক্তিপণ না দিলে তাদের সন্তানকে মেরে ফেলা হবে এমন হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। তাদের আহাজারিতে এমন ঘটনার কথা জানতে পারে পুরো গ্রাম।


অবশেষে গতকাল রবিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টার দিকে লিবিয়ার বেনগাজি শহর থেকে তাদের উদ্ধার করেন সে দেশের সেনাবাহিনী। এরপর উদ্ধারের খবর সেখান থেকে ভিডিও বার্তায় নাটোরের গুরুদাসপুরের ওই চার পরিবারের কাছে জানানো হয়। প্রবাসী কল্যাণ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার হওয়া পরিবারের সদস্যরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।


গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. উজ্জ্বল হোসেন বলেন, লিবিয়ায় জিম্মি থাকা ৪ যুবকের উদ্ধারের ঘটনা পুলিশ সুপার আমাকে অবহিত করেছেন। খবরটি সঙ্গে সঙ্গে ওই চার পরিবারের মাঝে জানানো হলে খুশির জোয়ারে ভাসেন তারা।


বিবার্তা/জনি/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com