
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে পরীক্ষার্থী পাসের হার কমে ৮৯ দশমিক ১৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। যা গত বছর ছিল ৯০ দশমিক ১৮ শতাংশ। একইভাবে কমেছে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা। এ বছর অংশগ্রহণকারী ৮৭ হাজার ৭৩৪ পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ হাজার ১৪৫ জন। গত বছর যা ছিল ৬ হাজার ৩১১ জন।
১২ মে, রবিবার দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছেন বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুন কুমার গাইন।
তিনি জানান, পাসের হার ও জিপিএ ৫ পাওয়ার দিক দিয়ে এবারও মেয়েরা এগিয়ে। বহিষ্কার হয়েছে ৫১ জন। ২২২টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করেছে। এবার শতভাগ ফেল করেছে এমন কোনো বিদ্যালয় নেই পাসের হারের দিক থেকে পিরোজপুর জেলা সবার শীর্ষে রয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বরিশাল, তৃতীয় অবস্থানে ঝালকাঠি এবং সব শেষে রয়েছে ভোলা জেলা।
তিনি আরও জানান, বরিশালে এবার মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৮৮ হাজার ৮৫৮ জন থাকলেও অংশ নিয়েছে ৮৭ হাজার ৭৩৪ জন। আর পাস করেছে ৭৮ হাজার ১৯৭ জন। বিভাগের ৬ জেলার মধ্যে এ বছর ১ হাজার ৪৮৯টি বিদ্যালয় অংশগ্রহণ করেছে। এবছর তিন জন পরীক্ষার্থী জেলখানায় থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।
এ সময় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুন কুমার গাইন বলেন, এ বছর অসম্ভব ভালো ফল হয়েছে। গত বছরের চেয়ে পাসের হার কমলেও ফলাফলের গুণগত মান বেড়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিত পথেই আমরা হেঁটেছি। এ কারণে ফলাফলের বিপর্যয় ঘটেনি। এছাড়া শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের ভালো ফল করার প্রবল ইচ্ছা ছিল।
বরিশাল বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুন কুমার গাইন জানান, এ বছর বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের পাসের হার সব থেকে বেশি। এরপর ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগের অবস্থান। এ বছর গড় পাসের হারে পিরোজপুর জেলার অবস্থান রয়েছে সবার শীর্ষে। এ জেলায় মোট পাসের হার ৯০ দশমিক ৯৭। এরপর দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বরিশাল জেলার পাসের হার ৯০ দশমিক ৬৪। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ঝালকাঠি জেলার পাসের হার ৯০ দশমিক ৫২। চতুর্থ অবস্থানে থাকা পটুয়াখালী জেলার পাসের হার ৮৩ দশমিক ৮৯। পঞ্চম অবস্থানে থাকা বরগুনা জেলার পাসের হার ৮৯ দশমিক ৬০ এবং সবার শেষে ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা ভোলা জেলার পাসের হার ৮৯ দশমিক ২৭ শতাংশ।
অপরদিকে জিপিএ-৫ এর দিক থেকে সবচেয়ে বেশি পেয়েছে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ বিভাগে মোট ৫ হাজার ২৩৫ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এছাড়া মানবিক বিভাগ থেকে ৭০২ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ২০৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এদিকে বরিশাল বোর্ডে এবারে কেউ পাস করেনি এমন কোন বিদ্যালয় নেই।
কমেছে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা: গতবছর এসএসসিতে পাসের হার ছিল ৯০ দশমিক ১৮ শতাংশ। এবার পাসের হার ৮৯ দশমিক ১৩ শতাংশ। গত বছরের থেকে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। গত বছর ৬ হাজার ৩১১ পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছিলো। এবার ১৬৬টি জিপিএ-৫ কমে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১৪৫টিতে। এ বছর ৫১ জন পরীক্ষার্থী বহিষ্কার হলেও গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৪৫ জন।
শতভাগ পাস ২২২ বিদ্যালয়: এসএসসি পরীক্ষায় ২২২টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করেছে। ১ হাজার ৪৮৯টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ২২২ টি বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করেছে। যার মধ্যে বরিশাল জেলায় সর্বোচ্চ ৮৩টি, এরপর পিরোজপুর ৫১টি বিদ্যালয় পাস করেছে। এছাড়া ভোলার ২৭টি, ঝালকাঠির ২৬টি, বরগুনার ২১টি ও পটুয়াখালীর ১৪টি বিদ্যালয় রয়েছে শতভাগ পাসের তালিকায়। এবার শতভাগ ফেল করেছে এমন কোন বিদ্যালয় নেই। এছাড়া বোর্ডের আওতায় ৬ জেলায় ১ হাজার ২৪৮টি বিদ্যালয়ে ৫০ শতাংশের ওপরে শতভাগের নিচে পাস করেছে। আর ৫০ শতাংশের নিচে পাস করেছে ২০ টি বিদ্যালয়।
মেয়েরা এবারেও এগিয়ে: এবারও এসএসসি পরীক্ষায় বিগত বছরগুলোর ন্যায় গড় পাসের হারে এবং জিপিএ-৫ পাওয়ার ক্ষেত্রে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে। ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, গত বছরের থেকে এবারে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ হাজারের মতো কম। আর সেই পাসের হারের হিসেবে অনুযায়ী, বরিশাল বোর্ডে এসএসসিতে মেয়ে শিক্ষার্থীদের পাসের হার ৯১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। অন্যদিকে ছেলে শিক্ষার্থীদের পাসের হার ৮৬ দশমিক ০২ শতাংশ। যে ধারাবাহিকতা টানা কয়েক বছর ধরেই ধরে রেখেছে মেয়েরা। যেখানে বিষয়ভিত্তিক পাসের হারে বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগেও এগিয়ে রয়েছে মেয়েরা। অপরদিকে দিকে মোট জিপিএ’র মধ্যে ৩ হাজার ৫১৫ জন ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে। অন্যদিকে ছেলেদের জিপিএ-৫ অর্জনের সংখ্যা ২ হাজার ৬৩০টি।
বিবার্তা/জবা
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]