মিয়ানমারে দিনে-দুপুরে পাচার হচ্ছে নিত্যপণ্য
প্রকাশ : ২৬ মার্চ ২০২৪, ২২:০১
মিয়ানমারে দিনে-দুপুরে পাচার হচ্ছে নিত্যপণ্য
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

মিয়ানমার থেকে কক্সবাজারের সমুদ্র উপকূল ও স্থলপথ দিয়ে মাদকদ্রব্য ইয়াবা বড়ি ও ক্রিস্টাল মেথ (আইস) পাচার হয়ে আসার ঘটনা নিত্যদিনের। এখন মিয়ানমারে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ থেকে দিনে-দুপুরে পাচার হচ্ছে জ্বালানি তেলসহ নিত্যপণ্য। পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে সমুদ্র উপকূল ব্যবহার করছেন চোরাকারবারিরা।


বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি), কোস্ট গার্ডসহ অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি থাকার পরও মিয়ানমারে জ্বালানি তেল ও নিত্যপণ্যের পাচার ঠেকানো যাচ্ছে না।


সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মিয়ানমারে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির সঙ্গে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি ও সেনাবাহিনীর মধ্যে চলছে তুমুল লড়াই। এর রেশ পড়েছে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ ও বান্দরবানের ঘুমধুম, তুমব্রু সীমান্তে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিজিবি ও কোস্ট গার্ড সদস্যরা।


চলমান সংঘাতে মিয়ানমারে জ্বালানি তেলসহ নিত্যপণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। বেড়ে গেছে দামও। সেখানে পেট্রল-অকটেনের লিটার ৩০০ টাকা ছাড়িয়েছে। তাই পাচারকারীরা নিয়েছেন নতুন কৌশল। সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারণে এখন সমুদ্র উপকূলকে নিরাপদ রুট হিসেবে বেছে নিয়েছেন তারা। এ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে উপকূলের ট্রলার ও জেলেদের।


টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সভাপতি মো. আলম বাহাদুর বলেন, ‘আমাদের স্থানীয় কিছু লোক মিয়ানমারের লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে উপকূলীয় এলাকা দিয়ে জ্বালানি ও ভোজ্যতেলসহ চিনি, রসুন, পেঁয়াজ, ময়দা ও চাল পাচার করছে। প্রশাসন থেকে এটা দ্রুত রোধ করা দরকার। এভাবে দেশের সম্পদ অন্য দেশে চলে গেলে ক্ষতির মুখে পড়ব আমরা। যত তাড়াতাড়ি পাচারকারীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হলে আমাদের জন্য ভালো হবে।’


জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রতি দাবি জানান মো. আলম বাহাদুর।


জানা গেছে, সমুদ্র উপকূলে রয়েছে অসংখ্য পয়েন্ট। এর মধ্যে পাচারের নিরাপদ স্থান হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে টেকনাফের শামলাপুর, বাহারছড়া ও শাহপরীর দ্বীপ, পৌরসভার জালিয়াপাড়া, চৌধুরী পাড়া ও উখিয়ার রেজুখাল, ইনানি, হিমছড়ি ও নাজিরারটেক পয়েন্ট। এসব স্থান দিয়ে জ্বালানি তেল পাচাররোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি স্থানীয়দের।


এ বিষয়ে র‌্যাব-১৫-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সহকারী পরিচালক (ল অ্যান্ড মিডিয়া) মো. আবু সালাম চৌধুরী বলেন, সবশেষ গত রবিবার রাতে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের উত্তর শীলখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫৭ ড্রামভর্তি তেল নিয়ে আলী আহমদ, মো. নাজিম উল্লাহ ও মো. হোসেনকে আটক করা হয়েছে।


তিনি আরও বলেন, গত দেড় মাসে মিয়ানমারে পাচারকালে প্রায় ১৫ হাজার লিটার জ্বালানি তেল, ৪ হাজার লিটার সয়াবিন তেল, দেড় হাজার কেজি ময়দা, ওষুধ, পেঁয়াজ, রসুন ও আদাসহ ৩৫ পাচারকারীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।


টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, মিয়ানমারে তেলসহ খাদ্যপণ্য পাচারে জড়িতদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই আমরা নামগুলো জানাচ্ছি না। একই সঙ্গে সমুদ্র উপকূলের পয়েন্টগুলো চিহ্নিত করার পাশাপাশি চোরাকারবারিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com