নদ-নদী, খাল বিল ও জলাধার সুরক্ষায় ডিজিটাল ডাটাবেজ প্রণয়নের দাবি
প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২৪, ১৬:৩২
নদ-নদী, খাল বিল ও জলাধার সুরক্ষায় ডিজিটাল ডাটাবেজ প্রণয়নের দাবি
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

আজ বিশ্ব পানি দিবস। দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজ ও বাংলাদেশ মুঠোফোনে গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন এর যৌথ উদ্যোগে এক আলোচনা সভা ও ইফতার বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।


২২ মার্চ, শুক্রবার বেলা ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ আলোচনা সভা ও ইফতার বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।


এ সময় উপস্থিত ছিলেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সাবেক প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান জনাব মোস্তাক হাসান মোহাম্মদ ইফতেখার, জলাধার রক্ষা আন্দোলন এর সভাপতি জনাব ইবনুল সাঈদ রানা, অ্যাডভোকেট আবু বকর সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট বিল্লাল হোসেন, রাজনৈতিক ব্যক্তি সমাজকর্মী এবং বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।


এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক ও মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।


আলোচনায় বক্তারা বলেন, ১৯৯৩ সাল থেকে পালিত হওয়া বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমরাও দিবসটি পালন করছি। আজকের প্রতিপাদ্য ‘‘শান্তির জন্য পানি’’ যথার্থ হয়েছে। কারণ বিশ্বের অন্যান্য দেশের পানি সংকটের মত আমাদের বাংলাদেশেও পানির আগামী সংকট এখনই লক্ষ্মীভূত হচ্ছে। দেশের উপকূলীয় এলাকায় একটি পরিবারকে পানি সংগ্রহের জন্য প্রায় দুই ঘণ্টা হেঁটে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। চট্টগ্রাম ওয়াসার পানি লবণাক্ত হয়ে পড়েছে, ঢাকায় চারপাশের সমস্ত নদী আজ দূষিত।


ঢাকা ওয়াসা যে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে পানি সংগ্রহ করে সেই পানি অত্যন্ত দূষিত ফলে এই পানি দূষণমুক্ত করতে ওয়াসার উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি করতে হচ্ছে। পদ্মার পানি এখনো পুরোপুরি দূষিত না হলেও সেই পদ্মার পানি ও খুব দ্রুতই দূষিত হয়ে পড়বে। ফলে আমাদের রাজধানীর যেখানে দৈনিক চাহিদা প্রায় ২২৬ কোটি লিটার সুপেয় পানির চাহিদা পূরণ কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়াবে। যার ফলে পানির সংকট দিন দিন বাড়তে থাকবে। বলা হচ্ছে আগামী ২০৩০ সালে বিশ্বের পানির চাহিদা দাঁড়াবে বর্তমান চাহিদার চাইতে ৪০ শতাংশ বেশি। কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ পানি কোথা থেকে আসবে কীভাবে এই পানির চাহিদা পূরণ হবে তার সঠিক পরিকল্পনা এখনো নেয়া হয়নি।


বাংলাদেশ সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে এবং সকলের জন্য সুপেয় পানি নিশ্চিত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন যা এসডিজির অন্যতম লক্ষ্য। জাতিসংঘের এক গবেষণায় উঠে এসেছে ৭৪ শতাংশ পানি সংগ্রহের জন্য কাজ করেন নারীরা। ৬৩ শতাংশ মানুষকে সুপেয় পানি পেতে সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। দেশের এখনো ৭৫% মানুষ টিউয়েলের উপর নির্ভর করে তার মধ্যে অনেক এলাকায় আর্সেনিক যুক্ত পানি এবং অনেক এলাকায় পানি উঠছে না সেই টিউবয়েলে। বর্তমান দেশের ৪১টি জেলা আর্সেনিকের প্রভাব রয়েছে। বলা হচ্ছে দেশের মাত্র ৩৪ শতাংশ মানুষ সুপেয় পানি পায়।


ঢাকার মানুষ ঢাকা ওয়াসার পানি হয়ত যে দামে কিনে খাচ্ছে কিন্তু হিসাব করলে দেখা যাবে উপকূলের মানুষ এর চাইতেও চার গুণ বেশি অর্থ ব্যয় করে। দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সুপেয় পানি বড় সংকট তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশের জলাভূমি দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে ঢাকার জলাভূমি সব দখল হয়ে গেছে ফলে রাজধানীর ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে।


আজকের দিনে আমাদের দাবি ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি করে নদী ও জলাশয়ের প্রকৃতিগত ভৌগোলিক অবস্থান নির্ণয় করে রক্ষা করার জন্য বিশেষ নির্দেশনা সরকারিভাবে ঘোষণা করতে হবে। নদী দখল এবং নদীর বালু নিয়ে যে বাণিজ্য শুরু হয়েছে সেখান সরকারকে কঠোর হস্তক্ষেপ করতে হবে। ইতিমধ্যে আমরা লক্ষ্য করেছি ব্রহ্মপুত্র নদীর খনন করতে গিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির যে চিত্র উঠে এসেছে তার সঠিক তদন্ত করতে হবে। আমাদের সকল নদ-নদী খাল বিলকে দূষণমুক্ত করতে হবে।


অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগের সভাপতি এম.এ জলিল, গ্রীন পার্টি চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ খান, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু, সংগঠনের সদস্য মোহাম্মদ আজিজুল, আবুল কালাম আজাদ, ডাক্তার আমিনুল ইসলাম, মোহাম্মদ বাবুল, শেখ ফরিদ, মো. নকিব খান প্রমুখ।


অনুষ্ঠান শেষে পথচারী ও সাধারণ নাগরিকদের মাঝে পানি ও ইফতার বিতরণ করা হয়।


বিবার্তা/সউদ


সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com