বেড়ায় মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষে স্বাবলম্বী শাহানুর
প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬:৫৩
বেড়ায় মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষে স্বাবলম্বী শাহানুর
পাবনা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

পাবনা বেড়ায় মালচিংপদ্ধতিতে টমেটো চাষ করে স্বাবলম্বী মো. শাহানুর আলী। থোকায় থোকায় ধরা টমেটো সাফল্য আর আত্মবিশ্বাসের গল্প। পাবনার বেড়া উপজেলার হাটুরিয়া-নাকালিয়া ইউনিয়নে তেঁঘুরিয়া গ্রামে শাহানুর আলী বাণিজ্যিকভাবে ২০১১ সালে ২ বিঘা জমির উপর মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষ শুরু করে।


নতুন এ পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করার কথা শুনে বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষক ও শৌখিন সবজি চাষি প্রতিদিন টমেটোর বাগান দেখার জন্য আসছেন।


সরেজমিনে উপজেলার তেঁঘুরিয়া গ্রামে দেখা যায়, টমেটোর বাগানে সবুজের সমারোহ, সবুজ গাছে থোকায় থোকায় সবুজ টমেটো। টমেটো ক্ষেতেই দেখা এবং কথা হয় শাহানুর আলীর সঙ্গে।


তিনি বলেন, আমি ডিগ্রি পাশ করে বিভিন্ন জায়গায় চাকরি না পেয়ে এই নিজেই কিছু করার চেষ্টা করা থেকেই এই উদ্যোগ নেই।


পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর আর্থিক সহায়তায় প্রোগ্রাম ফর পিপলস্ ডেভেলপমেন্ট (পিপিডি) কর্তৃক বাস্তবায়িত কৃষি ইউনিট প্রোগ্রাম বেড়া উপজেলা কৃষি প্রযুক্তি টমেটোর চারা নিয়ে দুই বিঘা জমির উপরে আমার চাষের যাত্রা শুরু হয়।


এ সময় ওই সংস্থাটির নিজস্ব অর্থায়নের আমাকে একটি বীজ থেকে চারা তৈরির সেট তৈরি করে দেয়। এখন ২০২৪ সালে এসে আমার টমেটোসহ মরিচ, কয়েক ধরনের ক্যাপসি ক্যাপ, বকুলী রুট বিট, স্ট্রবেরী চাষ বৃদ্ধি পেয়ে ১৪ বিঘা। আধুনি কোকোডাক্টের চারা উৎপাদন পেপার ব্যবহার প্লাস্টিক ট্রেড্রে কোকোডাস্ট ব্যবহার করি এবং সুষ্ঠু সবল চারা উৎপাদন নিশ্চিত করি। এ বছরে ভালে চাষ হওয়ায় ১৪ বিঘা থেকে টমেটো, মরিচ, বেগুন প্রায় সত্তর হাজার টাকা বিক্রি করেছি ও কোকোডাক্টেও চারা উৎপাদন ও বিপণনের কাজ শুরু করি।


প্রথম বছরে পঁয়ষট্টি হাজার চারা বিক্রি করি এতে আমার লাভ হয় এক লক্ষ ত্রিশ হাজার টাকা। আমার এই প্রোজেক্ট ৮ থেকে ১০ জন সবসময় কর্মরত থাকে আর সিজনে ২০ জনের বেশিও শ্রমিক লাগে। এদের অধিকাংশই শিক্ষিত বেকার যুবক।


টেকনিক্যাল বিষয়ক বক্তব্য প্রদানকারী অনুপ কুমার ঘোস, কৃষি কর্মকর্তা, সমন্বিত ইউনিট, পিডিপি সংস্থার অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর মো. মামুনুর রহমান, ফোকাল পারর্সন মো. মনিরুল ইসলাম ইমন, শাখা ব্যবস্থাপক।


মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো প্রসঙ্গে বেড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ন‚সরাত কবীর বলেন, মালচিং পেপার হলো বিশেষ ধরনের পলি পেপার (পলিথিন)। ফসলের ক্ষেতে আর্দ্রতা সংরক্ষণে মালচিং বিশেষভাবে উপকারী, এ প্রযুক্তি ব্যবহারে ফসলের ক্ষেতের পানি সূর্যের তাপ ও বাতাসে উড়ে যায় না ফলে জমিতে আর্দ্রতা থাকায় সেচ লাগে অনেক কম। মালচিং ব্যবহার করলে জমিতেপ্রায় ১০ থেকে ২৫ ভাগ আর্দ্রতা সংরক্ষণ করা সম্ভব।


এ পদ্ধতি খুবই সুন্দর একটা পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে চাষ করলে জমিতে আগাছা হয় না, বললেই চলে। মালচিং পেপারে কার্বন থাকার কারণে আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং সারের গুণাগুন ঠিক থাকে ফলে ফলনও বৃদ্ধি পায়। একই মালচিং পেপার একাধিক সবজি ফসল চাষে ব্যবহার করা যায়। অন্যান্য সবজি ফসল যদি এই পদ্ধতিতে চাষ করা যায় তাহলে কৃষকরা বেশি লাভবান হবে।


তবে এ পদ্ধতিতে প্রথমে অর্থ খরচ বেশি হলেও সামগ্রিক ভাবে লাভ ও অনেক বেশি হয়।


কৃষি কর্মকর্তা বলেন, প্রদর্শনীর জন্য উপজেলার কয়েকটি জায়গায় এই পদ্ধতিতে কিছু চাষাবাদ করা হয়েছে। আগামীতে উপজেলার সবজি চাষিদের উৎসাহিত করতে তাদের টমেটো চাষ মাঠ প্রদর্শনী করা হবে এবং কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সুযোগ- সুবিধা ও সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছি।


বিবার্তা/পলাশ/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com