করোনার সময়ে ঘর বন্ধি নিঝুমের সৃষ্টিশীল কাজের প্রশংসা দেশের পাশাপাশি ছড়িয়েছে বিদেশেও। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল সবুজবাগের মেয়ে কলেজ ছাত্রী নিঝুম লকডাউনে অলস সময় না কাটিয়ে কাজে লাগিয়েছেন নিজের মেধাকে।
সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে তৈরী করেছেন ৫০০ এর অধিক ফ্যাশনেবল অলংকার, পার্স ব্যগ, চাবির রিং ও কলমদানীসহ বিভিন্ন দৃষ্টি নন্দন সামগ্রী। তার হাতের এসব কারুকাজ এলাকায় ব্যাপক সারা ফেলেছে। এতে দৃষ্টি পড়েছে প্রবাসীদেরও। ‘গয়নার বাক্স’ নামে একটি ফেইসবুক পেইজে এসব সামগ্রী বিক্রি করে ইতোমধ্যে আয়ও করেছেন অর্ধ লাখ টাকা।
নিঝুম চক্রবর্তী জানান, ২০২০ সালের মার্চ থেকে করোনার জন্য বন্ধ হয়ে যায় স্কুল কলেজ। তার এইচএসসি পরীক্ষাও বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে ছুটির ঘোষণা বাড়তেই থাকে। এ সময় তিনি আনকমন ফ্যাশনেবল অলংকার তৈরীর কাজ শুরু করেন। এসব জিনিস তৈরি করতে গিয়ে যে কাঁচামাল প্রয়োজন হয় তা সংগ্রহে তার বাবা তাকে সহায়তা করেছেন। তার তৈরিকৃত এসব সামগ্রী বিক্রি করে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকার উপরে আয় করেছেন। ইতোমধ্যে কানাডা, আমেরিকা, কুয়েত, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশে ক্রেতাদের কাছে কুরিয়ার করে পাঠিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সরজমিনে দেখা যায়, গত দেড় বছরে পাটের সুতা, কাঠ, পাটের কাপড়, এন্টিক মেটাল, পলিমার ক্লে, রেসিন ও পুঁথি দিয়ে তৈরী করে যাচ্ছেন একের পর এক অলংকার ও সামগ্রী। অনেকে পোষাকের সাথে সামঞ্জস্য করে ডিজাইন বলে দিলে সেই রং ও ডিজাইনেও তিনি তৈরী করে দিচ্ছেন অলংকার।
নিঝুমের বাবা শ্রীমঙ্গল দ্বারিকা পাল মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক রজত শুভ্র চক্রবর্তী এবং মা আলপনা ভট্টাচার্য্য। নিঝুমের মা জানান, করোনার এই সময়ে সারা দিনই নিজের ঘরে থাকে নিঝুম।
প্রথম দিকে একটা দুইটা আইটেম করার পর আশেপাশের অনেকে তাকে আরো কিছু তৈরী করে দেয়ার জন্য বলেন। প্রথমে নিজের আত্মীয় স্বজনকে তার তৈরী অর্নামেন্ট ফ্রিতে দিয়েছেন। অনেকে এটি ফেইসবুকে পোষ্ট করেন। তখন বেশ কয়েকজন প্রবাসী তার খোঁজ করে আরো কিছু অর্নামেন্টের অর্ডার করেন। সে এগুলো তৈরী করে দেয়। এতে সে ব্যাপক উৎসাহিত হয়।
নিঝুমের এই সৃষ্টিশীল কাজে খুশি তার বাবা। তিনি জানান, তার মেয়ে ঘরে বসেই এন্টিক মেটালের গয়না, জুটের গয়না, কাঠের গয়না, পলিমার ক্লে এর মূর্তি গয়না, পুঁথির গয়না, ব্যাগ, কলমদানী, চাবির রিং ও গয়নার বাক্স তৈরী করছে। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার কাজগুলো অনেক সাড়া ফেলেছে।
এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল সবুজবাগ এলাকার ব্যাংকার পুলক রঞ্জন চক্রবর্তী জানান, নিঝুম তার কাজে এতো বৈচিত্রতা এনেছেন যা দ্রুত সৌখিন মানুষের দৃষ্টিকাড়ে। তার মেয়ের এক বান্ধবীর মাধ্যমে নিঝুমের এই হাতের কাজের খবর পান। পরে তিনি নিঝুমের কাজ দেখতে গিয়ে অনেকটা আশ্চর্য হন।
কাতার প্রবাসী সুব্রত চক্রবর্তী জানান, কাতার থেকে ফেইসবুকে তিনি নিঝুমের তৈরী জিনিসের ছবি দেখেন। সেখান থেকে যোগাযোগ করে তিনি ও তার ভারতীয় কিছু সহকর্মী বেশ কিছু অর্নামেন্ট নিঝুমের কাছ থকে সংগ্রহ করেছেন।
বিবার্তা/ওবাইদুল্লাহ/বিদ্যুৎ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]