শিরোনাম
হুমকির মুখে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ফেলা হচ্ছে জিও ব্যাগ
প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২১, ১৩:২৫
হুমকির মুখে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ফেলা হচ্ছে জিও ব্যাগ
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কুষ্টিয়ার পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। জেলার দৌলতপুর ও ভেড়ামারা উপজেলার ৩ ইউনিয়নের কয়েক কি.মি. এলাকাজুড়ে পদ্মার ভাঙনে কয়েক হাজার একর আবাদী জমি ও বসত বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে রায়টা-মহিষকুন্ডি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও এলাকার সাধারণ মানুষ। তবে দৌলতপুরের সংসদ সদস্য এ্যাড. আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহর প্রচেষ্টায় পদ্মার ভাঙন ঠেকাতে নদী ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে তা নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।


সরজমিনে দেখা যায়, পদ্মায় অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধির ফলে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়ন ও ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদহ ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নের অসংখ্য মানুষের পদ্মার ভাঙনে বসতবাড়ি ও কয়েক হাজার একর আবাদী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকিতে রয়েছে রায়টা-মহিষকুন্ডি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সঞ্চালন খুটি, সরকারি স্থাপনা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ক্ষতিগ্রস্থরা জানায়, ফসলি জমি ও বসতবাড়ি পদ্মাগর্ভে চলে যাওয়ায় তারা এখন সর্বশান্ত ও আশ্রয়হীন। ভাঙন ঠেকাতে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তাদের।


মরিচা ইউনিয়নের হাটখোলপাড়া এলাকার কৃষক ফজলুল হক জানান, প্রতি বছরই আমাদের সবকিছু পদ্মায় তলিয়ে যায়। এবারও এলাকার অসংখ্য মানুষের আবাদী জমি পদ্মার ভাঙনে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এলাকাবাসীর জমি জায়গা ও ঘর-বাড়ি বাঁচাতে পদ্মার ভাঙনরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।


উজ্বল হোসেন নামে এক স্থানীয় ব্যবসায়ী জানায়, মরিচা ইউনিয়নের ভুরকা হাটখোলা পাড়া ও কোলদিয়াড় এলাকায় পদ্মার ভাঙন ঠোকাতে এলাকাবাসীর দাবির মুখে কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। সংসদ সদস্যের চেষ্টায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।



মরিচা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ আলমগীর জানান, নদী ভাঙনের কবলে তার ইউনিয়ন ব্যাপক হুমকির মুখে আছে। ইতপূর্বে তার ইউনিয়নের নদীভরাট, চিতলমারী, রুইমারী, চৌদ্দহাজার ও নতুন চরসহ অনেকগুলো গ্রাম নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে হাটখোলাপাড়া, ভুরকাপড়া ও কোলদিয়াড় এলাকা প্রবল নদী ভাঙনে জমি জায়গা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বেশ কয়েকটি প্রাথমিক ও হাইস্কুল এবং ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সঞ্চালন খুঁটি হুমকির মুখে রয়েছে।


কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের সাংসদ এ্যাড. আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহ ভাইয়ের ঐকান্তিক পদ্মার ভাঙন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে এর জন্য তিনি সাধুবাদ জানিয়ে তিনি পদ্মার ভাঙ্গনরোধে অতিশীঘ্রই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে এই ইউনিয়নের ৩টি ওয়ার্ড নদী ভাঙন থেকে রক্ষার ব্যবস্থা করার দাবি করেন। যাতে করে তাদের আবাদী জমি বাড়ি-ঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ রাস্ত-ঘাট ও জুনিয়াদহ বাজার এবং অসংখ্য সরকারি বেসরকারী স্থাপনা রক্ষা পায়।


অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান ছবি জানান, পদ্মার পানি বাড়তে থাকলে বাহাদুরপুর ও জুনিয়াদহ ইউনিয়নের যেখানে বর্ডারস্থল আছে, সেখানে নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে ব্যনা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ঝুঁকির মুখে রয়েছে। এই বাঁধ ভেঙে গেলে ভেড়ামারা উপজেলা পানিতে তলিয়ে যাবে। ব্লকবাঁধ দিয়ে এটার স্থায়ী সমাধানের জন্য বাহাদুরপুর ও জুনিয়াদহ ইউনিয়নবাসীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তার প্রাণের দাবি বলে তিনি উল্লেখ করে তিনি জানান, রায়টা, আড়কান্দি, গোসাইপাড়া, মালিপড়া, বাহাদুরপুর এলাকার একটা অংশ পদ্মা নদীর ভাঙনের মুখে আছে।


মরিচা ইউনিয়নের হাটখোলপাড়ার পদ্মার ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৗশলী মো. আফছার উদ্দিন জানান, পদ্মার ভাঙনরোধে ১০৬ মিটার এলাকায় ১৩ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এটা আরো সম্প্রসারিত হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।


তবে আশ্বাস নয়, সর্বগ্রাসী পদ্মার করাল গ্রাস থেকে দুই উপজেলার মানুষকে বাঁচাতে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক, এমনটাই দাবি ভুক্তভোগীসহ পদ্মা নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের।


বিবার্তা/শরীফুল/এনকে

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com