শিরোনাম
দৌলতপুরে প্রণোদনার অর্থ পাননি খামারীরা, লোপাটের অভিযোগ
প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২১, ২০:০০
দৌলতপুরে প্রণোদনার অর্থ পাননি খামারীরা, লোপাটের অভিযোগ
কুষ্টিয়া প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে করোনাকালীন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক দুগ্ধ খামারীদের জন্য বরাদ্দ সরকারের প্রণোদনার প্রায় পৌনে তিন কেটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত খামারীদের জন্য বরাদ্দ দেয়া এ অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত খামারীদের না দিয়ে বিতরণ করা হয়েছে মসজিদের খাদেম, দৌলতপুরের ওষুধ ব্যবসায়ী ও দালাল চক্র, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানী রিপ্রেজেন্টেটিভ এবং খামার নেই এমন ব্যক্তিদের মাঝে।


এতে চরমভাবে ক্ষুব্ধ হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত ও বঞ্চিত দুগ্ধ খামারীরা।


প্রণোদনার অর্থ বঞ্চিত ক্ষতিগ্রস্ত খামারীদের অভিযোগ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে, দৌলতপুরে করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ছোট বড় দুগ্ধ খামারীদের জন্য বরাদ্দ হওয়া সরকারের প্রণোদনার দুই কোটি ৬৯ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক দুগ্ধ খামারীদের না দিয়ে খামার নেই এমন ব্যক্তিদের দেয়া হয়েছে। দুই শ্রেণীতে ভাগ করে জনপ্রতি সর্বচ্চ ২০ হাজার এবং সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা করে এ অর্থ দেয়া হয়।


ক্ষতিগ্রস্ত খামারীদের প্রণোদনার আওতায় আনতে গত আগস্ট মাসে দৌলতপুরের বিভিন্ন এলাকার দুই হাজার ৪৬৬ জনের নামের তালিকা প্রেরণ করে দৌলতপুর প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল মালেক। এ তালিকায় বাদ পড়েন ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক দুগ্ধ খামারী সহ বিভিন্ন খামারের নাম। আর এ তালিকা প্রস্তুত করতে সহায়তা নেয়া হয় দৌলতপুর প্রাণী সম্পদ অফিসের সামনে গড়ে ওঠা দালাল চক্রের।


তালিকা প্রস্তুত করার সময়ও ওই দালাল চক্র বিভিন্ন ব্যক্তিদের কাছ থেকে অগ্রিম অর্থ হাতিয়ে নিয়ে খামার নেই এমন সব ব্যক্তিদের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করে সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রেরণ করেছে এমন অভিযোগও রয়েছে। আর অভিযোগের সত্যতা মিলেছে বুধবার সরোজমিনে দৌলতপুর প্রাণী সম্পদ অফিসের গেট সংলগ্ন ওষুধ ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে।


তারা জানান, পশু হাসপাতাল গেট সংলগ্ন ওষুধ ব্যবসায়ী নুরু, নাহারুল, মসজিদের খাদেম তারিক সহ চা বিক্রেতা থেকে শুরু করে প্রতিটি দোকানদার খামারীদের জন্য বরাদ্দ হওয়া প্রণোদনার অর্থ পেয়েছেন।


দৌলতপুরের তেলিগাংদিয়া গ্রামের দুগ্ধ খামারী আব্দুস সামাদ খান জানান, করোনায় সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সত্বেও সরকারের দেয়া প্রণোদনার অর্থ তিনি পাননি। দৌলতপুরের ২৫টির বেশী ছোট বড় দুগ্ধ খামার রয়েছে যারা সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত। অথচ সরকারের প্রণোদনার টাকা তারা না পেয়ে যাদের খামার নেই, গরু, ছাগল, মুরগি কিছুই নেই তারা পেয়েছেন টাকা। তিনি প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল মালেক সরকারের এই অর্থ লুটপাটের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ করেন।


একই অভিযোগ রয়েছে হরনিগাছী গ্রামের দুগ্ধ খামারী লালন, কায়ামারী গ্রামের দুলাল সরকার ও হোসেনাবাদ এলাকার মাসুম আলী সহ অনেকের।


তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে দৌলতপুর প্রাণী সম্পাদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল মালেক বলেছেন, এখানে কোনো অনিয়মের সুযোগ নেই, ভোটার আইডি কার্ড দেখে তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। আগস্ট মাসে তালিকা যখন প্রস্তত করা হয় তখন অনেকের খামারে গরু ছিল এখন নাও থাকতে পারে। যারা এ অর্থ পাইনি তারা অভিযোগ করতেই পারে।


তিনি বলেন, প্রায় আট হাজার ব্যক্তির মধ্য থেকে বাছাই করে দুই হাজার ৪৬৬ জনের নামের তালিকা পাঠানো হলে তারাই সরকারের প্রণোদনার আওতায় আসে।


এবিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক খামারীরা সরকারি প্রণোদনার অর্থ পাইনি এমন অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


বিবার্তা/শরীফুল/জাই

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com