শিরোনাম
ট্রাংকে ফেলে যাওয়া অর্ধগলিত লাশের রহস্য উদঘাটন, বাবাসহ গ্রেফতার ৪
প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:৪৪
ট্রাংকে ফেলে যাওয়া অর্ধগলিত লাশের রহস্য উদঘাটন, বাবাসহ গ্রেফতার ৪
নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

দেড় মাস পর অজ্ঞাতনামা শিশুর হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) রংপুর। দীর্ঘ তদন্ত শেষে মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে হত্যাকান্ডের শিকার শিশুর পরিচয় ও হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বাবা ও সৎ মাসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


এর আগে চলতি বছরের ১৬ জুলাই নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার রামডাঙ্গা ফরেস্টের সিংগাহাড়া নদীর তীরবর্তী ডোমার-ডিমলা বাইপাস সড়কের একটি তালাবদ্ধ ট্রাংক থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।


পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, ১৫ জুলাই রাতে একটি পিকআপে একটি ট্রাংক নীলফামারীর উল্লেখিত স্থানে ফেলে পালিয়ে যায়। তা দেখতে পেয়ে এলাকাবাসি পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ সেই রাতে ট্রাংটি ঘিরে রাখলেও পরদিন পুলিশ ট্রাংকটি খুলে বিছানার চাদর ও কাথা মোড়ানো অবস্থায় একটি অর্ধ গলিত লাশ পায়। লাশ দেখে ধারনা করা হয় এটি কোন ৩০ থেকে ৪০ বছরের যুবকের লাশ ছিল।


এক পর্যায়ে ঘটনাটি তদন্তর দায়িত্ব পায় পিবিআই রংপুর।তারা সকল বস্তু ক্রাইমসিন যথাযথ ভাবে সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করে।তবে লাশটি ঝলসানো ও অর্ধ গলিত থাকায় ফিঙ্গার প্রিন্ট গ্রহণ করে সে সময় শিশুটিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।


পরে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে নীলফামারীর ডিমলা থানায় একটি মামলা করা হয়।


রংপুর পিবিআই পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেনের এর নেতৃত্বে একটি স্পেশাল টিম তথ্য প্রযুুক্তি ব্যবহার করে প্রায় ১ মাস ১৭ দিন পর অপরাধের মোটিভ, প্রক্রিয়া ও মৃত ব্যক্তির পরিচয় নৃশংসতম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান পরিচালনা করে দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার একটি এনজিওতে কর্মরত নিহত শিশু জিহাদ (১২)এর বাবা জিয়াউর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়।


গ্রেফতার জিয়াউর রহমানের স্বীকারোক্তি মতে দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলায় তার ভাড়া বাসা থেকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী শিশু জিহাদের সৎ মা আলেয়া মনি(১৯), ও তার শ্বশুর আইয়ুব আলীকে (৫৫) গ্রেফতার করা হয়। এ সময় ওই বাড়ি থেকে ইলেক্ট্রিক ওয়াটার হিটার জব্দ করা হয়। জিহাদকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে হিটারের গরম পানি নিক্ষেপ করা হয়।


পিবিআই আরো জানায়, ধৃতদের তাৎক্ষণিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় শিশু জিহাদের সৎ মা আলেয়া মনি এবং তার বাবা জিয়াউর রহমানের সাথে শিশু জিহাদের বনিবনা না হওয়ায় তারা একত্রে পরিকল্পিত ভাবে ১৪ জুলাই/২০২০ রাতে ঘুমন্ত জিহাদকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। বাসায় ব্যবহৃত একটি স্টিলের ট্রাংকে শিশু জিহাদের লাশ পেঁচিয়ে ভিতরে ঢুকায়। আইয়ুব আলী পার্শ্ববর্তী মীম ভ্যারাইটিজ স্টোর হতে দুইটি চাইনিজ তালা কিনে এনে ট্রাংকটি তালাবদ্ধ করে।


পরে লাশ ট্রাংকটি ভরে বিরল হাসপাতালের গেটের সামনে হতে একটি নীল রঙ্গের ছোট পিক আপ ভ্যান ১৩ হাজার টাকায় ভাড়া করে। এরপর পিকআপটি নীলফামারীর ডিমলার উক্ত স্থানে এসে গভীর রাতে নদীর ধারে ট্রাংটি ফেলে পালিয়ে যায়। উক্ত পিক আপের মালিক ও ড্রাইভার ইসমাইলকেও(২৬) গ্রেফতার করা হয়। জিহাদ হত্যাকান্ডে তার বাবা, সৎ মা, সৎ নানা ও পিকআপ চালক সহ এ পর্যন্ত ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়।


পিবিআই পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেনের জানান, পিবিআই এসআই মো. ইকরামুল হক এই মামলা তদন্ত করছেন। তাকে পিবিআই এর একটি স্পেশাল টিম সহায়তা করছেন। মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।


বিবার্তা/সুজন/এসএ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com