শিরোনাম
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ৬ বছর পূর্ণ আজ
প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২০, ০৯:১৫
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ৬ বছর পূর্ণ আজ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

নারায়ণগঞ্জের লোমহর্ষক সাত খুনের ছয় বছর পূর্ণ হলো আজ (২৭ এপ্রিল)। এ মামলায় নিম্ন আদালতের পর উচ্চ আদালতে ২০১৮ সালে ২২ আগস্ট ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রেখে বাকি আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা বহাল রাখা হয়। বর্তমানে মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে রয়েছে।


এ মামলায় ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাব-১১-এর চাকরিচ্যুত সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার এম মাসুদ রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদানের আদেশ দেন।


আলোচিত এ ঘটনায় নিহতরা হলেন- নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকার, যুবলীগ নেতা মনিরুজ্জামান স্বপন, স্বপনের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর, নজরুলের সহযোগী তাজুল ইসলাম, নজরুলের বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটন ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক ইব্রাহিম।


নিহত সাত জনের মধ্যে ছয় জনের বাড়ি সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি, জালকুড়ি, কদমতলী ও সানারপাড় এলাকায়। বাকি একজন অ্যাডভোকেট চন্দনশীলের গাড়িচালকের বাড়ি সোনারগাঁ থানা এলাকায়। নিহতের সাতটি পরিবারের মধ্যে পাঁচটি পরিবার উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের হারিয়ে এখন অর্থকষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।


নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, সাত খুন মামলায় রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি। উচ্চ আদালত থেকে সাত খুনের আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দণ্ডাদেশসহ যে রায়টি হয়েছে, সেটি যেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বহাল থাকে।


নিহত তাজুল ইসলামের বাবা আবুল খায়ের বলেন, আমরা নিম্ন আদালত থেকে আসামিদের ফাঁসির রায়টি দ্রুততম সময়ে পেয়েছি। কিন্তু মামলাটি এখনও উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগে আটকে আছে। এ নিয়ে আমরা শঙ্কিত।


তিনি বলেন, আমরা সাত খুন মামলার রায়টি জীবিত থাকতে দেখে যেতে চাই। মামলার রায় দ্রুত কার্যকর করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান তিনি।


নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, সাত খুনের মামলাটি উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। হাইকোর্ট ডিভিশনে সাত খুন মামলায় যে সাজাটি বহাল রেখেছেন সেই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ আপিল বিভাগে আপিল করেছেন। আশা করি এ বছরই শেষ হয়ে যাবে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে উচ্চ আদালতের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তাই এ মামলাটি এখন একই অবস্থায় আছে। এ মামলাটি আপিল বিভাগে শেষ হলে এরপর রিভিউ হবে।


তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ২৬ জনের ফাঁসি ও ৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজার রায় হয়। আসামিপক্ষের আপিলের পর হাইকোর্ট বিভাগ নিম্ন আদালতে যেখানে ২৬ জনের ফাঁসি আদেশ ছিল সেখানে হাইকোর্ট ১৫ জনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন। মৃত্যুদণ্ড ১০ জনকে সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন। তবে মূল আসামিদের মৃত্যুদণ্ড বহাল আছে। অন্যান্য আসামিদের সাজা বহাল রেখেছেন।


তিনি আরো বলেন, হাইকোর্ট যে রায়টি দিয়েছেন আমরা আশা করি আপিল বিভাগেও সেই একই রায়টি বহাল থাকবে।


প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলায় হাজিরা দিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের নিজ বাসভবনে ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও নাসিক ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের তিনদিন পর ৩০ এপ্রিল নজরুলসহ ছয়জন ও ১ মে লিটনের লাশ শীতলক্ষ্যা নদীর বন্দরের শান্তিচর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।


এ ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন।


বিবার্তা/এনকে

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com