শিরোনাম
যশোরে ছাত্রাবাসে মিললো বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-গুলি-বোমা
প্রকাশ : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৩:৪২
যশোরে ছাত্রাবাসে মিললো বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-গুলি-বোমা
যশোর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

যশোরের শেখহাটিতে কাজী ছাত্রবাস নাম একটি মেসে দুই দফা অভিযান চালিয়ে বিপুল অস্ত্র-গুলি ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে পুলিশ।


মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এবং বুধবার কোতয়ালি থানা পুলিশ দুই দফা অভিযান চালায়। এসময় ছাত্রাবাসের ১৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ থানায় নিয়েছে।


কোতয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ তাসমীম আলম জানান, গোপন সূত্রে পুলিশ সংবাদ পায়- শেখহাটি জামরুলতলার কাজী ছাত্রাবাসে ওই এলাকার চিহ্নিত জুয়েল ও তার সহযোগীরা বিপুল পরিমাণে অস্ত্র মজুদ করে রেখেছে। এ খবর পেয়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত সেখানে অভিযান চালানো হয়। পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রব্বানী শেখ ও কোতোয়ালী থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান এ অভিযানে অংশ নেন।


টিনের ছাউনির ওই ছাত্রাবাসের ১০টি রুমে তল্লাশি চালিয়ে একটি শটগান, একটি ওয়ান স্যুটারগান, একটি ম্যাগজিন, বন্দুকের ৫ রাউন্ড গুলি, বার্মিজ চাকু ৩টি, রামদা ২টি, দেড়শ’ পিস ইয়াবা, এক কেজি গাঁজা, রড ও লোহার পাইপ ৫টি, ককটেল ৫টি, মোটরসাইকেল ২টি, বিদেশি মদ ৫ বোতল, বোমা তেরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ও ব্যবহৃত অব্যবহৃত বেশকিছু কনডম উদ্ধার করা হয়।


শেখ তাসমীম আলম জানান, জুয়েল ও তার বাবা কাজী আলম পালিয়ে যাওয়ায় তাদের আটক করা যায়নি। তবে ছাত্রাবাস থেকে জিজ্ঞাসাদের জন্য ১৩ জন ছাত্রকে তারা হেফাজতে নিয়েছেন।


পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ছাত্রাবাসের একটি রুমে মূলত এসব অস্ত্র-গুলি ও মাদকদ্রব্য পাওয়া যায়। ওই রুমে যশোরে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেক্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তৌফিক এলাহী, চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আবু হেনা রোকন ও কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাফিউন থাকতেন। তাদের আটক করা হয়েছে।


কোতোয়ালী থানা পুলিশের ওসি মো. মনিরুজ্জামান জানান, রাতের অভিযানে জুয়েলের আস্তানায় বেশ কিছু কনডমও পাওয়া যায়। এছাড়া সেখান থেকে ইয়াবা ও গাঁজা সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।


তিনি বলেন, জুয়েল ওই এলাকায় বড় ধরনের মাদকের কারবার চালিয়ে আসছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত জুয়েল ও তার বাবা আলমকে আটকের জন্য জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।


পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ তাসমীম আলম জানান, রাতে শেখহাটিতে সন্ত্রাসী জুয়েলদের বাড়িতেও তারা অভিযান চালিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে কোন কিছু পাওয়া যায়নি। তবে রাতে অভিযানের পর কাজী ছাত্রাবাস তারা ঘেরাও করে রেখেছিলেন। বুধবার দুপুরে তারা ফের কাজী ছাত্রাবাসে তল্লাশি চালান।


পুলিশের একটি সূত্র জানায়, একুশে ফেব্রুয়ারির রাতে শহরের দড়াটানায় সন্ত্রাসী জুয়েল এবং তার সহযোগীরা তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাশেদুল ইসলাম রাহুল নামে এক যুবককে মারধর ও ছুরিকাঘাত করে। রাহুল চাঁচড়া চেকপোস্ট এলাকার নাজিম উদ্দিনের ছেলে। এ ঘটনায় ৮ জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা হয়। কিন্তু মামলার পর জুয়েল ও তার সহযোগীরা বাদী ও সাক্ষীদের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল।


মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে তারা মামলার অন্যতম সাক্ষী শেখহাটির হাওলাদার রনিকে মারধর করে। আহত রনি শহরের একটি ক্লিনিকে ভর্তি রয়েছেন। সাক্ষী হাওলাদার রনিকে মারধরের বিষয়টি জেনে যায় পুলিশ। এরই প্রেক্ষিতে এবং অস্ত্র মজুদ রাখার গোপন সংবাদ পাওয়ায় জুয়েলের শেখহাটির আস্তানায় পুলিশ অভিযান চালায়।


কাজী জুয়েলের বিরুদ্ধে হত্যা ও অস্ত্রসহ ৭টি মামলা রয়েছে। অভিযানে অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য উদ্ধারের ঘটনায় জুয়েল ও তার বাবা আলমসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় মামলা হবে বলে জানিয়েছেন পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ তাসমীম আলম।


বিবার্তা/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com