শিরোনাম
মা হয়েছেন সেই মানসিক ভারসাম্যহীন পারভীন
প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৮:৩৫
মা হয়েছেন সেই মানসিক ভারসাম্যহীন পারভীন
ছবি: মোল্লা তোফাজ্জল
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

টাঙ্গাইলের কালিহাতীর রাস্তা থেকে পাওয়া সেই মানসিক ভারসাম্যহীন পারভীন মা হয়েছেন।


গত ২৭ নভেম্বর ২০১৯ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। বর্তমানে গাজীপুরের কামিশপুর সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে মা ও মেয়ে দুজনই শারীরিকভাবে সুস্থ্য আছেন।


শিশু পাপিয়ার বয়স ২ মাস ১৫ দিন পেরিয়ে গেছে। নেই বাবার পরিচয়। বেড়ে উঠছে সরাকরি আশ্রয় কেন্দ্রে।


আশ্রয় কেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে জানা যায় কন্যা শিশুটির নাম রাখা হয়েছে পাপিয়া। মা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় শিশুটির দেখভালের জন্য শান্তা নামের একজনকে দায়িত্ব দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তি পুনর্বাসন আইনে পরিচালিত সমাজসেবা অধিদফতরের অধীনে কাশিমপুর সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে বর্তমানে ১৪৪ জন আশ্রিত রয়েছেন।


আশ্রয় কেন্দ্রের উপ-সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, টাঙ্গাইলের কালিহাতীর তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিত দেবনাথ স্যারের নির্দেশ মোতাবেক আমরা এই মহিলাকে ভর্তি করি। পরে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একাধিকবার চেকআপ ও গর্ভবতী হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। প্রসব ব্যাথা শুরু হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।


জাকির হোসেন আরো বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন মা খেয়াল খুশিতো শিশুটিকে শুধু বুকের দুধ খাওয়ায়। মায়ের আদর ভালবাসা ও দায়িত্ব কর্তব্য ছাড়াই বেড়ে উঠছে এতিম পাপিয়া। তবে সর্বাত্মক যত্ন করি। একটি নির্দিষ্ট সময় পর আমাদের এখানে শিশু লালন পালনের কোন ব্যবস্থা নেই। মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাটি এখনো তার ঠিকানা পরিচয় কিছুই বলতে পারেন না। শুধু নাম পারভীন বলেই হেসে উঠেন।


কালিহাতীর প্রাক্তন বর্তমানে ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত দেবনাথ বলেন, গর্ভবতী মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলারকে ২০১৯ সালের (১৮আগষ্ট) উদ্ধার করে সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে কাশিপুরের আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানো হয়।


কালিহাতীর মাইস্তার জমশেদ নামের এক ব্যবসায়ী বলেন গর্ভবতী মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাটি নিয়মিত খাবার না পেয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছিল। গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার চেয়ে খেত। খুব কষ্ট পেয়েছি। খবর প্রকাশের পর আশ্রয় কেন্দ্রে স্থান পাওয়ায় আমাদের ভাল লেগেছে।


গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবু নাসার উদ্দিন বলেন, শিশুটির বয়স ৬ মাস পূর্ণ হলে সার্বিক কল্যাণের জন্যে ঢাকার আজিমপুরের ছোটমণি নিবাসে প্রেরণ করা হবে। সেখান থেকে এই এতিম মেয়েটিকে যথাযথ প্রক্রিয়া মোতাবেক আগ্রহী ব্যক্তিরা নিতে পারবেন। আর মায়ের পরিবারের খোঁজ পাওয়া গেলে সবচেয়ে ভাল হয়।


টাঙ্গাইল জেলা মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ বলেন, একজন মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা গর্ভবতী হয়ে মা হয়েছেন, এর থেকে জঘন্য কি হতে পারে? দোষীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া দরকার। যাতে এ ধরনের ঘটনা সমাজের আর না ঘটে। তা না হলে বড় হয়ে পাপিয়া একদিন যখন জানতে পারবে তার জন্মসূত্র। তখন সমাজের প্রতি তার অনেক ঘৃণা জন্ম নিবে।


বিবার্তা/তোফাজ্জল/এনকে

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com