শিরোনাম
ধরলার ভাঙনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হারানোর শঙ্কা
প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৮:৪৯
ধরলার ভাঙনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হারানোর শঙ্কা
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

শুকনো মৌসুমে ধরলার ভাঙনে আতঙ্কিত করেছে গ্রামের মানুষ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। তাই নিজেদের শেষ আশ্রয় ঘর-বাড়ি আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাঁচাতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে নদীর পাড়ে জড়ো হয়ে দ্রুত ভাঙন রোধের দাবি জানিয়েছেন তারা।


শুকনো মৌসুমেই ভাঙন রোধে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা না নিলে আগামী বর্ষা মৌসুম আসার আগেই সব হারাতে হবে তাদের।


এ কথা গুলো বলছেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের মোগলবাসা ঘাটে ভাঙন রোধের দাবিতে মানব বন্ধনে আসা গ্রামের মানুষ, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।


বুধবার দুপুরে সরেজমিনে মোগলবাসা ঘাটে গিয়ে দেখা যায় শত শত শিক্ষার্থী, স্থানীয় বাসিন্দা, জনপ্রতিনিধিরা ধরলা নদীর ভাঙনের ওপর দাঁড়িয়ে সংবাদকর্মীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন। তাদের আঁকুতি আমরা কিছু চাই না। প্রধানমন্ত্রী যেন আমাদের নদী ভাঙনটা বন্ধ করে দেন। আমাদের ঘর-বাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ইউনিয়ন পরিষদ, মসজিদ, মন্দির রক্ষায় যেন দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।এ কথাগুলো শুধু একজন বা দু’জনের নয়, মানববন্ধনে অংশ নেয়া শত শত শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের।


স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত এক মাস ধরে সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের কিসামত, কিসামত মোগলবাসা ও সিতাইঝাড় গ্রামে প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে নদী ভাঙন তীব্র আকাড় ধারণ করেছে। ইতিমধ্যেই কয়েক’শ ঘর-বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের হুমকীতে পড়েছে ওই তিন গ্রামের ৫ শতাধিক ঘর-বাড়ি, মোগলবাসা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়, খেলার মোড় মাদ্রাসা, সেনের খামার উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয়, সন্নাসীর পাঠ মাদ্রাসা, মসজিদ ও মন্দির, ঐতিহ্যবাহী মোগলবাসা হাট, ইউনিয়ন পরিষদ ভবনসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান।


গত এক বছরের মধ্যে এক কিলোমিটার দূরে থাকা ধরলা নদী ভাঙতে ভাঙতে এখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের তীর রক্ষা বাঁধের একেবারেই কাছে চলে এসেছে।


এ অবস্থায় ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো পদক্ষেপ না থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা নিজ উদ্যোগে বাঁশের বান্ডেল দিয়ে ভাঙন রোধের চেষ্টা অব্যাহত রাখলেও তা কোনো কাজে আসছে না।


মোগলবাসা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুল হাই জানান, আমার বিদ্যালয়ে ১ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী। নদী বিদ্যালয়ে সন্নিকটে চলে এসেছে। এখনই ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই বিদ্যালয় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তখন এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে নিয়ে কোথাও যাওয়ার উপায় থাকবে না।


মোগলবাসা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: নুরুজ্জামান বাবলু জানান, ধরলার ভাঙনে ইতিমধ্যে মোগলবাসা ইউনিয়নের বেশকিছু পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। এভাবে ভাঙতে থাকলে শুকনো মৌসুমেই আরো বেশকিছু ঘর-বাড়ি ফসলী জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হবে।আমি দ্রুত এ ভাঙন প্রতিরোধে সরকারের নিকট জোড় দাবি জানাচ্ছি।


এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আরিফুল ইসলাম জানান, মোগলবাসার ইউনিয়নের ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে জরুরি ভিত্তিতে অস্থায়ী প্রতিরোধের জন্য অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়ার সাথে সাথে ধরলার ভাঙন রোধে ওই এলাকায় অস্থায়ীভাবে কাজ শুরু করা হবে। এছাড়াও ধরলার ডানতীর রক্ষা প্রকল্প নামে স্থায়ী প্রতিরোধের জন্য একটি প্রকল্প একনেকে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। এ প্রকল্পটি পাস হলে মোগলবাসাসহ ধরলার ভাঙন কবলিত এলাকাগুলোতে ভাঙনরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হবে।


বিবার্তা/সৌরভ/জাহিদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com