চায়ের রাজধানী হিসেবে পরিচিত মৌলভীবাজার জেলায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা। গত কয়েকদিনের শীতে ভোগান্তি বেড়েছে চা শ্রমিকসহ ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষের।
খড়-খুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন তারা। হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা তবে বয়স্ক রোগীদের সংখ্যা সেভাবে বৃদ্ধি না পেলেও বেড়েছে ঠাণ্ডা জনিত কারণে শিশু রোগীর সংখ্যা।
গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা অনেকটাই উঠানামা করেছে ১১ ডিগ্রির আশেপাশে এবং মঙ্গলবারে মৌলভীবাজারের তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আগামী শুক্রবার থেকে আরেকটি শৈত্যপ্রবাহ সহ এই তাপমাত্রা আরো কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিসে সূত্রে জানা যায়, ১২ ডিসেম্বর এ বছর মৌলভীবাজারে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস সেদিন থেকে ঝেঁকে বসে শীত যা এখনো অব্যাহত আছে। মধ্যে তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছালেও সর্বশেষ মঙ্গলবার তাপমাত্রা নেমে এসেছে ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সেই সাথে আকাশে প্রচুর মেঘ থাকায় সূর্যের আলো সময়ে সময়ে দেখা দিলেও বেশিরভাগ সময় আড়ালেই থাকছে সূর্য্। সূর্যের আলো না থাকায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. আনিছুর রহমান জানান, আকাশে প্রচুর মেঘ রয়েছে যার কারণে স্বাভাভিকের চেয়েও বেশি ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে। যদি মেঘ কেটে যায় তাহলে ঠাণ্ডা কমে আসবে।
এদিকে শীতের প্রকোপে ও হিম শীতল হাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে চাবাগানের প্রায় ৩ লাখেরও বেশি চা জনগোষ্ঠী। শেষ বিকেল থেকে ঘন কুয়াশা শুরু হয়ে রাত বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি আকারে তা নেমে আসছে। শীতের প্রকোপ আর কুয়াশার কারণে কোনোদিন দুপুর পর্যন্ত আবার কোনোদিন সারাদিনও দেখা মিলছেনা সূর্যের।
সন্ধ্যা নামতে না নামতেই শুরু হওয়া ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে নাকাল হয়ে পড়েছে জেলার জনজীবন।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাম ভোজন কৌরি জানান, চা-বাগান গুলোতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সরকারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে যদিও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য।
এদিকে সরজেমিনে মৌলভীবাজার (২৫০ শয্যা ) সদর হাসপাতালে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় ভর্তি রোগীদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট ও এজমা রোগীদের সংখ্যায় বেড়েছে সেই সাথে শিশু ওয়ার্ডের প্রতিটি বেডে ভর্তি আছে ঠাণ্ডা জনিত কারণে আক্রান্ত শিশুরা।
মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রত্নদ্বীপ বিশ্বাস তীর্থ বলেন, হাসপাতালে অন্য সময়ের মত রোগীর সংখ্যা স্বাভাবিক থাকলেও গত ১০ দিনের মধ্য ভর্তি হওয়া এবং বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসা নেয়া রোগীদের বেশির ভাগ ঠাণ্ডা জনিত সমস্যায় আক্রান্ত। এর মধ্যে গত ১০ দিনে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন ৫২০ জন।
এ দিকে জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, মৌলভীবাজারের ৭টি উপজেলায় শীতার্তদের মাঝে এখন পর্যন্ত ৪১ হাজার ২০০ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মল্লিকা দে বলেন, সাধারণ মানুষের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ অব্যাহত আছে। আমাদের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে এবং সামনে আরো শীত বস্ত্র আসবে।
বিবার্তা/আরিফ/জাই
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]