টাঙ্গাইলের সখীপুরে ৫ মাস পর বৃদ্ধা সমেলা ভানু (৫৭) হত্যার রহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। নাটোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল নওগাঁ জেলার বাসিন্দা বাবু শেখ (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করলে গত ২০ নভেম্বর নাটোর আদালতে দেয়া এক জবানবন্দিতে বাবু শেখ টাঙ্গাইলের সখীপুরের সমেলা ভানু হত্যার দায় স্বীকার করে। বাবু শেখের নেতৃত্বে একটি খুনি চক্র টাঙ্গাইলের সখীপুর ও মির্জাপুরে দুজন বৃদ্ধাসহ আরো দুই জেলায় নয়জন নারীকে খুন করে।
সখীপুর থানা পুলিশ নাটোর থেকে আসামি বাবু শেখকে তিন দিনের রিমান্ডে এনে ২৭ নভেম্বর বুধবার সকালে টাঙ্গাইল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। বাবু শেখ টাঙ্গাইলের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতেও সমেলা ভানুসহ সারা দেশে নয়জন নারীকে খুন করার কথা স্বীকার করে। বাবু শেখ ওরফে কালু নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলার হরিশপুর গ্রামের জাহের আলীর ছেলে।
এ তথ্য নিশ্চিত করে সখীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এএইচ এম লুৎফুল কবির জানান, গত ৯ জুলাই রাতে উপজেলার হাতীবান্ধা ইউনিয়নের আমড়াতৈল গ্রামের মৃত বাবর আলীর স্ত্রী সমেলা ভানু খুন হন। সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে শ্বাসরোধ করে ওই বৃৃদ্ধাকে হত্যা করা হয়।
বাবু শেখ ও সহযোগী ডাবু মিলে ওই বৃদ্ধাকে খুন করে একটি স্বর্ণের চেইন ও পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে যায়। ১০ জুলাই সমেলার ছেলে হোসেন আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে সখীপুর থানায় মামলা করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, বাবু শেখ সখীপুরের সমেলা ভানু হত্যা কান্ডের দুই মাস পর গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে মির্জাপুর উপজেলার হরতকীতলা গ্রামের কাঞ্চু খানের স্ত্রী রুপভানু বেগমকেও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। সেখান থেকে প্রায় ৪০ হাজার টাকার মালামাল চুরি করে পালায়। বাবু শেখ পুলিশের কাছে স্বীকার করে ৯টি খুনের মধ্যে দুটি খুনে নওগাঁ এলাকার গোলাম রসুল ওরফে ডাবুকে সহযোগি হিসেবে ব্যবহার করেছে সে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এএইচ এম লুৎফুল কবির আরো জানান, সখীপুরের সমেলা ভানুর গলায় থাকা স্বর্ণের চেইনটি বাবু শেখ গাজীপুর মহানগর এলাকার গাছা থানার স্বর্ণপট্টিতে কামরুল নামের এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে। এ পর্যন্ত আটবার সে কামরুলের কাছে চুরি করা সোনার গহনা বিক্রি করে। চুরির মাল ক্রয় করার অপরাধে পুলিশ কামরুলকে গ্রেফতার করে বাবু শেখের সঙ্গে টাঙ্গাইল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
একাধিক হত্যা মামলার আসামী বাবু শেখ এর দাবি, রানীনগর থানার এক ইউপি চেয়ারম্যান তাঁকে একটি খুনের মিথ্যা মামলায় আসামি করেন। এরপর থেকে নওগাঁ থেকে সে পালিয়ে নাটোর আসে। কাজকর্ম না থাকায় গ্রামে ঘুরে ঘুরে চুরি ও চুরি করতে গিয়ে নারী ধর্ষণ ও খুনের নেশায় জড়িয়ে পড়েন সে।
এ প্রসঙ্গে সখীপুর থানার ওসি আমির হোসেন জানান , বাবু শেখ একজন সিরিয়াল কিলার। খুন করাই যেন তার নেশা। সে বেশিরভাগ খুন করেছে রাতের বেলায় আর ঠান্ডা মাথায়। গত ছয় বছরে সে সখীপুরসহ নয়জন নারীকে খুন করেছে। হত্যা করার আগে ছয়জন নারীকে ধর্ষণ করেছে বলে সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
বিবার্তা/তোফাজ্জল/আবদাল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]