শিরোনাম
পলাশবাড়ীতে চামড়া কেনা-বেচার জমে উঠছে
প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০১৯, ২২:৪৩
পলাশবাড়ীতে চামড়া কেনা-বেচার জমে উঠছে
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বিগত যে কোনো সময়ের চেয়ে স্মরণকালের কোরবানির পশুর চামড়ার মূল্যের চরম ধসের ধকল কিছুটা কাটিয়ে উঠেছে।বুধবার (২৮ আগস্ট) ছিল কোরবানির পশুর চামড়া কেনা-বেচার দ্বিতীয় হাট।


দেশের অন্যতম বৃহত্তম গাইবান্ধার পলাশবাড়ী পৌর শহরের ঐতিহ্যবাহী কালীবাড়ী চামড়ার হাটে গত সপ্তাহে প্রথম হাটের তুলনায় চামড়ার আমদানি ক্রেতা সমাগম চাহিদা-দাম সবই ছিল একটু চাঙ্গাভাব।তবে চামড়া বেচাকেনা হলে দাম ছিল চাহিদার চেয়ে অনেক কম। অনেক চামড়া ব্যবসায়ী বিনা লাভে চামড়া বিক্রি করে মূলধন তুলেছেন।অনেকেই আবার লোকসানে চামড়া বিক্রি করেছেন।


গত ২১ আগস্ট বুধবার বসেছিল কোরবানীর পশুর চামড়ার প্রথম হাট।উত্তরাঞ্চল তথা সারাদেশ জুড়ে অন্যতম বৃহত্তম গাইবান্ধার পলাশবাড়ী পৌর শহরের কালীবাড়ী চামড়ার হাট। বুধবার সাপ্তাহিক হাট সামনে রেখে সোমবার বিকেল থেকে শুরু হয় চামড়া আমদানির ধারাবাহিকতা।দু'দিন পেরিয়ে বুধবার কাকডাকা ভোরে এসে আমাদানি ও কেনা-বেচা হয় একীভূত।


কেনা-বেচার পাশাপাশি হাটটি চামড়া ব্যবসায়ীদের এক মিলন মেলায় পরিণত হয়।রাজধানী ঢাকা ছাড়াও উত্তরের রংপুর বিভাগীয় জেলা-উপজেলাসহ সারাদেশ থেকে আসা চামড়া ব্যবসায়ীদের গুন-গুন কোলাহল আর পদচারণায় হয়ে উঠে মুখরিত। গরু-মহিষ, খাসি-বকরি ও ভেড়ার বিপুল সংখ্যক চামড়ায় হাটটির মূল আঙ্গিনা কানায়-কানায় ভরে উঠে।বিক্রেতাদের পাশাপাশি চামড়া শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত রাজধানী ঢাকা থেকে সরাসরি ট্যানারি,লেদার কোম্পানি ও আড়ৎদার ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানসহ ছোট-বড় বিভিন্ন পর্যায়ের ক্রেতা সাধারণের পদচারণা ঘটে।চামড়ার ধপাস ধপাস শব্দে হাটস্থল মুখরিত হয়ে উঠে।


এ অঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বিক্রেতারা তাদের আমদানিকৃত পশুর চামড়ার লট সাজানোর পর বুধবার প্রত্যুষে যাচাই-বাছাইসহ শুরু হয় আনুষ্ঠানিক কেনা-বেচার পালা। দিনভর চলে চামড়া কেনা-বেচা।বুধবার দিন গড়িয়ে সন্ধা পেরিয়ে রাত পর্যন্ত একসময় শেষ হয়।স্থানীয়ভাবে গড়ে উঠা বিভিন্ন আড়ৎ বা নিজস্ব গুদামে মজুদ, অনেক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানই তাদের স্ব-স্ব নিজস্ব পরিবহন যোগে গন্তব্যস্থান সরাসরি রাজধানী ঢাকার নিয়ে যান।


হাট ঘুরে দেখা যায় গত হাটবারের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণ চামড়ার আমদানি ঘটেছিল।আমদানিকৃত চামড়া সবই বিক্রি হয়েছে।চামড়া অবিক্রিত ফেরত যায়নি বলে জানান ব্যবসায়ীরা।


নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায় গত হাটবারের চেয়ে ঢের গুন বেশি প্রায় ৪০ হাজার পিস গরুর চামড়া এবং খাশি বকরি ও ভেঁড়া মিলে প্রায় ২০ হাজার পিস চামড়ার আমদানি ঘটে।গত হাটে প্রায় ২৫ হাজার পিস গরু এবং ১০/১৫ হাজার পিস ছাগলের চামড়ার আমদানি ঘটেছিল।একটি খাশির চামড়া কুড়ি টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।


গতহাটে গরুর চামড়া তিন স্তরে শ্রেণিবিন্যাসে ৩০০, ৫০০ ও ৯০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।সমমানের একই চামড়া চাহিদার সহিত বিক্রি হয় যথাক্রমে ৪০০,৬০০ ও ১১-১২'শ টাকা পর্যন্ত।


তথ্যানুসন্ধানে জানা যায় রাজধানী ঢাকার আজমেরী ট্যানারি গরুর চামড়া কিনেছেন ৩ হাজার, ওবিএস কিনেছেন সাড়ে ৩ হাজার,আর-কে ট্যানারি কিনেছেন ৮ হাজার পিস ছাড়াও আকিজ লেদারসহ অন্যান্য ক্রেতারা বেশ উল্লেখযেগ্য পরিমাণ চামড়া কিনেছেন।


এদিকে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাটে আসা নানা কোম্পানি ও ট্যানারিসহ ছোট-বড় মহাজনি ক্রেতা,আড়ৎদাররাও একইসাথে চামড়া কিনেছেন এবং বিকিয়েছেন।


বিভিন্ন কোম্পানির অনুমোদীত এজেন্সি বা প্রতিনিধি স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে আফতাব মোল্লা, ফুলমিয়া,মিনু মন্ডল,নান্নু মিয় ও কাওসার বাবলুসহ অনেক ক্রেতাই চামড়া কিনেছেন।স্থানীয়দের মধ্যে মাহমুদ মিয়া কিনেছেন প্রায় ৮ হাজার চামড়া।সবমিলিয়ে ক্রমান্বয়ে চামড়ার চাঞ্চল্যকর দরপতনের ধস অনেকটা কাটিয়ে উঠেছে।


এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত গতকাল সন্ধ্যা সাতট চামড়া কেনা-বেচা প্রায় শেষ হলেও অন্যত্র বহনে ট্রাক লোডিং অব্যাহত রয়েছে বলে জানা যায়।


বিবার্তা/রুবেল/জাই


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com