বেশ করে গায়ে ‘ডিয়োডোর্যান্ট’ স্প্রে করছিল বছর বারোর ছেলেটি। সেই গন্ধ নাকে যেতেই প্রবল খিঁচুনি শুরু হয় তার। কাঁপতে কাঁপতে মাটিতে পড়ে যেতেই দমবন্ধ হয়ে আসতে থাকে। তার পরেই হার্ট অ্যাটাক।
ইংল্যান্ডের দক্ষিণ ইয়র্কশায়ারে ঘটেছে এই ঘটনা। সুগন্ধির গন্ধে হৃদ্যন্ত্র বিকল হয়ে গভীর কোমায় কিশোর।
ছেলেটির নাম সিজ়ার ওয়াটসন-কিং। তার পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, বাড়িতে সেই সময়ে সিজ়ার ও তার ভাই ছিল। সদ্য কেনা কয়েকটি সুগন্ধি গায়ে মাখছিল সিজ়ার। তখনই বিপদ ঘটে যায়। সিজ়ারের ভাই দেখে, সুগন্ধির বোতল হাতেই কাঁপতে কাঁপতে মাটিতে পড়ে গিয়ে ছটফট করছে সে। তার পরেই জ্ঞান হারায়। তড়িঘড়ি অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে জানা যায়, সিজ়ারের ‘সিভিয়ার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ হয়েছে। গভীর কোমাতেও চলে যায় সে।
চিকিৎসকেদের বক্তব্য, কড়া গন্ধের সুগন্ধি মানেই তাতে বিভিন্ন রকম রাসায়নিকের মিশ্রণ থাকে। এই সব রাসায়নিক নাক দিয়ে ফুসফুসে ঢুকলেই শ্বাসনালিতে অক্সিজেন প্রবাহে বাধা তৈরি করতে পারে। তখন কোষে কোষে বিশুদ্ধ অক্সিজেন পৌঁছনো বন্ধ হয়ে যাবে। যার প্রভাব পড়বে হৃদ্যন্ত্রে। ফলস্বরূপ আচমকাই হৃৎস্পন্দনের হার অনিয়মিত হয়ে গিয়ে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। সিজ়ারের ক্ষেত্রে তেমনটাই হয়েছিল বলে দাবি চিকিৎসকদের।
পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, কিশোর যে সুগন্ধিটি ব্যবহার করছিল, তাতে প্রচুর পরিমাণে কার্বন মনোক্সাইড ছিল। এই কার্বন মনোক্সাইড শরীরে ঢুকে রক্তের হিমোগ্লোবিনের সঙ্গে যুক্ত হয়। ফলে শরীরের ভিতরে আচমকাই অক্সিজেনের প্রবাহ থমকে যায়। ‘হাইপক্সিয়া’র লক্ষণ দেখা দেয়। রক্তে অক্সিজেন কমে যাওয়াকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় ‘হাইপক্সিয়া’। এর ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ অক্সিজেনের অভাবে কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে। হাইপক্সিয়ার কারণে মস্তিষ্কেরও ক্ষতি হয়। শরীরের প্রবল ঝাঁকুনি বা খিঁচুনি হতে পারে। হার্ট অ্যাটাক অথবা স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন রোগী।
ডিয়োডোর্যান্টে যে যে রাসায়নিক পদার্থ ব্রেযবহৃত হয়, সেগুলি স্নায়ুতন্ত্রেরও ক্ষতি করতে পারে। সুগন্ধিতে ব্যবহৃত অনেক রাসায়নিকের কারণে ত্বকে ক্যানসারের আশঙ্কাও বাড়ে। তাই যে কোনও সুগন্ধি ব্যবহারের আগে তাঁর উপকরণগুলি একটু যাচাই করে নেওয়াই শ্রেয়।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]