
জাপানের প্রত্যন্ত গ্রামে এক ব্যক্তি বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে দেখেন, একটি ভালুক তাঁর ঘরে আরাম করে শুয়ে আছে।
মঙ্গলবার জাপানের স্থানীয় গণমাধ্যমের এক খবরে এমনটাই বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, তুষারাচ্ছাদিত ফুকুশিমা অঞ্চলে গত সোমবার এক ব্যক্তি তাঁর ঘরে ঢুকতে গিয়ে দেখেন, বসার ঘরে নিচু টেবিলের ওপর একটি ভালুক শুয়ে আছে। ওই টেবিলের নিচে হিটিং ব্যবস্থা চালু ছিল। সেখানে ছিল কম্বলও।
জাপানের ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আমি কাজ থেকে বাড়ি ফিরেছি। এসেই দেখি টেবিলে মাথা রেখে একটি ভালুক শুয়ে আছে। ওই ভালুক লম্বায় প্রায় ৩ ফুট (৯০ সেন্টিমিটার)।’
৬০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি বাড়িতে একা বসবাস করেন। ভালুক দেখে দ্রুত তিনি দৌড়ে পাশের বাড়িতে যান। সেখান থেকে তিনি পুলিশকে ফোন দেন। প্রায় ১ ঘণ্টা পর ভালুকের সন্ধানে তিনি পুলিশের সঙ্গে বাড়িতে ফেরেন। এসে দেখতে পান, তাঁর ঘরের সব খাবার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে।
কাইদো নিউজের এক খবরে বলা হয়, পুলিশ ওই এলাকার আশপাশের বাড়ির বাসিন্দাদের বাড়ি খালি করে অন্যত্র আশ্রয় নিতে অথবা দরজা ভালোভাবে বন্ধ করে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। ওই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
জাপানের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকে বলেছে, গতকাল মঙ্গলবার দিনের মধ্যভাগ পর্যন্ত ভালুকটি বাড়ির অভ্যন্তরে ছিল। গতকালও ওই এলাকায় প্রচুর তুষারপাত হয়েছে।
গত কয়েক বছরে জাপানের বিভিন্ন এলাকায় মানুষ আর ভালুক মুখোমুখি হওয়ার বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জাপান সরকার হিংস্র প্রাণীকে গুলির ক্ষেত্রে বর্তমান বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করার পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।
জাপান সরকারের এই পরিকল্পনা আগামী বছর কার্যকর হতে পারে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে স্থানীয় সরকারকে ‘জরুরি প্রয়োজনে’ জনবসতিপূর্ণ এলাকায়ও হিংস্র প্রাণীদের লক্ষ্য করে গুলি করার অনুমতি দেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাপানের গ্রামীণ এলাকায় জনসংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে ক্ষুধার্ত ভালুকেরা অনেক সময় নগরের কাছাকাছি জনপদেও হানা দেয়।
এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভালুকসহ হিংস্র প্রাণীদের খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। তাদের শীতযাপনের সময়েও প্রভাব পড়েছে। এই গ্রীষ্মে জাপানে রেকর্ড পরিমাণ গরম অনুভূত হয়েছে।
জাপানে গত এক বছরে ভালুকের হামলায় ছয়জন প্রাণ হারিয়েছেন। একই সময়ে সে দেশে ৯ হাজার ভালুককে হত্যা করা হয়েছে। চলতি মাসের গোড়ার দিকে আকিতা অঞ্চলে একটি সুপারমার্কেটে দুই দিন ধরে তাণ্ডব চালায় একটি ভালুক। পরে নানা খাবারের লোভ দেখিয়ে তাকে ওই মার্কেট থেকে বের করে নেওয়া হয়।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]