রমজানে যে চার আমল বেশি বেশি করবেন
প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২৫, ১২:৪৯
রমজানে যে চার আমল বেশি বেশি করবেন
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বছরের অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় রমজান মাসে মুসলমানরা বেশি ইবাদত করেন। যারা অন্য মাসে নামাজ পড়েন না তাদেরকেও এই মাসে নামাজ পড়তে দেখা যায়। তাই বলা যায় আমল ইবাদতের মাস রমজান।


রমজানের শুরুর দিনগুলোতে মসজিদগুলোতে থাকে উপচেপড়া ভিড়। ধীরে ধীরে মসজিদে আনাগোনা কমে গেলেও প্রাথমিক চিত্রগুলোই রমজান মাসের প্রতিনিধিত্ব করে। এটাই মূলত মুলমানদের রমজানের চিত্র। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবি, পূর্ববর্তী ও বর্তমান অনুসরণীয় আলেম, দ্বীনদ্বার ব্যক্তিরাও আমল ইবাদতে অতিবাহিত করেন রমজান মাস।


কোরআন তিলাওয়াত


আল্লাহ তায়ালা মানব জাতির হেদায়েতের জন্য পবিত্র কোরআন নাজিল করেছেন। এতে মানুষের জীবনযাপনের সব ধরনের বিধি-নিষেধ জানিয়ে দিয়েছেন। রাসূল সা. সাহাবিদের কোরআনের বিধান জানিয়েছেন এবং তিলাওয়াত করেছেন। তিলাওয়াত করতে উৎসাহিত করেছেন।


কোরআন নাজিলের মাসে তিনি কোরআন তিলাওয়াত করতেন বেশি বেশি। তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত এই মাসে বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করা। অন্তত প্রতিদিন এক পৃষ্ঠা বা কিছু সময় হলেও কোরআন তিলাওয়াত করা উচিত।


প্রতি রমজানে রাসুলুল্লাহ (সা.) ও জিবরাইল (আ.) পরস্পরকে কোরআন শোনাতেন। ফাতেমা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘তার পিতা তাকে বলেছে, প্রতি রমজানে জিবরাইল (আ.)-কে একবার কোরআন তেলাওয়াত করে শোনাতেন। কিন্তু মৃত্যুর বছর তিনি তাকে দু’বার কোরআন শোনান।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬২৮৫)


দান-সদকা


কোরআন তিলাওয়াতের পাশাপাশি রমজানে যে আমলটি আরও বেশি বেশি করবেন সেটি হলো, দান ও সদকা। এই আমলগুলো পুরো বছরের আমল হলেও রমজানে বেশি বেশি করা উচিত ফজিলত লাভের আশায়। কারণ, রমজানে যেকোনো আমলের ফজিলত বেড়ে যায়। আল্লাহ তায়ালা আমলের অনেক বেশি প্রতিদান দেন।


রমজানে রাসূল সা.-এর দানের বিবরণ দিতে গিয়ে হজরত ইবনে আব্বাস রা. বলেন-


রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল। তিনি রমজান মাসে সবচেয়ে বেশি দান করতেন যখন জিবরিল আ.-এর সাথে দেখা হত। জিবরিল আ.-এর সাথে দেখা হলে তিনি হয়ে উঠতেন মুক্ত বাতাসের চেয়েও দানশীল। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬; সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৮০৩)


ইস্তেগফার পাঠ


ইস্তেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা গুনাহ মাফ করে দেন এবং মযার্দা বৃদ্ধি করেন। রমজানে বেশি ইস্তেগফার পাঠ করা উচিত।


মানুষ শয়তানের ধোঁকা, নফসের প্ররোচনা ও পরিবেশের কারণে গুনাহের কাজে জড়িয়ে থাকে, আর এই গুনাহ থেকে নিজেকে পবিত্র করার বড় মাধ্যম হলো, ইস্তেগফার।


পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,‘আমি তাদেরকে বলেছি, নিজ প্রতিপালকের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল।’ (সূরা নুহ, আয়াত :১০)


ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বেশি বেশি ইস্তিগফার করে আল্লাহ তায়ালা তার সব সংকট থেকে উত্তরণের ব্যবস্থা করে দেন, তার সব পেরেশানী দূর করে দেন এবং তাকে এমন জায়গা থেকে রিজিক দান করেন, যা সে কল্পনাও করতে পারে না।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস, ১৫১৮)


জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাওয়া


রমজানে মানুষ নেক আমল বেশি বেশি করে এবং করার চেষ্টা করেন। নেক আমলে লিপ্ত থাকার ফলে আল্লাহ তায়ালা সহজেই দোয়া কবুল করেন। মানুষ নিজের প্রয়োজন অনুপাতে আল্লাহর কাছে দোয়া চায়। দোয়া করার সময় আল্লাহ তায়ালার কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি প্রার্থনা করা উচিত।


দুনিয়াবী অনেক প্রয়োজন থাকে আমাদের তবে সব থেকে বড় প্রয়োজন হলো জাহান্নাম থেকে মুক্তি। যে ব্যক্তি জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করবে তার আর কোনো টেনশন থাকবে না। সাবর উচিত রমজানে আল্লাহ তায়ালা কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি প্রার্থনা করা।


বিবার্তা/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com