শিরোনাম
জামায়াতকে ক্ষমা চাইতে বলে আব্দুর রাজ্জাকের পদত্যাগ
প্রকাশ : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৫:৪৯
জামায়াতকে ক্ষমা চাইতে বলে আব্দুর রাজ্জাকের পদত্যাগ
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। দলের আমির মকবুল আহমদকে পাঠানো পদত্যাগপত্রে রাজ্জাক তার পদত্যাগের কারণ হিসেবে মূলত তুলে ধরেছেন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় দলটির ভূমিকাকেই।


তিনি বলেছেন যে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করেছেন যাতে একাত্তরের ভূমিকার কারণে দলটি জাতির কাছে ক্ষমা চায়। বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী।


এসেক্সের বারকিং থেকে পাঠানো চিঠিতে তিনি এও বলেছেন যে ওই ইস্যুতে তিনি জামায়াতকে বিলুপ্ত করে দেয়ারও প্রস্তাব করেছিলেন দলীয় ফোরামে।


এ ছাড়া পদত্যাগপত্রে তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের আওতায় ইসলামি মূল্যবোধের ভিত্তিতে একটি গণতান্ত্রিক দল গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি, কিন্তু সে দাবি অনুযায়ী জামায়াত নিজেকে এখন পর্যন্ত সংস্কার করতে পারেনি।


চিঠিতে রাজ্জাক বলেন, স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর আজো দলের নেতৃবৃন্দ ৭১-এর ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাইতে পারেনি। এমনকি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ প্রসঙ্গে দলের অবস্থানও ব্যাখ্যা করেনি।


তিনি বলেন, অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন ৭১-এ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে জামায়াতের ক্ষতিকর ভূমিকা সম্পর্কে ভুল স্বীকার করে জাতির সঙ্গে সে সময়ের নেতাদের পক্ষ থেকে ক্ষমা চেয়ে পরিষ্কার অবস্থান নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।


আব্দুর রাজ্জাক দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। লন্ডন যাওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সে সময়ে আটক থাকা জামায়াত নেতাদের প্রধান কৌঁসুলি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।


১৯৮৬ সালে জামায়াতের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া রাজ্জাক তার পদত্যাগপত্রে বলেন, গত প্রায় দুই দশক তিনি জামায়াতকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে ৭১-এ দলের ভূমিকা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হওয়া উচিত এবং ওই সময়ে জামায়াতের ভূমিকা ও পাকিস্তান সমর্থনের কারণ উল্লেখ করে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।


তার মতে, জামায়াত ৬০-এর দশকে সব সংগ্রামে যেমন অংশ নিয়েছে, তেমনি ৮০-র দশকে আট দল, সাত দল ও পাঁচ দলের সঙ্গে যুগপৎভাবে সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে।


রাজ্জাক তার পদত্যাগ পত্রে বলেন, কিন্তু দলটির এসব অসামান্য অবদান ৭১-এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তার ভুল রাজনৈতিক ভূমিকার কারণে স্বীকৃতি পায়নি। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা পরবর্তীকালে জামায়াতের সব সাফল্য ও অর্জন ম্লান করে দিয়েছে।


গত ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন-পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করার জন্য সম্প্রতি দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের জরুরি সভা হয়। দলের তরুণ নেতৃত্বের দাবির মুখে সভায় একাত্তরের ভুল রাজনৈতিক ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়া এবং জামায়াত নামক দল বিলুপ্ত করে সমাজসেবামূলক কার্যক্রমে দলকে নিয়োজিত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তী সময়ে বিষয়টি দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সংস্থা মজলিশে শুরায় অনুমোদন পায়নি। সেখানে ২০-দলীয় জোটে আর না থাকা ও কোনো পর্যায়ের নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে প্রায় সবাই একমত হন।


নির্বাচন কমিশনে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। তারা দলীয় প্রতীক হারিয়েছে। তাদের কাজ করতে হচ্ছে গোপন দলের মতো।


বিবার্তা/শান্ত/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com