শ্যামপুর-কদমতলী থানা আ.লীগ; রাজাকারপুত্র ও বিতর্কিতরা আসতে চান শীর্ষ পদে
প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২৪, ২২:১২
শ্যামপুর-কদমতলী থানা আ.লীগ; রাজাকারপুত্র ও বিতর্কিতরা আসতে চান শীর্ষ পদে
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

প্রায় ৬ বছর পর নতুন করে গঠন হতে যাচ্ছে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটি। ইতোমধ্যে মহানগর উত্তর-দক্ষিণের আওতাধীন সব ওয়ার্ড-থানার প্রস্তাবিত কমিটির খসড়া তৈরি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল আজহার আগে সেই খসড়া তালিকা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। আর নতুন কমিটিতে আসতে দলের নেতাদের মধ্যে তোড়জোড় শুরু হয়েছে।


দলীয় সূত্র জানায়, প্রায় দুই বছর আগে ইউনিট পর্যায়ে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু করে আওয়ামী লীগ। এরপর ওয়ার্ড ও থানার সম্মেলন শুরু করে মহানগর আওয়ামী লীগ। তবে সেই সময় সম্মেলনের মাধ্যমে ইউনিট পর্যায়ে কমিটি গঠন হলেও ওয়ার্ড এবং থানা পর্যায়ে কমিটি গঠনে ব্যর্থ হন মহানগর নেতারা। দীর্ঘদিন পার হলেও দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্বে ও নানা জটিলতায় ঝুলে ছিল কমিটি গঠনের বিষয়টি।


তবে চলতি বছরের জুন মাসের শুরুর দিকে মহানগর উত্তর-দক্ষিণের আওতাধীন সব ওয়ার্ড-থানার প্রস্তাবিত কমিটির খসড়া তৈরি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে জমা দেয়া হয়। প্রস্তাবিত সেই খসড়ায় শ্যামপুর ও কদমতলী থানা এবং ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে বিতর্কিত ব্যক্তিরা স্থান পেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।



স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলছেন, শ্যামপুর ও কদমতলীর ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ের শীর্ষ পদে রাজাকারপুত্র, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরোধী, বিএনপি-জামায়াত পরিবারের সন্তান, বিতর্কিত ব্যক্তিরা শীর্ষ পদ বাগিয়ে নিতে তদবির করছেন। উঠেছে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগও। চাহিদা অনুযায়ী পদ-পদবি দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন কেউ কেউ।



টাকার বিনিময়ে ওয়ার্ড-থানা কমিটিতে নাম লেখানোর অভিযোগ এখন শ্যামপুর ও কদমতলীতে 'ওপেন সিক্রেট'। এমনকি স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধি দুই থানার কমিটি 'প্যাকেজ'-এ কিনে নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন- এমন বক্তব্যও চাউর হয়েছে এলাকায়। তবে এসব অভিযোগের সত্যতা নেই বলে দাবি করেছেন দক্ষিণ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। তারা বলছেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।


ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী বিবার্তাকে বলেন, থানা-ওয়ার্ডের সভাপতি-সম্পাদক পদেই বেশিরভাগ পদপ্রত্যাশী থাকেন। আমরা কমিটিতে স্বচ্ছ, ত্যাগী এবং মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয়দের নাম প্রস্তাব করেছি। যাচাই-বাছাইয়ের পর চূড়ান্ত কমিটি অনুমোদন হবে। অনেকে অনেক ধরনের অভিযোগ করছেন, এসব ভিত্তিহীন।


ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে শীর্ষ পদ চান বিতর্কিতরা:


দলীয় সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে ঢাকা-৪ নির্বাচনী এলাকার শ্যামপুর ও কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদিত হয়। সেই কমিটিতে রাজাকারপুত্র, যুদ্ধাপরাধী পরিবার ও বিএনপি-জামায়াত পরিবারের সন্তান, বিতর্কিত ও অযোগ্য ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগের পদ বাগিয়ে নেন।


সেই সময়ে কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পান মোহাম্মদ নাসিম মিয়া। অভিযোগ আছে, নাসিম মিয়া এক-এগারোর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিএনপির সাবেক নেতা ফেরদৌস আহমেদ কোরেশীর নেতৃত্বাধীন প্রগ্রেসিভ ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি)'তে যোগ দিয়েছিলেন। সেই দল থেকে এসে বনে যান থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি। ৫২নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নাসিম দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। নতুন কমিটিতে আবারও সভাপতি হিসেবে পুনর্বার তাকে দেয়া হচ্ছে এমন জোর গুঞ্জন রয়েছে।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদ নাসিম মিয়া বিবার্তাকে বলেন, আমরা নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেছে আগামী নির্বাচন যাতে গ্রহণযোগ্য হয় সেজন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী মাঠে থাকতে হবে। আপনারা যাকে পছন্দ করেন তার পক্ষে কাজ করবেন যাতে স্বতঃস্ফূর্ত ভোট হয়। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ডেকে নেত্রী এটা বলেছে। নেত্রীর কথায় আমরা বৃহত্তর স্বার্থে কাজ করেছি।


সেই সময়ে কদমতলী থানা কমিটির সহ-সভাপতির পদ পান তাজুল ইসলাম। জানা গেছে, তাজুল ইসলামের বাবা ছিলেন পিস কমিটির চেয়ারম্যান। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে শ্যামপুরের তৎকালীন চেয়ারম্যান কুখ্যাত রাজাকার আফসার করিম। ওই কুখ্যাত রাজাকারপুত্র তাজুল ইসলাম। এবারও থানা কমিটির শীর্ষ পদে আসতে তৎপরতা চালাচ্ছেন তিনি।


কদমতলী থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ বিবার্তাকে বলেন, উনারা তো আওয়ামী লীগ করে না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দলের চাঁদর গায়ে লাগাইয়া যত ধরনের অপকর্ম আছে জমি দখল, চাঁদাবাজি করার জন্য আওয়ামী লীগ করে। এরা তো আওয়ামী লীগের দুর্দিনের লোক না, সুযোগসন্ধানী। আমরা তো একাত্তরে ছিলাম না, তবে শুনেছি সে সময় তাজুল ইসলাম তাজুদের বাড়িতে পাকিস্তানের পতাকা উড়েছে। রাজাকার পরিবারের সন্তান।


বিএনপি নেতা আসলাম মোল্লার ক্যাডার সালেহ আহমদ চৌধুরী ২০১৮ সালের কমিটিতে শ্যামপুর থানা আওয়ামী লীগে পদ পান সহ সভাপতির। তিনি নিজেকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়া সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর চাচাতো ভাই দাবি করতেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। এবারের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদপ্রত্যাশী।



৬ বছর আগে হওয়া শ্যামপুর ও কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়া হয় কামাল ওরফে ভাঙারি কামালের দুই ছেলেকে। ছাত্রলীগ ও যুবলীগ না করে, এমনকি প্রাপ্তবয়স্ক না হয়েও শ্যামপুর থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হয়ে যান তার ছেলে শেখ মো. রিয়াদ ও আরেক ছেলে শেখ মো. রিফাত হন কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক।



২০১৮ সালে শ্যামপুর ও কদমতলীতে থানা কমিটি গঠনের সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন আবুল হাসনাত ও সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ। আবুল হাসনাত ২০২১ সালে মৃত্যুবরণ করেন। নতুন কমিটি গঠন নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। অথচ চাউর আছে, ২০১৮ সালে গঠিত শ্যামপুর-কদমতলী থানা কমিটি তার হাত ধরেই অনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রবেশকারী প্রবেশ করেছে।



নতুন কমিটিতেও শ্যামপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার জন্য জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. তোফাজ্জল হোসেন। বিগত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করেছেন।



শ্যামপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী হাবিবুর রহমান হাবু ও তার ছেলে সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সামিউল রহমানকে ২০২২ সালে শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য দল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়। এর মাসখানেক পরে তারা আবার স্বপদে বহাল হন। কাজী হাবিবুর রহমান হাবু ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। এর আগে ২০১৬ সায়েদাবাদ ট্রাকস্ট্যান্ড উচ্ছেদে বাধা দেয়ার অভিযোগে তাকে কাউন্সিলরের পদ থেকে বরখাস্ত করেছিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হাবিবুর রহমান হাবু ও তার ছেলে সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সামিউল রহমান নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। এবার নতুন কমিটিতে সভাপতির পদ বাগিয়ে নিতে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন হাবু।


৫১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোখলেছুর রহমান বিবার্তাকে বলেন, আমাদের এলাকায় জায়গা জমি বিক্রি হলে কাউন্সিলর (হাবিবুর রহমান হাবু) এবং উনার ছেলেকে ভাগ দিতে হয়। উনি এবং উনার দুই ছেলে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও টাকা নেয়। ওয়াইফাই, ডিশ, এলপি গ্যাস ব্যবসা, এমন কিছু বাকি নাই যেখানে তাদের হস্তক্ষেপ নাই।


তিনি বলেন, গত ইলেকশনে উনি এবং উনারা ছেলেরা ওপেন নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করেছে। এটা ওপেন। এরপরও যদি উনারা দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ পায় তাহলে নৌকার পক্ষের ত্যাগী কর্মীরা হতাশ হবে।


শ্যামপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী হাবিবুর রহমান হাবু বিবার্তাকে বলেন, এই দলটা শেখ হাসিনার। উনি যাকে মনে করবেন তাকে কমিটিতে দিবেন। এ নিয়ে কথা বলতে চাই না।


অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার অফিসে আসেন। চা খেয়ে কথা বলবো।


শীর্ষ পদে আসতে চান বিতর্কিত কাউন্সিলররাও:



দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় কদতমলীর পালপাড়ায় ট্রাক প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে এক নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখেন কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ৫৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিকুর রহমান সাইজুল। তিনি তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সানজিদা খানমের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ শুরু করেন। নারীবিদ্বেষী বক্তব্য দেয়ায় সেসময় নির্বাচনে কমিশনে সাইজুলের বিরুদ্ধে অভিযোগও জমা পড়েছিল।



কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, কাউন্সিলর শফিকুর রহমান সাইজুলের পিতা সুরুজ্জামান ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় অত্র অঞ্চলের শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন।


এ বিষয়ে ৫৮নং ওয়ার্ড কওমি মাদ্রাসা ইউনিট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ মতিন বিবার্তাকে বলেন, সাইজুলের বাবা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিল, রাজাকারের ছেলে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছে। অত্যন্ত খারাপ লোক। আওয়ামী লীগের লেবাস ধরে কাউন্সিলর হয়েছে। আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে সে এলাকায় থাকা আগের হিন্দুদের জমিও দখল করে রেখেছিল। এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার কল করেও শফিকুর রহমান সাইজুলের সাড়া পাওয়া যায়নি।


২০১৯ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন আকাশ কুমার ভৌমিক। কাউন্সিলর হওয়ার মাত্র সাত মাসের মাথায় আকাশ এবং তার স্ত্রীর নামে চিঠি পাঠায় দুদক। শুরু হয় অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনের দায়ে অনুসন্ধান। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা জানান, কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদাধিকারী আকাশ ভৌমিক একসময় চাঁদপুরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনিও এবারের নতুন কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসতে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন।


অভিযোগ আছে, প্রভাবশালী এক মন্ত্রীর সান্নিধ্যে এক সময়ে মুদি দোকানি আকাশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ঠিকাদার বনে যান। পরে মন্ত্রীর দাপট দেখিয়ে টিআর-কাবিখা, ব্রিজ-কালভার্ট, সাইক্লোন সেন্টার ইত্যাদির কাজের অনুমোদন করিয়ে বরাদ্দ দিতে লাখ লাখ হাতিয়ে নিতেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে আকাশ কুমার ভৌমিকের একাধিক নম্বরে কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।


৫৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী মো. মাসুদ। ছাত্রলীগ, যুবলীগের রাজনীতিতে কখনো না করলেও ২০১৮ সালে বাগিয়ে নেন থানা আওয়ামী লীগের পদ। জানা যায়, শ্যামপুর থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদই তার প্রথম কোনো দলীয় পদ। এছাড়া অভিযোগ আছে, ২০০৮ সালের পূর্বে তিনি জামায়াতের ডোনার ছিলেন। তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যই বিএনপি-জামায়াত সংশ্লিষ্ট। নতুন কমিটিতে থানা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদে আসার জন্য জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন তিনি। অভিযোগের বিষয়ে জানতে একাধিকবার কল করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ওয়েবসাইটে দেয়া তার মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।


দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৪ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন এডভোকেট সানজিদা খানম। আওয়ামী লীগের পদধারী নেতাদের নৌকা বিরোধী কর্মকাণ্ডে নির্বাচনে পরাজিত হন তিনি। বর্তমানে সংরক্ষিত আসনের এই সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদে হুইপের দায়িত্ব পালন করছেন। শ্যামপুর ও কদমতলী থানা এবং ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটি গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিবার্তাকে বলেন, প্রথমত আমি রাজাকারমুক্ত কমিটি প্রত্যাশা করি এবং দ্বিতীয়ত যারা বারবার নৌকার বিপক্ষে গিয়ে নির্বাচন করেছে, দল থেকে বহিষ্কার হয়েছে- এরকম লোকদের দিয়ে কমিটি হলে এলাকার লোকজন মেনে নিবে না, আমিও মেনে নিব না।


তিনি বলেন, দলের পদ ব্যবহার করে যারা নৌকার বিপক্ষে কাজ করেছে তারা আওয়ামী লীগ করে বলে আমি বিশ্বাস করি না এবং তাদের নেতৃত্বে আসার প্রশ্নই আসে না। এলাকার মানুষ স্বচ্ছ ভাবমূর্তিসম্পন্ন ও ত্যাগী নেতা-কর্মীদেরকে কমিটিতে দেখতে চায়।


বিবার্তা/সোহেল/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com