শিরোনাম
করোনা মোকাবেলায় একযোগে কাজ করার আহ্বান জাসদের
প্রকাশ : ০৮ এপ্রিল ২০২০, ২১:১৪
করোনা মোকাবেলায় একযোগে কাজ করার আহ্বান জাসদের
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি করোনা মোকাবেলায় গাফিলতি ও প্রস্তুতিহীনতা নিয়ে কাউকে দোষারোপ না করে ঘাটতি মোকাবেলায় সবাইকে একযোগে কাজ করার জন্য আহবান জানিয়েছেন।


বুধবার (৮ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ এই আহ্বান জানিয়েছেন।


বিবৃতিতে তারা বলেন, এখন দোষ খুঁজে বের করা, দায়িত্ব এড়ানো, বেশি কথা, অপ্রয়োজনীয় কথা বলার সময় না। একসাথে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলার সময়।


তারা বলেন, করোনার সামাজিক সংক্রমনের সংখ্যা, মাত্রা, পরিমাণ, পরিধি বাড়ছে। যতটুকু লকডাউন আর যতটুকু সম্ভব তা করতে হবে। লকডাউনের মধ্যে করোনা আক্রান্ত ক্লাস্টার এলাকাগুলিতে সামাজিক নজরদারির মাধ্যমে লক্ষ্মণ ও উপসর্গ দেখে সম্ভাব্য রোগীদের চিহ্নিত করে তাদের টেস্টের ব্যবস্থা করতে হবে, সংক্রমিত রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে। সামাজিক নজরদারির জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও টেলিফোন ব্যবহার করে যতটা সম্ভব সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পাড়ামহল্লা, এলাকাভিত্তিক প্রতিবেশী কমিটি ও সামাজিক কমিটি গড়ে তুলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ ও হটলাইন গুলির মাধ্যমে প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ ও সমন্বয় রাখতে হবে। আতংকিত না হয়ে করোনা আক্রান্ত রোগী ও তার পরিবার বা প্রতিবেশীদের সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে নিষ্ঠুরতা না দেখিয়ে যতটা সম্ভব তাদের প্রতি সহমর্মিতা প্রদর্শণ করতে হবে। সামাজিক নিষ্ঠুরতার ভয়ে অনেক ব্যক্তি করোনা লক্ষ্মণ ও উপসর্গ থাকার পরও তা লুকিয়ে রাখছেন। কেউই যেন রোগ না লুকাই এই অভয় সবাই সবাইকে দিতে হবে।


বিবৃতিতে আরো বলেন, সশস্ত্রবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বিএনসিসি, স্কাউট, আনসার, গ্রাম পুলিশ ও উৎসাহী যুব সমাজকে নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করতে হবে।


জাসদ নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারের হটলাইন নাম্বারগুলির সাড়াদানকে আরো কার্যকর ও প্রাণবন্ত করতে হবে। লকডাউন পরিস্থিতিতে জরুরি রোগী পরিবহনের জন্য সরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স ও ড্রাইভার এবং সকল প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে এলাকাভিত্তিক অ্যাম্বুলেন্স পুল গড়ে তুলতে হবে।


তারা বলেন, করোনা মোকাবেলায় যে জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে তার অকার্যকারিতা নিয়ে ইতিমধ্যেই কথা উঠেছে। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ, দক্ষ-অভিজ্ঞ-যোগ্য-সক্রিয় দায়িত্বশীলদের নিয়ে জাতীয় কমিটি পুনর্গঠন করতে হবে।


নেতৃবৃন্দ বলেন, সংক্রমণ ব্যধি বিশেষজ্ঞ, শ্বাসতন্ত্র রোগ বিশেষজ্ঞ, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, বক্ষব্যধি বিশেষজ্ঞ, আইসিইউ ও সংকটযুক্ত রোগী ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি চিকিৎসা বোর্ড ও মনিটরিং টিম গঠন করে তাদের নেতৃত্বে একটি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা এবং তাদের নেতৃত্বে অনলাইনে সারা দেশের ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের জরুরি প্রশিক্ষণ প্রদান; প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনে সংসদ টিভি বা বিটিভি ওয়ার্ল্ড বা প্রাইভেট টেলিভিশন চ্যানেল ব্যবহার করা।


তারা বলেন, করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রথম কাতারের যোদ্ধা ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের মনোবল ও মানসিকভাবে উজ্জীবিত রাখা, তাদের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষিত রাখার জন্য যা যা করা দরকার তার সব ব্যবস্থা করতে হবে। করোনার সবচাইতে বেশি ঝুঁকির মধ্যে তাদেরই থাকতে হয় এবং তারাই সরাসরি করোনা রোগীর সংস্পর্শে আসেন। ফলে তাদের আক্রান্ত হওয়া ও তাদের মাধ্যমে করোনা সংক্রমণ বিস্তারের সম্ভাবনা সবচাইতে বেশি। তাই হাসপাতালে কর্তব্য পালনকারী ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী-পরিচ্ছনতা কর্মী-অ্যাম্বুলেন্স চালকদের হাসপাতালের কাছে থাকার জন্য হোটেলগুলো সরকারের নিয়ন্ত্রণে নিতে হবে। ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী-পরিচ্ছন্নতাকর্মী-অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভাররা বিরতিহীন কাজ করে অসুস্থ হয়ে না পড়েন তার জন্য তাদের গ্রুপে ভাগ করে ডিউটি রোটেশন করতে হবে। হাসপাতালগুলোতে দায়িত্বপালনকারীদের নিয়মিত খাবার সরবারহ করতে হবে। স্বস্থ্যসেবাখাতের লোকবল সংকট মোকাবেলায় ইন্টার্নি ডাক্তার, মেডিকেল ছাত্রছাত্রী, নার্সিং ছাত্রছাত্রী যুক্ত করা এবং তাদের জন্য উপর্যুক্ত আর্থিক তালিকা ঘোষণা করা দরকার। কর্মহীন রেজিস্টার্ড ডাক্তার, নার্স, হেলথ টেকনোলজিস্টদের এডহক ভিত্তিতে জরুরি নিয়োগ দেয়া দরকার। প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের জন্য ঝুঁকিবীমার পাশাপাশি তাদের প্রণোদনা ও ঝুঁকিভাতা প্রদান করতে হবে।


জসদ নেতারা বলেন, স্বাস্থ্যখাতের জরুরি চাহিদা মিটাতে অবিলম্বে বড় ধরণের থোক বরাদ্দ দিতে হবে এবং দ্রুত বৈদেশিক সাহায্য সংগ্রহ করতে হবে। পিপিই, মাস্কসহ ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম, কিটস, মেশিনপত্র, যন্ত্রপাতি, আইসিইউ বেড, ভেন্টিলেটর সংগ্রহ করতে হবে। ল্যাবের সংখ্যা বাড়াতে হবে। সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবগুলোতে টেস্ট চালু করতে হবে।


তারা বলেন, করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে কারাগার, বস্তি এলাকা, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলি খুবই নাজুক ও ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায়। এসব এলাকার জন্য বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।


জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, সমন্বিতভাবে একযোগে কাজ করলে ও জনগণ সচেতন থাকলে মানুষের জীবন রক্ষা করা সম্ভব হবে।


বিবার্তা/জাহিদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com