করোনাভাইরাস আতঙ্কে বিপর্যস্ত বিশ্বের ১৯০টির বেশি দেশ। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছে ৮ মার্চ। তাই এই সংক্রমণ রোধে কোথাও কোথাও লকডাউন আবার কোথাও চলাফেরায় বিধিনিষেধ আরোপ করেছে প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) থেকে সকল সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর রাজধানী ঢাকা সহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল কার্যত লকডাউন হয়ে গেছে।

খেটে খাওয়া মানুষের জন্য মেয়র আতিকুল ইসলামের উদ্যোগ

মানুষের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ঘরে বাইরে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে। ফলে কার্যত পুরো দেশ এখন লকডাউনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। আর তাতেই বিপদে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ-গুলো, যাদের রাস্তায় বের না হলে পেটে খাবার জোটে না, যাদের রিকসার চাকা না ঘুরলে ভাগ্যের চাকা ঘুরে না। মোটকথা যারা দিনে কাজ না করলে পরিবারের সদস্যদের ‍মুখে খাবার জোটে না।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে রাজধানী ঢাকায় বিপুল সংখ্যক দরিদ্র মানুষ কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি। তারা ঘর থেকে বেরও হতে পারছেন না, টাকাও রোজগার হচ্ছে না। আবার ঘরে থেকেও খাবার সংকটে। তাদের এখন ঘরে থাকলেও বিপদ বাইরে গেলে মহাবিপদ।

বিডি ক্লিনের কর্মীরা ডাক প্যাকেট করছেন

তাই করোনা সংকটকালে মানবতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। নিজ উদ্যোগে প্রায় ২০ হাজার পরিবারের কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য তুলে দিচ্ছেন তিনি।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার বস্তিবাসীদের কাছে এই সামগ্রী তুলে দিতে মেয়রকে সহযোগিতা করছে বিডি ক্লিন নামক একটি স্বেচ্ছাসেবক সংস্থা।

মেয়রের বনানী অফিসে পণ্য সামগ্রী দিয়ে প্যাকেট করা হচ্ছে। প্রতি প্যাকেটে থাকছে ৫ কেজি করে চাল, ১ কেজি ডাল, ১টি সাবান, ১ লিটার তেল, ১ কেজি আলু ও ৩টি মাস্ক। মেয়র নিজের ফ্যাক্টরি থেকে এসব মাস্ক তৈরি করিয়ে এনেছেন।

আলু প্যাকেট করছেন বিডি ক্লিনের কর্মীরা

মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি প্রান্তিক মানুষের কথা চিন্তা করে এই উদ্যোগ নিয়েছি। আমি শুরু করেছি, আমি আহ্বান করবো নগরের অনেক বিত্তবান আছেন, যারা চাইলে নিজেরাও দিতে পারেন, আবার কেউ যদি মনে করেন এই প্ল্যাটফর্মে এসে দিয়ে যাবেন। আমরা তাদের সেই সহযোগিতা প্রান্তিক মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেবো।

তিনি বলেন, এই সংকট তো এক দিনের না, আমরা জানি না কত দিন থাকবে। তাই সবাই এগিয়ে এলে আমাদের রিকশাচালক, হকার, ভ্যানচালক, দিনমজুর ভাই বোনেরা বেঁচে যাবেন।

পাঁচ কেজি কর চাল প্যাকেট করা হচ্ছে

আতিকুল ইসলামের বনানীর ‘ডি’ ব্লকের ১৩ নম্বর সড়কের ৯৭ নম্বর বাড়ির অফিসে বিডি ক্লিনের কর্মীদের সহায়তায় প্যাকেট করার কাজ চলছে। বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ৬ হাজার প্যাকেট প্রস্তুত করা হয়। লক্ষ্যমাত্রা ২০ হাজার পরিবারের নিকট এই সামগ্রী তুলে দেয়া। যে কেউ চাইলে এই অফিসে তার সাহায্য সামগ্রী পৌঁছে দিতে পারবেন।

বিবার্তা/জাহিদ