
কয়েকদিন আগেও যে সৈকতে পর্যটকদের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে থাকতো আজ তা নিঃস্তব্ধতা বিরাজমান। কোথাও কোনো পর্যটকের আনাগোনা নেই। স্থানীয় কিছু লোকজন সৈকতের অবস্থা দেখার জন্য বেরিয়েছে।
বিগত কয়েকদিন ধরে সারা দেশে কোটা নিয়ে চলমান আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়ে সকল কর্মকাণ্ড। ফলে, পর্যটননির্ভর ব্যবসায়ীদের মাঝে বিরাজ করছে হতাশা। পর্যটক না থাকায় অলস সময় পার করছে হোটেল কর্মচারীরা। অধিকাংশ হোটেল কর্তৃপক্ষ ছুটি দিয়েছে কর্মচারীদের।
সি গোল্ড রিসোর্টের কর্মচারী মো. সিজান বলেন, অবসর সময় কাটাচ্ছি। কারফিউর কারণে কোনো পর্যটকের আনাগোনা নেই। ফলে অলস সময় কাটাচ্ছি।
হোটেল গোল্ডেন ইনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএম জহির জানান, পর্যটন ক্ষেত্রে সবার আগে ধাক্কা লাগে। এ ধাক্কা কাটতে সময় লাগে অনেকদিন। রাজনৈতিকসহ নানা সমস্যা তৈরি হলেই আমাদের হোটেল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সংকটের মুখে আমরা পড়ি। খরচ বাড়ে আয় আসে না। বর্তমান সংকট কাটিয়ে কবে উঠতে সক্ষম হবো তা জানা নেই।
হোটেল-মোটেল মালিক এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মোতালেব শরীফ বলেন, দেশের মধ্যে কোনো অস্থিরতা থাকলে মানুষ ঘর থেকে বের হয় না। গত কয়েকদিন ধরে চলমান কোটা আন্দোলনের অস্থিরতায় পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এ সংকট দূর না হলে আমরা পথে বসে যাবো। আমদের সংকট উত্তরণে সময় লেগে যায় অনেক। আয় না হলেও আমাদের কর্মচারীদের বেতন, বিদ্যুৎ বিলসহ নানা খরচ কিন্তু কমে না।
ট্যুর অপারটের্স এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) প্রসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের মধ্যে যারা আটকা পড়েছিল তাদেরকে হোটেল-মোটেল, রেস্তরাঁ এবং ট্যুর অপারেটররা সহযোগিতা করেছে। আজকের আগেও বিভিন্ন স্থানের অনেক পর্যটকরা গন্তব্যে পৌঁছালেও ঢাকা থেকে আগতরা প্রশাসনের নিরাপত্তায় আজ চলে গছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)কৌশিক আহম্মেদ জানান, রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরা আটকা পড়ে। তাদেরকে ৪টি গাড়িতে জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় এবং সেনাবাহিনীর সহায়তায় ঢাকা পর্যন্ত পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
অপরদিকে আটকা পড়া দেড় শতাধিক পর্যটক কুয়াকাটা ছেড়েছেন। তারা কুয়াকাটা ছেড়েছেন প্রশাসনের নিরাপত্তায়। গত মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় কুয়াকাটা থেকে ৪টি পরিবহনে তাদেরকে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পাহারায় ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করেন কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন। এর আগে গত কয়েকদিনের বিভিন্ন সময়ে আসা এসব পর্যটক শুক্রবার (১৯শে জুলাই) থেকে আটকা পড়েছিলেন।
চলমান কোটা আন্দোলনে দেশব্যাপী অস্থিরতায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে পবিত্র আশুরা ও সাপ্তাহিক ছুটিকে কেন্দ্র করে কুয়াকাটায় বেড়াতে এসে আটকে পড়ে অসংখ্য পর্যটক।
শুক্রবারের পরে কাছাকাছি বা রাজধানীর বাহিরে গন্তব্য এমন পর্যটকরা বিভিন্ন মাধ্যমে কুয়াকাটা ছেড়েছেন। তবে রাজধানীগামী পর্যটকরা নিরাপত্তার কারণে কুয়াকাটায় অবস্থান করেন। আটকা পড়া পর্যটকদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে উদ্যোগ নেয় কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই মাইকিং করে পুরো এলাকায় গাড়ি ছাড়ার কথা জানিয়ে দেয়। পরে আটকা পড়া পর্যটকরা পর্যটন হলিডে হোমসের সামনে এসে জড়ো হলে সেখান থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় পর্যটকবাহী বাসগুলো।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]