সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন বলেছেন, শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতি সফলতার সাথে এদেশ থেকে জঙ্গিবাদের অস্তিত্ব নিমূর্ল করেছে। যে চেতনার উপর ভর করে এদেশে জঙ্গিবাদ দানা বাঁধতে শুরু করেছিল সেই চেতনাকে রুখতে এবং এর ভয়ঙ্কর পরিণতি সম্পর্কে সামাজিক জাগরণ সৃষ্টি করতে হবে। কেননা জঙ্গিবাদ উন্নয়নের ধারাবহিকতাকে বাধাগ্রস্ত করে। কোনোভাবেই উন্নয়নের ধারাবাহিকতাকে বাধাগ্রস্ত করতে দেওয়া যাবে না।
বুধবার রাজধানীর সেন্ট্রাল ল’ কলেজে সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের জঙ্গিবাদবিরোধী সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
সাহারা খাতুন বলেন, “বঙ্গবন্ধু কাছে গেলে মনে হতো- আমাকেই বোধহয় সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন। প্রত্যেকেরই তাই। বঙ্গবন্ধু আমাদের দেশ দিয়ে গেছেন। কিন্তু তার লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে যেতে পারেননি। ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট স্বপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে। তখন মামলাতো দূরের কথা একটা জিডিও করতে পারিনি আমরা। হত্যার পর খুনি মোশতাক ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ নামে একটি আইন পাস করেন, যেন বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করা না যায়। ’৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এই আইন বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারকাজ শুরু করেন। সোনার বাংলার স্বপ্ন আজ বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।”
জঙ্গিবাদ বিষয়ে প্রবীণ এই নেতা বলেন, জঙ্গিবাদ বর্তমান বিশ্বের জটিল এক বাস্তবতা। তাই গবেষণা ও বিশ্লেষণে এর গুরুত্ব বাড়ছে। ধর্মীয় উন্মাদনা এবং উগ্রতা জঙ্গিবাদ বা জঙ্গি সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখছে। ভ্রান্ত আর্দশের উপর ভর করে তরুণরাও জঙ্গি হয়ে ওঠে। আর এই আদর্শ ছড়িয়ে দিচ্ছে কতিপয় গোষ্ঠী, ধর্মের নামে তরুণদের মিথ্যা ধর্মীয় ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করে নিচ্ছে।
জঙ্গিবাদবিরোধী কার্যক্রমের জন্য সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ. আরাফাতকে ধন্যবাদ জানান অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন।
‘জাগো তারুণ্য রুখো জঙ্গিবাদ’ শিরোনামে আয়োজিত সেমিনারে সূচনা বক্তব্য দেন সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর ও এই কার্যক্রমের সমন্বয়ক কানতারা খান। তিনি বলেন, 'ধর্ম প্রত্যেকের ব্যক্তিগত বিশ্বাস এবং অধিকার। সেই বিশ্বাস ও অনুভূতির জায়গাটিতে তারা আঘাত করছে ক্ষমতা ও বাণিজ্যিক স্বার্থের লোভে। যার সঙ্গে ধর্মের আদৌ কোনো সম্পর্ক নেই।'
আরও বক্তব্য দেন সেন্ট্রাল ল’ কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট নাসরিন সিদ্দিকা লিনা। তিনি বলেন, ’৭৫ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের ইতিহাসকে যেভাবে বিকৃত করা হয়েছিল তা মনে করলে এখনো আঁৎকে উঠি। ভাবতাম বাবা মিথ্যা বলছে, না বই মিথ্যা লিখেছে? পাকিস্তানি নাগরিক গোলাম আযমদের, রাজাকারদের মন্ত্রী বানানো হয়েছে। জামায়াতে ইসলামি পাকিস্তান থেকে জামায়াতে ইসলামি বাংলাদেশ করা হয়েছে। এসবই করেছে জিয়াউর রহমান। তারাইতো এদেশে জঙ্গিবাদের বীজ বুনে গেছে। জামায়াত-শিবির মানেই জঙ্গিবাদ। তারাইতো এদেশের স্বাধীনতা চায়নি।
অনুষ্ঠানে সেন্ট্রাল ল’ কলেজের প্রিন্সিপাল মো. জাকির হোসেনও বক্তব্য দেন। সুচিন্তা’র গবেষণা সেলের পক্ষ থেকে আশরাফুল আলম শিক্ষার্থীদের প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মে জঙ্গিবাদ সমর্থন-অসমর্থন বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আজ সারাবেলা’র সম্পাদক জববার হোসেন।
বিবার্তা/হাসান/কামরুল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]