শিরোনাম
মিয়ানমারকে আরো দায়িত্ব পালন করতে হবে: বান কি মুন
প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০১৯, ১৩:০৯
মিয়ানমারকে আরো দায়িত্ব পালন করতে হবে: বান কি মুন
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকটের অবসান ঘটিয়ে শরণার্থীদের নিজ আবাসে বসবাস নিশ্চিতে মিয়ানমার সরকারকে আরো দায়িত্ব পালন করতে হবে।


তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকারের অনেক বেশি কিছু করার আছে, যার ফলে রোহিঙ্গারা ভয়হীনভাবে তাদের মাতৃভূমিতে ফিরতে পারে।


কক্সবাজারের উখিয়ায় বুধবার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যান বান কি মুন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে হেলিকপ্টারে তিনি ক্যাম্প-২০-এর মাঝে করা হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন। সেখান থেকে গাড়িতে প্রায় ২০ মিনিটের পথ পাড়ি দিয়ে যান ১৭ নম্বর ক্যাম্পের সমন্বয় অফিসে।


এ সময় তিনি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের অভিযোগ ও দাবি-দাওয়া শোনেন। এক ঘণ্টারও বেশি সময় কুতুপালংয়ে থেকে হেলিকপ্টারে আবার ঢাকায় ফেরেন তিনি।


আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলন ‘গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপ্টেশন’-এ যোগ দিতে এসে তিনি উখিয়া-টেকনাফ পরিদর্শন করেন। তার সঙ্গে ছিলেন মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের প্রেসিডেন্ট হিলডা সি হেইন, বিশ্বব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ক্রিস্টালিনা জর্জিওভা ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।


এর আগে ক্যাম্পের ১৭ নম্বর ক্যাম্পে পৌঁছে সেখানে কয়েকটি গাছের চারা রোপণ করেন তারা।


এক প্রশ্নের জবাবে বান কি মুন বলেন, বাংলাদেশ প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। যারা বাস্তুচ্যুত হয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এটা বিরাট ক্ষোভ ও উদ্বেগের বিষয়, যা আজ আমি নিজে দেখলাম। সুতরাং আমি আশা করি, এ সমস্যার একটি প্রীতিকর সমাধান হবে। তারা তাদের মাতৃভূমিতে নিরাপদে ও সুষ্ঠুভাবে ফিরতে পারবে।


তিনি বলেন, আমি যখন জাতিসংঘে কাজ করেছি, তখন আমি লাখ লাখ শরণার্থীকে সাহায্য করেছি। এর মধ্যে সিরিয়ার শরণার্থীরাও ছিল। কিন্তু এখানে যা দেখলাম এখানে, এটা সত্যিই হৃদয়বিদারক।


২০ নম্বর ক্যাম্পের হেডমাঝি সিরাজুল মোস্তফা জানান, ক্যাম্প পরিদর্শনকালে বান কি মুন চলমান বৈরী আবহাওয়ায় রোহিঙ্গাদের থাকা-খাওয়া, চিকিৎসা, আবাসন বিষয়ে নানা প্রশ্ন করেন।


এ সময় রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার নিয়ে নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে সহযোগিতার দাবি জানানো হয়। ২০১৭ সালে ঘটে যাওয়া বর্বরতা আর না হলে রোহিঙ্গারা ফিরে যেতে প্রস্তুত বলে জানানো হয় মুনকে। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব রোহিঙ্গাদের দাবির প্রতি সহমত পোষণ করে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন।


রোহিঙ্গাদের নিয়ে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো বিশেষ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (এফএও) এবং শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) ভূমিকার প্রশংসা করেন তিনি।


সেনা নির্যাতনের মুখে রাখাইন থেকে বাংলাদেশে আশ্রিত ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে ফেরত নেয়ার আশ্বাস মিয়ানমার দিলেও তাতে কোনো অগ্রগতি নেই। নিজ ভূমি রাখাইনে নিরাপত্তার সঙ্গে বসবাসের নিশ্চয়তা চায় রোহিঙ্গারা। কিন্তু মিয়ানমার সেই পরিবেশ সৃষ্টি করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।


রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়াটা বাংলাদেশের জন্য বিরাট বোঝা উল্লেখ করে মুন বলেন, দীর্ঘ সময়ের জন্য বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়া বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব নয়।


জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শিতা ও এক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে বিনিয়োগ করেছে, তার প্রশংসা করেন গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশনের চেয়ারম্যান মুন।


মঙ্গলবার রাতে ঢাকায় পৌঁছে মুন বুধবার সকালে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ‘ঢাকা মিটিং অব দ্য গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশন’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। ওই অনুষ্ঠানের পর যান কক্সবাজারে।


জাতিসংঘ মহাসচিব থাকার সময় ২০০৮ সালে প্রথম বাংলাদেশ সফরে আসেন বান কি-মুন। ২০১১ সালে দ্বিতীয়বার বাংলাদেশ সফর করেন তিনি।


বিবার্তা/রবি/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com