শিরোনাম
অর্থনৈতিক অঞ্চলে ইউএইর বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশ : ১৯ জুন ২০১৯, ০৯:১৭
অর্থনৈতিক অঞ্চলে ইউএইর বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) খাদ্য নিরাপত্তা প্রতিমন্ত্রী মরিয়ম আল মেইহরি সাক্ষাৎ। ছবি: পিআইডি
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) প্রতি পারস্পরিক স্বার্থে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।


ইউএইর খাদ্য নিরাপত্তা প্রতিমন্ত্রী মরিয়ম আল মেইহরি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার জাতীয় সংসদ ভবন কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এসব অঞ্চলে ইউএইর বিনিয়োগকে স্বাগত জানাবে।


এদিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকের শুরুতেই বিশ্বকাপ ক্রিকেটে সোমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে জয়লাভ করায় প্রধানমন্ত্রী খেলোয়াড়দের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।


ইউএইর খাদ্য নিরাপত্তা প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্রুত শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য আমরা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছি। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে অনেক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।


তিনি আরও বলেন, উদ্যোক্তারা এসব অঞ্চলে নিজস্ব পছন্দ অনুযায়ী শিল্প স্থাপন করতে পারবেন।


অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা জানান। তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী ইউএইর উদ্যোক্তাদের প্রতি এসব অঞ্চলে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপনেরও আহ্বান জানান।


প্রেস সচিব বলেন, ইউএইর প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশের কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়নের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন।


তিনি বাংলাদেশ থেকে উদ্বৃত্ত খাদ্য আমদানি করতে তার দেশের গভীর আগ্রহের কথা জানান। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সংক্ষেপে শস্যের বহুমুখীকরণের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশের সফলতার কাহিনী বর্ণনা করেন। তিনি বছরে একবার থেকে তিনবার ধান চাষ ও কৃষি গবেষণায় বিনিয়োগ বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশ খাদ্যে উদ্বৃত্তের দেশে উন্নীত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের বিজ্ঞানীরা লবণাক্ততা, বন্যা ও খরাসহিষ্ণু জাতের ধানসহ বিভিন্ন জাতের ফসলের উদ্ভাবন করেছেন।


এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান ও সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদিন উপস্থিত ছিলেন।


একনেকে কেমিক্যাল গুদাম নির্মাণসহ ১১ প্রকল্প অনুমোদন : যুগান্তর রিপোর্টার জানান, পুরান ঢাকার বিপজ্জনক রাসায়নিকদ্রব্য অস্থায়ী ভিত্তিতে রাখতে টঙ্গীতে তৈরি হচ্ছে ৫৪টি রাসায়নিক গুদাম। এ জন্য একটি প্রকল্পসহ ১১ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।


এগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৮ হাজার ৫২ কোটি ৭২ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৩ হাজার ৩৮৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ৫৫০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৪ হাজার ১১৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান ও পরিকল্পনা সচিব নূরুল আমিন।


এ সময় সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব আবুল মনসুর মো. ফয়জুল্লাহসহ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সভার শুরুতেই বিশ্বকাপ ক্রিকেটে সোমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে জয়লাভ করায় প্রধানমন্ত্রী খেলোয়াড়দের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি খেলোয়াড়সহ দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। খেলার সময় তিনি বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন।


এ ছাড়া বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডগ স্কোয়াড রাখার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে হাইওয়ে সড়ক নির্মাণের সময় চালকদের বিশ্রামাগার নির্মাণ করতে পুনরায় তাগিদ দিয়েছেন তিনি।


এটি নিশ্চিত করতে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া শুধু পৌরসভা এলাকায় নয়, ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত পানি সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।


এ জন্য কত টাকা প্রয়োজন সেটির হিসাব-নিকাশ করতে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যেসব জেলা দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে এসেছে তার একটি ডাটাবেজ করতে হবে। দেশের কসাইখানাগুলোকে আধুনিক করারও তাগিদ দেন তিনি। একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে- নেত্রকোনা-কেন্দুয়া-আঠারবাড়ী-ঈশ্বরগঞ্জ জেলা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, ব্যয় ধরা হয়েছে ৭১০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।


দেশের ৩০টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্প, ব্যয় ১ হাজার ৭৫১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন, ব্যয় ৫৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন, ব্যয় ৩৫২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। ইনভেস্টমেন্ট কম্পোনেন্ট ফর ভার্নারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম, ব্যয় ৩১৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা। কুমিল্লা-চাঁদপুর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সেচ এলাকা উন্নয়ন, ব্যয় ৩২৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।


পোলট্রি গবেষণা ও উন্নয়ন জোরদারকরণ, ব্যয় ১২৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। প্রাণিসম্পদ উৎপাদন উপকরণ ও প্রাণিজাত খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ গবেষণাগার স্থাপন, ব্যয় ১০৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। খুলনা ৩৩০ মেগাওয়াট ডুয়েল ফুয়েল কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, ব্যয় ৩ হাজার ৯১৯ কোটি ২৬ লাখ টাকা এবং বিসিক শিল্পপার্ক, টাঙ্গাইল প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২৯৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।


সূত্র জানায়, পুরান ঢাকার শ্যামপুরের পর এবার বিপজ্জনক রাসায়নিকের গুদাম নির্মাণ করা হচ্ছে টঙ্গীতে। নিমতলী ও চুড়িহাট্টার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করেছে সরকার। এর অংশ হিসেবে সম্প্রতি স্থায়ী কেমিক্যাল পল্লী স্থাপন প্রক্রিয়া জোরদার করে বড় পরিসরের একটি প্রকল্পসহ অস্থায়ী ভিত্তিতে ৫৪টি কেমিক্যাল গুদাম নির্মাণ সংক্রান্ত দুটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।


সেই ধারাবাহিকতায় গাজীপুরের টঙ্গীর কাঁঠালদিয়ায় বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল কর্পোরেশনের (বিএসইসি) জায়গায় অস্থায়ী ভিত্তিতে এই গুদাম নির্মাণ করা হবে। এ জন্য ‘রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ’ নামের প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৯১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। সূত্র: বাসস


বিবার্তা/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com