শিরোনাম
কৃষিখাতে ২৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দাবি
প্রকাশ : ২৯ মে ২০১৯, ১০:০৩
কৃষিখাতে ২৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দাবি
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বর্তমান দামে যদি দেশের কৃষক তাদের ৬৫ শতাংশ ধান বিক্রি করে দেয় তাহলে কৃষকের ১৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা লোকসান হবে। এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আগামী বাজেটে কৃষিখাতে ২৫ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকির দাবি জানায় খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ।


এছাড়া সরকারিভাবে শস্য গুদাম ও মজুদাগার ২১ লাখ টন থেকে ৬০ লাখ টনে উন্নীত করতে হবে। পাশাপাশি কৃষক পর্যায়ে কমিউনিটিভিত্তিক শস্যভান্ডার গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে।


মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হো‌সেন মা‌নিক মিয়া হ‌লে অ্যাকশন এইডের সহায়তায় খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ আয়োজিত ধানসহ কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য চ্যালেঞ্জ ও করণীয় শীর্ষক এক জাতীয় সংলাপে বক্তারা এসব দা‌বি ক‌রেন।


সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তার সিনিয়র রিপোর্টার সাহানোয়ার সাইদ শাহীন।


তিনি বলেন, এখনো কিছুটা ক্ষতি কাঠিয়ে ওঠা সম্ভব। এজন্য এখনই ৫০ লাখ টন ধান কেনার ঘোষণা ও তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। একইসঙ্গে শস্যের উৎপাদন বৃদ্ধি ও আমদানি বন্ধ করতে হবে।


তিনি আরো বলেন, যেসব পণ্য দেশে উৎপাদন হচ্ছে সেগুলো আমদানির বিষয়ে কৃষকবান্ধব যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মিলার ও ব্যবসায়ীদের ফাঁদ থেকে কৃষককে বাঁচাতে উদ্যোগ নিতে হবে। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে কৃষি বিষয়ক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জোর দিতে হবে।


ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ তার বক্তব্যে বলেন, কৃষক হারলে দেশ হারবে। এজন্য কৃষক, কৃষি ও কৃষি শ্রমিক বাদ দিয়ে কোনো কিছুই করা যাবে না। কৃষককে সংগঠিত করার পাশাপাশি স্থায়ী মূল্য কমিশন গঠন করতে হবে। পাশাপাশি মজুদ ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করতে এখনই কাজ শুরু করতে হবে। পাশাপাশি নীতি গ্রহণ ও মাঠপর্যায়ে কার্যক্রমের মধ্যে কৃষি, খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আরো সমন্বয় প্রয়োজন।


ভর্তুকির যৌক্তিকতা তুলে ধরে খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার ইব্রাহীম খালেদ বলেন, কৃষককে ভর্তুকি দিলে সরকারকে সেটা প্রত্যক্ষভাবে ফিরিয়ে দেয়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ৬ হাজার কোটি টাকার মাধ্যমে ভর্তুকি চালু করেছিলেন বলেই পরের দুই অর্থ বছরের মধ্যে দানাদার খাদ্য শস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছিলো।


যান্ত্রিকীকরণে জোর দিতে হবে জানিয়ে সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুক বলেন, যান্ত্রিকীকরণ বিশেষ করে শস্য বপন, রোপণ, কর্তন, মাড়াইয়ে জোর দিতে হবে। এছাড়া পণ্য পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা আমদানিতে ওস্তাদ কিন্তু খাদ্যশস্য উদ্বৃত্ত হলে কি করা হবে সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। চলতি মাসে যারা কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনেছে শুধু সেসব মিলারদের নিকট থেকে চাল কেনা হবে এমন ঘোষণা দিলে কৃষক উপকৃত হবে।


বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক গবেষণা পরিচালক ড. আসাদুজ্জামান বলেন, কৃষক তাদের ধানের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না। কৃষকদের কথা বলার জন্য কৃষক থেকে রাজনীতিতে আসা জরুরি হয়ে পড়েছে। নিরাপদ খাদ্য, গবেষণা ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে আরো গবেষণা ও পদক্ষেপ নিতে হবে।


সেমিনারের সঞ্চালক মহসিন আলী বলেন, ক্ষুদ্র ও বর্গাচাষীদের যন্ত্রের সুবিধা দিতে ভাড়াভিত্তিক যন্ত্রের ব্যবস্থা রাখতে হবে। উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য কৃষক পর্যায়ে কৃষি উপকরণ বিশেষ করে সেচ, সার ও কীটনাশকের যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে সম্প্রসারণ কর্মীদের আরো দায়িত্বশীল হতে হবে। কৃষিনীতি বাস্তবায়নে সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা এবং সময় উপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।


এ্যাকশন এইডের পরিচালক আসগর আলী সাবরি বলেন, কৃষকের এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে রাজনৈতিক সদিচ্ছার বড়ই অভাব রয়েছে।


খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ ও পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমেদের সভাপতিত্বে, খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলীর সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সায়েমা হক বিদিশা, কৃষক প্রতিনিধি ও বেসরকারি প্রতিনিধিরা।


বিবার্তা/রাসেল/তাওহীদ/জাকিয়া


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com