শিরোনাম
ওয়াহেদ ম্যানশনের বেজমেন্টে দাহ্য রাসায়নিকের বিপুল মজুদ
প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৯:০৪
ওয়াহেদ ম্যানশনের বেজমেন্টে দাহ্য রাসায়নিকের বিপুল মজুদ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

রাজধানীর চকবাজারের হাজী ওয়াহেদ ম্যানশনের বেজমেন্টে বেআইনিভাবে মজুত করে রাখা শত শত দাহ্য রাসায়নিকের কনটেইনার ও প্যাকেট খুঁজে পেয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। বুধবার রাতে এই ভবন থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়।


আগুনে ওই ভবনের নিচ তলা থেকে সাড়ে চার তলা পর্যন্ত পুরোটা পুড়ে গেলেও বেজমেন্টের গোডাউনে রাখা কেমিক্যালগুলো অক্ষত রয়েছে। ওয়াহেদ ম্যানশনের বিপরীত পাশে রাজ্জাক ম্যানশনের নিচ তলায় হায়দার ফার্মেসির পেছনের একটি গোডাউনেও কেমিক্যালের মজুত পাওয়া গেছে।


ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, এই দুই গোডাউন পর্যন্ত আগুন পৌঁছালে দুটি ভবনই উড়ে যেত। এতে ক্ষয়ক্ষতি হতে পারতো আরো অনেক বেশি।


ফায়ার সার্ভিসের লালবাগ স্টেশনের অফিসার রতন কুমার দেবনাথ জানান, পোড়া ওই ভবনে তল্লাশির অংশ হিসেবে শুক্রবার সকালে ৯টার দিকে তিনি বেইজমেন্টের দরজা খোলেন এবং সারি সারি ড্রাম ও বস্তার স্তূপ দেখতে পান।


তিনি বলেন, ভেতরে ঢুকে বিশাল অ্যামাউন্টের এই রাসায়নিক দ্রব্য আর প্লাস্টিক রোলের এই মজুদ পাই। এখানে আছে বিভিন্ন ধরনের পিগমেন্ট, এগুলো জাপান, ভারত, চীন ও অস্ট্রিয়া থেকে এগুলো আমদানি করা হয়েছে। কাপড়ের রঙ হিসেবে ব্যবহৃত এসব উপাদান খুবই দাহ্য।


তিনি বলেন, কোনোভাবে যদি আগুন ভবনটির নিচতলায় গিয়ে রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে আসত, তাহলে তা আশপাশের অন্যান্য ভবনেও ছড়িয়ে পড়ত এবং যা সহজে থামানো যেত না।


ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে বাংলাদেশ বিস্ফোরক পরিদফতরের প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক শামসুল আলম জানান, নিমতলী অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে ওই এলাকায় কেমিক্যাল ব্যবসার জন্য একটি লাইসেন্সও দেয়া হয়নি। ওই এলাকায় বিস্ফোরক পরিদফতরের লাইসেন্সধারী কোনো গুদামও নেই। যে ভবনটিতে আগুন লেগেছিল সেটিতেও রাসায়নিক দ্রব্য ও দাহ্য পদার্থ রাখার অনুমতি ছিল না।


স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রায় ২০ বছর আগে হাজী ওয়াহেদ ম্যানশন নামের ভবনটি তৈরি করা হয়। ভবনের মূল মালিক হাজী ওয়াহেদের মৃত্যুর পর তার দুই ছেলে হাসান ও সোহেল মালিকানা পায়। তবে সোহেল প্রায় সময়ই চট্টগ্রামে থাকতেন এবং হাসান পরিবার নিয়ে ওই ভবনেই থাকতেন। এই দুই ভাই এবং তাদের পরিবার আগুনের হাত থেকে রেহাই পেলেও তারা বর্তমানে কোথায় আছেন তা জানা যায়নি।


ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে কেমিক্যালের এই গোডাউনটি সোহেলের ছিল বলে স্থানীয়রা জানান।তবে গোডাউনটির প্রকৃত মালিক কে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।


বুধবার রাতে চকবাজারের নন্দকুমার দত্ত রোডের শেষ মাথায় চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানশনে ভয়বহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের প্রায় ১৫ ঘণ্টা সময় লাগে। এতে ৬৭ জন পুড়ে মারা গেছে।


এর মধ্যে ওয়াহেদ মঞ্জিলের নিচতলাতেই একসঙ্গে ২৪টি মৃতদেহ পাওয়া যায়, যার মধ্যে দুই বছরের শিশু ও নারীও ছিল। সিঁড়ি ঘরের ফ্লোরে দলা পাকানো অবস্থায় ছিল পোড়া লাশগুলো।


চারতলা এই ভবনের নিচতলায় ডজনখানেক দোকান, আর দোতলায় পারফিউম ও প্লাস্টিক সামগ্রীর গোডাউন ছিল। উপরের দুটো তলায় ছিল বাসা বাড়ি।


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com