
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কোনো কাজে সম্পৃক্ত হবে না বলে জানিয়েছে সেনা সদর। করিডর একটি ‘স্পর্শকাতর’ বিষয় বলে উল্লেখ করেছে সেনা সদর।
সোমবার (২৬ মে) দুপুরে সেনানিবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশন্স ডিরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলার অবস্থা আগের তুলনায় স্থিতিশীল অবস্থায় আছে বা কিছুটা ভালো অবস্থায় আছে। আমরা দিনরাত নিরলসভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন শুধু সেনাবাহিনীর একার দায়িত্ব নয়, এখানে অন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও দায়িত্ব রয়েছে। সকলে মিলে সমন্বিতভাবে কাজ করলে আইনশৃঙ্খলার অবস্থা অচিরেই আরও উন্নত হবে বলে আমরা আশা করছি।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তে করিডর নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, এখানে নিরাপত্তার বিষয় জড়িত। এই করিডর নিয়ে সেনাবাহিনী কী ভাবছে– জানতে চাইলে মিলিটারি অপারেশন্স ডিরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ বলেন, করিডর একটি স্পর্শকাতর বিষয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত কোনো কাজে সম্পৃক্ত হবে না।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে আরাকান আর্মি বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছে, এ বিষয়টি সেনাবাহিনী কীভাবে দেখছে এবং কী পদক্ষেপ নিচ্ছে– জানতে চাইলে কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আরাকান আর্মির সঙ্গে আমাদের সরাসরি কোনো যোগাযোগ নেই। গণমাধ্যমে আসা এসব খবরের সঠিকতা ও বস্তুনিষ্ঠতা যথেষ্ট বিবেচনার দাবি রাখে।
অফিসার্স অ্যাড্রেসে সেনাবাহিনী প্রধান নির্বাচন, করিডর, বন্দর ও স্টারলিংক নিয়ে কথা বলেন জানা গেছে বিভিন্ন মাধ্যমে। এই পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনের বিষয়ে সেনাবাহিনীর কোনো অবস্থান আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী প্রধান যেকোনো সময় বা সময় সময় অফিসার, জেসিও ও সৈনিকদের সঙ্গে কথা বলে থাকেন, দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন। এটি তারই একটি ধারাবাহিকতা মাত্র। অফিসার্স অ্যাড্রেসে আমরা কোনো সাংবাদিককে ডাকেনি, সেনাবাহিনী প্রধান জাতির উদ্দেশেও কোনো ভাষণ দেননি অথবা আইএসপিআরও সরকারিভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি। সুতরাং গণমাধ্যমে কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিষয়ে যা প্রকাশ করা হয়েছে এর সঠিকতা ও বস্তুনিষ্ঠতা যথেষ্ট বিবেচনার দাবি রাখে।
করিডর, বন্দর ও স্টারলিংক নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখা হচ্ছে, এসব বিষয় দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে। এ বিষয়ে সেনাবাহিনী কী পদক্ষেপ নিচ্ছে– জানতে চাইলে মিলিটারি অপারেশনস ডিরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কোনো বিষয়ে সেনাবাহিনী সম্পৃক্ত হবে না।
দেখা গেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী বৈঠক করেছে। বিষয়টি সেনাবাহিনী কীভাবে দেখছে– জানতে চাইলে কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এই দলটি আত্মস্বীকৃত একটি সন্ত্রাসী দল, যারা সংঘাতপূর্ণ কাজ করে থাকে। সুতরাং তাদেরকে নির্বাচনে যুক্ত করা সমুচিত নয় বলে আমরা মনে করি।
নির্বাচন, করিডর নিয়ে সেনাবাহিনী ও সরকারের মুখোমুখি কোনো অবস্থান আছে কি না– জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়গুলো নিয়ে মুখোমুখি কোনো অবস্থান দেখছি না। আমাদের মধ্যে যথেষ্ট সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ রয়েছে এবং আমরা একত্রে একসঙ্গে দেশের জন্য দেশের স্বার্থে জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে যদি কোনো হুমকি আসে সেক্ষেত্রে সেনাবাহিনী কী করবে– জানতে চাইলে মিলিটারি অপারেশন্স ডিরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব বা নিরাপত্তা রক্ষার জন্য আমরা সর্বদা একত্রে এবং একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করে আসছি। ভবিষ্যতেও সেনাবাহিনী দেশের জন্য দেশের নিরাপত্তার জন্য দেশের মানুষের সঙ্গে কাজ করে যাবে।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]