
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে ছাত্র জনতা। এসময় বুলডোজার দিয়ে উভয় নেতার বাড়ির সামনের অংশ, সীমানা প্রাচীর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে বাড়িতে থাকা আসবাবপত্র বের করে পুড়িয়েও দেওয়া হয়।
বুধবার (৬ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত টানা এ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
প্রতক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ১১টার দিকেই বরিশাল নগরীর কালিবাড়ি রোড ঘিরে পুলিশের লক্ষণীয় উপস্থিতি ছিল। রাত ১২টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও কালিবাড়ি রোডে আসেন। একইসময় ছাত্র জনতা মিছিল নিয়ে কালিবাড়ি রোডের সেরনিয়াবাত ভবনমুখী হন। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সড়কের দুইপাশ থেকেই প্রবেশে বাধা দেন। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর বাসভবনের ভেতর ঢুকে যান। এসময় তারা জনমানবহীন বাড়ির বিভিন্ন তলায় গিয়ে পড়ে থাকা ভাঙাচোরা কিছু আসবাবপত্র ও গ্লাস ভাঙচুর করে।
পরে শিক্ষার্থীরা বুলডোজার নিয়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাতে বাধা প্রদানের চেষ্টা করে। তবে শিক্ষর্থীরা সেই বাধাও উপেক্ষা করে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর বাসভবনের সীমানা প্রাচীর বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। পরে বাসভবনের সামনের অংশ, গাড়ি গ্যারেজ ও সেডের অংশবিশেষ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। এতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় জনতাও অংশগ্রহণ করে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, কালিবাড়ি রোডে সাদিকের বাড়িটি ছিল টর্চারসেল। মানুষকে এখানে ধরে এনে নির্যাতন করা হতো। তাই জনগণের ক্ষোভ এতটাই ছিল যে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করে পুলিশ-সেনাবাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে প্রতিবাদ জানিয়েছে।
এদিকে কালিবাড়ি রোডের সেরনিয়াবত ভবন ভাঙচুরের পর রাত দেড়টার দিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা নগরীর বগুরা রোডস্থ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর বরিশালের বাসভবনেও ভাঙচুর চালায়। সেখানে একটি টিনের ঘর বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি টিনের ঘর লাগোয়া একতলা ভবনের সামনের অংশ এবং পাশের দোতলা ভবনের সামনের অংশ ভাঙা হয়। পরে উঠানের সীমানা প্রাচীর ও বাড়ির সামনের সীমানা প্রাচীর ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বুলডোজার দিয়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুলডোজার দিয়ে আমির হোসেন আমুর বাসভবনের ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশের পরপরই ঘরগুলোতে ভাঙচুর চালানো হয়। পাশাপাশি ভেতরে থাকা বিভিন্ন মালামাল বাড়ির সামনে জড়ো করে তাতে আগুন দেওয়া হয়।
নাঈম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, কালিবাড়ি রোড ও বগুরারোডের এ ভবনগুলোতে ফ্যাসিবাদের আস্থানা। আমরা বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের কোনো আস্থানা রাখতে চাই না। তাই বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
ঘটনাস্থলে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল মহানগরের আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম শাহেদ বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতা ফ্যাসিবাদের দোসরদের আস্তানা ভেঙে দিচ্ছে।
তবে এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য দিতে কেউ রাজি হননি।
বিবার্তা/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]