খুলে দেওয়া হয়েছে ফারাক্কা ব্যারেজের ১০৯টি গেট
প্রকাশ : ২৬ আগস্ট ২০২৪, ১৭:৪৫
খুলে দেওয়া হয়েছে ফারাক্কা ব্যারেজের ১০৯টি গেট
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

ভারতের বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বন্যার কারণে ফারাক্কা ব্যারেজের ১০৯টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৬ আগস্ট) এই গেটগুলো খুলে দেওয়া হয়, ফলে একদিনে বাংলাদেশে ১১ লাখ কিউসেক পানি প্রবাহিত হবে। বাঁধ খুলে দেওয়ার ফলে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ ও বাংলাদেশে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।


ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি ও পাহাড়ি ঢলের তথ্য বাংলাদেশকে আগে থেকেই দেওয়া হচ্ছে।


ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রতিবেশী রাজ্যগুলোতে বন্যার কারণে পানির চাপ বেড়েছে। তবে, নেপাল থেকে এখনও পাহাড়ি ঢল আসেনি, যা কিছুটা স্বস্তির বিষয়।


ফারাক্কা ব্যারেজ এলাকায় পানি বিপৎসীমার ৭৭ দশমিক ৩৪ মিটার ওপর দিয়ে বইছে, তাই বাধ্য হয়ে গেটগুলো খুলতে হয়েছে। ফিডার ক্যানেলেও পানি বৃদ্ধি করা হয়েছে।


প্রবল বৃষ্টি আর বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে পানি ছাড়ায় চাপ বাড়ছে ফারাক্কা ব্যারেজে। এতে করে এই ব্যারেজ থেকেও ছাড়তে হচ্ছে পানি। ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্পের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় দৈনন্দিন পানি ছাড়ার পরিমাণ বাড়ছে। যদিও বাকি সময়ে আপস্ট্রিমে পানি যেমন থাকে, সেই অনুযায়ী পানি ছাড়া হয় ডাউনস্ট্রিমে। দেশটির নদী গঙ্গার পানির স্তর বাড়তেই ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।


ভারতীয় গণমাধ্যম কলকাতার নিউজ-১৮ বাংলার এক প্রতিবেদনে আজ সোমবার (২৬ আগস্ট) এসব তথ্য জানানো হয়। ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্পসূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বিপুল বৃষ্টি হওয়ায় এবং ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্পের জলস্তর বৃদ্ধিতে সমস্ত গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। যে পরিমাণ পানি আসছে, সেই পরিমাণ পানি ছাড়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৭৭ দশমিক ৩৪ বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।


ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্পসূত্রে আরও বলা হয়েছে, ফারাক্কা ব্যারেজে পানি ধরে রাখার ক্ষমতা নেই, ফলে পানি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে তারা। পানি না ছাড়া হলে ফারাক্কা ব্যারেজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা।


এদিকে, এই পানি ছাড়ার ফলে বিভিন্ন এলাকায় পানি বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে, দুশ্চিন্তায় দিন পার করছে মুর্শিদাবাদের মানুষ। এ ছাড়া, গঙ্গার উৎপত্তির অঞ্চলগুলোতে বৃষ্টির প্রবণতা বাড়তে থাকায় নদের জলস্তর।


কলকাতার নিউজ-১৮ বাংলার ভিডিও প্রতিবেদনের প্রতিবেদক কৌশিকের সঙ্গে কথা হয় ব্যারেজের মহাব্যবস্থাপক (জিডি) আর ডি দেশপান্ডের।


তিনি বলেন, এখন তো ব্যারেজের সব গেট খোলা আছে। এখন যে পানি ডাউনস্ট্রিমে যাচ্ছে, তাতে সেদিকে পানির প্রবাহ বাড়তে পারে কি না, প্রশ্নে দেশপাণ্ডে বলেন, না। গতকাল তো ১১ লাখ ৩২ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া ছিল। যা ওপর থেকে আসে, তা থেকে নির্দিষ্ট অংশ বাদ দিয়ে বাকি সব ডাউন স্ট্রিমে ছাড়াই লাগে। এটি ধরে রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই। এ ছাড়া ব্যারেজের কারণে আপস্ট্রিম বা ডাউনস্ট্রিমে জলাবদ্ধতার কোনো স্ট্যাডি আমাদের কাছে নেই। এটির কোনো কারণ নেই।


ফারাক্কা ব্যারেজের জেনারেল ম্যানেজার আর দেশ পাণ্ডে বলেন, ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ সবসময় সতর্ক থাকে এবং নিয়মিত নজর রাখছে। পানির চাপ দ্রুত বেড়ে যাওয়ার কারণে সব ১০৯টি গেট খুলতে না দিলে ব্যারেজের ওপর বড় চাপ পড়তে পারত, যা বড় ক্ষতির কারণ হতে পারত। বর্তমানে ফিডার ক্যানেলে ৪০ হাজার কিউসেক ও ডাউন স্ট্রিমে ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।


উল্লেখ্য, ফারাক্কা বাঁধে পানিধারণ ক্ষমতা ২৬ দশমিক ২৫ মিটার। বিপৎসীমা ২২ দশমিক ২৫ মিটার এবং সতর্কতার সীমা ২১ দশমিক ২৫ মিটার। এরইমধ্যে আপস্ট্রিমের ধারণ ক্ষমতা অতিক্রম করায় শনিবার থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে অধিকাংশ গেট। ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়াই নদীর পানি বেড়ে প্লাবনের পরিমাণ আরও বাড়ছে। নিমতিতায় সতর্কসীমা ২০ দশমিক ৫৮ মিটার। বিপৎসীমা ২১ দশমিক ৯০ মিটার। নিমতিতায় পানি বইছে ১১ দশমিক ৫১ মিটার উচ্চতায়। নূরপুরে উচ্চতা ২১ দশমিক শুন্য তিন মিটার। সেখান পানি বইছে ২১ দশমিক ৬৪ মিটার দিয়ে। সতর্কতাসীমা ২০ দশমিক ৭৩ মিটার।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com