আমেরিকান-জাপানিদের চেয়ে বেশি খাবার নষ্ট করেন বাংলাদেশিরা
প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৭:০৮
আমেরিকান-জাপানিদের চেয়ে বেশি খাবার নষ্ট করেন বাংলাদেশিরা
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশে বাসাবাড়িতে একজন ব্যক্তি গড়ে বছরে ৮২ কেজি খাবার অপচয় করেন, যা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া ও ভারতের চেয়ে বেশি। বিশ্বে ২০২২ সালে মোট অপচয় হওয়া খাবারের পরিমাণ ১০০ কোটি টনের বেশি, যা বিশ্ববাজারে আসা মোট খাবারের পাঁচ ভাগের এক ভাগ।


বুধবার (২৭ মার্চ) নাইরোবি-ভিত্তিক জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি) থেকে প্রকাশিত ‘ফুড ওয়েস্ট ইনডেক্স রিপোর্ট ২০২৪’-এ এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক কর্মসূচির (ইউএনইপি) ওয়েবসাইটে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। খাবারের এ অপচয়কে ‘বৈশ্বিক ট্র্যাজেডি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।


ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে বাসাবাড়িতে একজন ব্যক্তি বছরে গড়ে সবচেয়ে বেশি খাবার অপচয় করে মালদ্বীপে ২০৭ কেজি। বিপরীতে সবচেয়ে কম খাবার নষ্ট হয় মঙ্গোলিয়ায় ১৮ কেজি।


প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে বাসায় একজন ব্যক্তি বছরে সবচেয়ে বেশি খাবার অপচয় করে পাকিস্তানে ১৩০ কেজি। এরপরেই আছে নেপাল ৯৩ কেজি। এরপর পর্যায়ক্রমে রয়েছে মিয়ানমার (৭৮ কেজি), শ্রীলঙ্কা (৭৬ কেজি) ও ভারত (৫৫ কেজি)। সবচেয়ে কম ১৯ কেজি খাবার অপচয় হয়েছে ভুটানে। আর বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৪.১০ মিলিয়ন টন খাবার নষ্ট হয়।


খাবার অপচয় সূচকের হিসাবে, যুক্তরাষ্ট্রে একজন ব্যক্তি বাসাবাড়িতে গড়ে বছরে খাবার অপচয় করেছেন ৭৩ কেজি। যুক্তরাজ্যের তা ৭৬ কেজি। নেদারল্যান্ডসে ৫৯ কেজি এবং জাপানে ৬০ কেজি খাবার নষ্ট করে। চীনের ক্ষেত্রেও হিসাবটা একই। তবে তুলনামূলক কম অপচয় হয়েছে রাশিয়ায় ৩৩ কেজি।


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে গৃহস্থালি থেকে ৬০ কোটি মেট্রিক টনের বেশি খাদ্য নষ্ট করেছে। যা মোট অপচয়ের প্রায় ৬০ শতাংশ। এর পরিমাণ ৬৩ কোটি ১০ লাখ টন। এছাড়া রেস্তোরাঁ, ক্যানটিন ও হোটেলের মতো খাদ্য পরিষেবা খাতের অপচয় প্রায় ২৮ শতাংশ এবং কসাই ও মুদিদোকানে ১২ শতাংশ বর্জ্যের জন্য দায়ী। গড় ব্যক্তি প্রতি বছরে ৭৯ কিলোগ্রাম খাবার অপচয় করে।


প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, খাদ্য অপচয় কেবল উন্নত বিশ্বের ঘটনা নয়। উচ্চ এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলিতে প্রতি বছর জনপ্রতি ৭ কিলোগ্রাম খাবারের অপচয় হয়।


খাদ্য অপচয় একটি বিশ্বব্যাপী ট্র্যাজেডি উল্লেখ করে জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) নির্বাহী পরিচালক ইনগার অ্যান্ডারসেন বলেন, সারা বিশ্বে খাদ্য নষ্ট হওয়ায় লাখ লাখ মানুষ আজ ক্ষুধার্ত হচ্ছে। শুধুমাত্র এটি একটি বড় সমস্যা নয়, এছাড়াও এই ধরনের অপ্রয়োজনীয় বর্জ্যের প্রভাব জলবায়ু এবং প্রকৃতির মোকাবিলায় খরচ বাড়ছে।


ওই বছরে অপচয় হওয়া ১০০ কোটি টনের বেশি খাবার ছিল বিশ্ববাজারে আসা খাদ্যদ্রব্যের প্রায় পাঁচ ভাগের এক ভাগ। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের প্রায় ৮০ কোটি মানুষ যখন না খেয়ে আছে, তখন লাখো কোটি ডলারের খাবার ময়লার ঝুড়িতে ফেলা হচ্ছে।


ডব্লিউআরএপির কর্মকর্তা রিচার্ড সোয়ানেল বলেন, এটা আমাকে হতভম্ব করে দিয়েছে। আসলে বছরের প্রতিদিন এক বেলায় যত খাবার নষ্ট হয়, তা দিয়ে বর্তমানে অনাহারে থাকা প্রায় ৮০ কোটি মানুষের সবাইকে খাওয়ানো সম্ভব।


বিশ্বে খাবারের অপচয় নিয়ে জাতিসংঘের সংকলিত দ্বিতীয় প্রতিবেদন এটি। এটি তৈরিতে জাতিসংঘকে সহযোগিতা করেছে অলাভজনক সংস্থা ডব্লিউআরএপি। প্রতিবেদনটি এখন পর্যন্ত খাবার অপচয়ের সবচেয়ে পূর্ণাঙ্গ চিত্র তুলে ধরেছে।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com