
'লিটল কমরেড' খ্যাত বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়েছে।
৩ মার্চ, রবিবার বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে গার্ড অব অনারে ঢাকা জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি মোস্তফা আব্দুল্লাহ আল- নূর সংগ্রামের উপস্থিতিতে পুলিশের একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন। জানাযা সম্পন্ন শেষে মিরপুর মুক্তিযোদ্ধা কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফনের কথা রয়েছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদানের সময় তাঁর কফিন জাতীয় পতাকা দিয়ে মুড়িয়ে তার উপর পুষ্পর্ঘ্য অর্পণ করা হয়। এরপর পুলিশ বাহিনীর চৌকস দল তাকে সশস্ত্র সালাম প্রদান করেন। এসময় বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে।
প্রয়াত এই বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. মুহাম্মদ সামাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, রোকেয়া হল অ্যালামনাই, পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফীন সিদ্দিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা শফি আহমেদ ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ।
আরো শ্রদ্ধা নিবেদন করেন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, সহ-সভাপতি আফরোজা হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান মুকতাদির, রোকনুজ্জামান রোকন, নইমুল আহসান জুয়েল, মোহম্মদ মোহসীন, জাতীয় শ্রমিক জোট- বাংলাদেশ সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, জাসদের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জিয়াউল হক মুক্তা, জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জাহিদ আলম, জাসদের দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, জাসদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমেদ প্রমুখ।
এছাড়াও অনলাইন সংবাদ মাধ্যম বিবার্তা২৪.নেট এর সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসি ও আইপি টেলিভিশন জাগরণ টিভির প্রধান সম্পাদক এফ এম শাহীনও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) দুপুর দেড়টার দিকে নিউইয়র্কের ফ্লাশিং হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরে ২ মার্চ, শনিবার বিকাল ৫টার দিকে আমিরাত এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তাঁর মরদেহ ঢাকায় আসে এবং বারডেম মরচুয়ারিতে রাখা হয়।
উল্লেখ্য, কমরেড রফিক ১৯৫২ সালের ১লা এপ্রিল ঢাকা শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি স্কুল জীবন থেকেই পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সচেতন কর্মী ছিলেন। অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রফিক তৎকালীন ছাত্রনেতা দাদা ভাই সিরাজুল আলম খানের নির্দেশে 'বীর বাঙ্গালী অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর' শিরোনামে লিফলেট ছাপিয়ে ফেরার পথে গ্রেফতার হয়েছিলেন পাকিস্তান স্পেশাল ফোর্সের হাতে।
তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ (নূরে আলম সিদ্দিকী-শাজাহান সিরাজ) কেন্দ্রীয় কমিটির সর্বকনিষ্ঠ সদস্য ও নিউক্লিয়াসের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি ফার্স্ট ব্যাচে বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্সের ট্রেনিং নিয়েছিলেন আসামের হাফলং-এ। ট্রেনিং শেষে কামরুল আলম খান খসরুর গ্রুপে পলিটিক্যাল কমিশনার হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। তাদের অবস্থান ছিল ডেমরা এলাকায় এবং যুদ্ধক্ষেত্র ঢাকা শহর। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে তিনি ছিলেন জাসদের একনিষ্ঠ সংগঠক। পেশায় তিনি গণকণ্ঠের সাংবাদিক ছিলেন।
বিবার্তা/মোবারক/রোমেল/এমজে
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]