অপহরণ মামলায় সিআইডির দুই সদস্যকে গ্রেফতার করছে ডিবি
প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ২০:৩২
অপহরণ মামলায় সিআইডির দুই সদস্যকে গ্রেফতার করছে ডিবি
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

রাজধানীর ভাটারায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে এক ট্রাভেল ব্যবসায়ীকে অপহরণের অভিযোগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দুই সদস্যসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ (উত্তর)।


২৫ ডিসেম্বর, সোমবার বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান।


গ্রেফতারকৃতরা হলেন- পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপপরিদর্শক রেজাউল করিম (৩৯), কনস্টেবল আবু সাঈদ (৩২) ও তাদের সহযোগী ও সোর্স মো. ইমন (২১), মো. আব্দুল্লাহ আল ফাহিম (২১) এবং মো. শরীফ হোসেন (২৬)।


জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে রাজধানীর ভাটারার আবু সাঈদ নামে এক ব্যক্তিকে তুলে নেয় গ্রেফতারকৃতরা। এরপর তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে সাঈদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা তুলে নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয় আসামিরা। এ ঘটনায় মামলা হলে তদন্ত শুরু করে ডিবি। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩ ডিসেম্বর ফাহিম ও ইমনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রোববার সিআইডির উপপরিদর্শক ও কনস্টেবলসহ অপর ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়।


এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন, এর আগে ইমন ঘটনার কথা স্বীকার করে জড়িতদের নাম জানিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিল।


ডিবি প্রধান বলেন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাজ হলো তদন্ত করা। যখন থানায় কোনো মামলা হয় তখন সেই মামলার তদন্তভার গ্রহণ করা বা ছায়াতদন্ত করা হয়। ভাটারা থানায় চলতি বছরের আগস্ট মাসে এক ট্রাভেল ব্যবসায়ী ভুক্তভোগী হিসেবে থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, সিআইডি পরিচয় দিয়ে ফোন করে ধরে নিয়ে টাকা-পয়সা আদায় শেষে বিভিন্ন স্থানে ফেলে রেখে যাওয়া হতো। এসব অভিযোগে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের (উত্তর) তদন্তে নামে।


তদন্তের এক পর্যায়ে বরিশাল থেকে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে আদালতে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে অপহরণ ও টাকা আদায়ের কথা স্বীকার করেন। এসময়ে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, চক্রে একজন পরিদর্শক ও আরেকজন এসআই পদের দুই পুলিশ সদস্যও জড়িত। যদিও এ পরিচয় সঠিক নয়। যিনি নিজেকে পরিদর্শক রবিউল পরিচয় দিয়েছেন তিনি আসলে একজন কনস্টেবল। তারা নিজেদের ভুয়া নাম-পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে টাকা-পয়সা আদায় করতেন। সিআইডিতে কর্মরত দুই পুলিশ সদস্যের সঙ্গে অপহরণ চক্রের সদস্যরাও জড়িত।


হারুন অর রশীদ আরও বলেন, দুজনের নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর অপহরণ ও ব্যাংক থেকে টাকা তোলার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, ফোনের লিস্ট ও লোকেশন ট্রাকিং করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।


তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ কোনো ব্যক্তির অপরাধের দায় নেবে না। যেহেতু আমরা অপরাধীকে গ্রেফতার করি। সেখানে কোনো পুলিশ সদস্য যদি অপহরণকারীর সঙ্গে মিশে অপরাধ করে তখন তাকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। অতীতেও ছাড় দেইনি, ভবিষ্যতেও কোনো ছাড় দেয়া হবে না। যে দুজন পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতরা করা হয়েছে আমরা তাদের রিমান্ডে আনবো। তাদের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করা হবে আর কেউ জাড়িত আছে কি না। অথবা বর্তমান ও সাবেক কোনো পুলিশ সদস্য জড়িত আছে কি না আমরা জানার চেষ্টা করবো।


এক প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, বিভিন্ন সময় ভুয়া পুলিশ, র‌্যাব, ডিবি সদস্য গ্রেফতার করেছি। এবারও আমরা সিআইডি পরিচয় দেয়া অপহরণকারী চক্র ধরতে গিয়ে আসল সিআইডি গ্রেফতার করেছি। প্রতিবছর পুলিশ বাহিনীতে খারাপ কর্মকাণ্ডের কারণে যে পরিমাণ শাস্তি পায় অন্য কেনো সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানে পায় না। একদিকে পুলিশ বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যেমন মানবিক অন্যদিকে এসব বিষয়ে অমানবিক ও কঠোর। কারণ সাধারণ মানুষকে পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজি, অপহরণের মতো অপরাধ করবে এটা পুলিশ বাহিনী বরদাস্ত করবে না।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com