তিন গোয়েন্দা প্রধানের সঙ্গে সিইসির বৈঠক
প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ২১:২২
তিন গোয়েন্দা প্রধানের সঙ্গে সিইসির বৈঠক
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

দেশের অন্যতম তিনটি গোয়েন্দা সংস্থার তিন প্রধানের সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।


৭ নভেম্বর, মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে এ বৈঠক করেন তিনি।


জানা গেছে, ডিজিএফআই ডিজি মেজর জেনারেল হামিদুল হক, এনএসআই ডিজি মেজর জেনারেল টিএম জোবায়ের এবং এসবি প্রধান মনিরুল ইসলাম পৃথকভাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে সিইসি ছাড়া অন্য কেউই উপস্থিত ছিলেন না। তিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান পৃথকভাবে তিন ঘণ্টা বৈঠক করেন।


সকাল সোয়া ১১টা থেকে ১২টা এসবি, দুপুর ১২টা থেকে ১টা ডিজিএফআই এবং বিকাল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এনএসআই প্রধান বৈঠক করেন। তবে, কী বিষয়ে বৈঠক হয়েছে সে বিষয়ে ইসির কেউই স্পষ্ট করে কিছুই বলতে পারেননি।


সিইসির দফতর সূত্র বলছে, তিন গোয়েন্দা প্রধানের সঙ্গে সিইসি বৈঠক করেছেন। তবে, আলোচনার বিষয় জানা নেই। তিন গোয়েন্দা প্রধানের মধ্যে ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক সিইসির কাছে আগে থেকেই সময় চেয়েছিল। এসবি ও এনএসআই প্রধান হয়ত সিইসির সঙ্গে সরাসরি কথা বলে এসেছেন।


এদিকে নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে নানা ইস্যু নিয়ে মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে। সর্বশেষ গত সোমবার ইসির সচিব উদ্যোগী হয়েও কমিশনারদের এক কক্ষে বসাতে পারেননি। এদিন ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলন চারজন নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন। তার বৈঠকের পর নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খানের কার্যালয়ে যান। সেখান থেকে তারা দুজনেই সিইসির কার্যালয়ে যান। এর আগে নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানাও সিইসির কার্যালয়ে যান। তবে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান সেখানে যাননি।


ইসি সূত্র জানায়, সর্বশেষ গত রোববার সিইসির কার্যালয়ে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে অংশ নেন ইসি আনিছুর রহমান। ওই বৈঠকে কয়েকটি বিষয়ে নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেয়। এর একটি হচ্ছে ডিসি-এসপিসহ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে কমিটির মাধ্যমে আসন্ন নির্বাচনের প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তা নিয়োগের নীতিমালা অনুমোদন করা। এই নীতিমালার বিরোধিতা করেন সিইসি ও দুজন নির্বাচন কমিশনার। তাদের যুক্তি, আরপিও অনুযায়ী ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের এখতিয়ার রিটার্নিং কর্মকর্তার। এছাড়া নির্বাচনে প্রশাসন ক্যাডারের বাইরের অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তাদেরও রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে চায় কমিশন। তফসিল ঘোষণার আগেই রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়টি ইসির আলোচনায়ও রয়েছে। এ নিয়েও আপত্তি আছে দুজন কমিশনারের।


এর মধ্যেই আজ মঙ্গলবার এসবি, ডিজিএফআই এ এনএসআইয়ের প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন সিইসি। এরপর বিকালের দিকে সিইসির কক্ষে বৈঠক করেন চার কমিশনার ও ইসির কর্মকর্তারা। বৈঠকে প্রথমে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান ও বেগম রাশেদা সুলতানা আসেন। পরবর্তীতে ইসি সচিব নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীরেরর কক্ষে যান। সেখান থেকে তারা নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমানের কক্ষে যান। এরপর দুই কমিশনার ও সচিব একসঙ্গে বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। বৈঠক শেষে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের জানান, ভোটে অনিয়মের ভিডিও প্রকাশ হওয়ায় সদ্য সমাপ্ত লক্ষ্মীপুর-৩ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ সংসদীয় আসনে উপনির্বাচনের ফলাফলের গেজেট স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন।


সে সময় তিন গোয়েন্দা প্রধানের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলমের কাছে সাংবাদিকরা জানতে চান। সে সময় প্রশ্ন করা হয়, আজকে পুলিশের বিশেষ শাখা, ডিজিএফআই ও এনএসআই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।


কী বিষয় নিয়ে আলাপ হয়েছে- প্রশ্নে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, সিইসি সাহেবের সঙ্গে কী বিষয়ে আলাপ হয়েছে, আমি সেটা কীভাবে জানব? সামনে আমাদের নির্বাচনি তফসিল ঘোষণাসহ অন্যান্য বিষয় রয়েছে, সেহেতু এ জাতীয় সাক্ষাৎ আলোচনা প্রতিনিয়ত হতে পারে। যেমন আপনারা প্রতিদিন আমাদের কাছে তথ্য চাচ্ছেন, এ তথ্যগুলো দিতে গিয়ে আমাদেরও তো তথ্য সংগ্রহ করতে হয়। সেজন্য আমরা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নিয়মিতই কথা বলি, বসব এবং বসতে হবে।


গণমাধ্যমের খবর, নির্বাচন কমিশনের কমিশনারদের মধ্যে মতানৈক্য আছে আছে কি না, থাকলে কোন পয়েন্টে আছে- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, অবশ্যই নেই।


ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, নভেম্বরের প্রথমার্ধেই তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে ডিসেম্বরের শেষ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হতে পারে ভোটগ্রহণ।


আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করার জন্য আগামী বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে যেতে পারেন নির্বাচন কমিশনাররা। এর পরের সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।


উল্লেখ্য, প্রতিবারই জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানেরা এ ধরনের বৈঠক করে থাকেন।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com