প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখার যৌক্তিকতা তুলে ধরা হবে সরকারের কাছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা যেটাই করি না কেন, যুক্তিযুক্ত হবে। কোনো পক্ষপাক্ষিত্ব হবে না। যেটা বেটার, যেটা লজিক্যাল সেটা করবো। সরকারের চাওয়া লজিক্যাল হলে চলে যাবে। আর না হলে আমাদের যুক্তি তুলে ধরবো।
রবিবার (৮ জানুয়ারি) নির্বাচন কমিশন আয়োজিত এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন সিইসি।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, যেহেতু সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনআইডি ওনারা করবেন। আর ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, এটা ওনারা করেছে, এটা এখানে থাকাই ভালো। তাই এটা নিয়ে প্রযুক্তিবিদদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমাদের কর্মকর্তারা আমাদের কাছে একটা স্মারলিপি দিয়েছিলেন এবং যুক্তি তুলে ধরছিলেন যে, ইভিএমে ভোট হলে এবং মন্ত্রণালয়ে এনআইডি চলে গেলে ভোট নিতে সমস্যা হতে পারে।
যেহেতু বিষয়টা টেকনিক্যাল, তাই আইটি বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য ও মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে। আমরা সেগুলো শুনেছি। আমরা কোনো মতামত দেইনি বলে জানান সিইসি।
মো. আলমগীর বলেন, ওনারা স্পষ্টভাবে চারজন যেটা বলেছেন, টেকনিক্যালি কোনো সমস্যা হবে না। কারণ হলো- সার্ভার তো আমাদের কাছেই থাকছে। এটা কোনো সমস্যা না। বিশেষজ্ঞরা এ ব্যাপারে মিশ্র বক্তব্য দিয়েছেন। একজন বলেছেন- ‘এটা তো নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না আপনারা কেন বাড়তি দায়িত্ব নিতে যাবেন? ইসির কাজ হলো ভোটার তালিকা করা, সুষ্ঠু নির্বাচন করা। এটা তো দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। কাজেই না থাকাই ভালো’।
আবার কেউ বলেছেন, ‘যেহেতু এটা সরকারেরই কাজ, তাই সরকার চাইলে নিতে পারে। তবে যেহেতু ইসি এটা করে আসছে দক্ষতার সঙ্গে, এক্ষেত্রে কমিশনের কাছেই যদি দক্ষতার সঙ্গে রাখা যায়। এখন অন্য কেউ কাজ করবে, সময় লাগবে, এতে মানুষ যে সার্ভিস পাচ্ছে, এটা বিঘ্নিত হতে পারে। তাই সরকারকে যদি কনভিন্স করা যায় যে, আপনারা চাইলে নিতে পারেন, তবে এটা এখানে থাকলে ভালো হয়’।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলেছেন, ‘ইভিএমে যেখানে ভোট হবে সেখানে শুধু এনআইডি ইনসার্ট করতে হবে। এক্ষেত্রে নামটা চেঞ্জ করে ভোটার কার্ড করে দেবেন। যেহেতু অনেক মানুষ সার্ভিস নেওয়ার জন্য এনআইডি নেয়, এতে ভোটার হওয়ার আগ্রহ কমে যেতে পারে। তবে ভোট সুষ্ঠু হলে ভোটার হওয়ার আগ্রহ কমে যাবে না’।
ইভিএমে ভোটগ্রহণ ব্যবস্থায় এনআইডি ও ভোটার নম্বর ব্যবহার বিষয়ক মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ, অধ্যাপক হায়দার আলী, ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম।
অন্যদিকে সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ চার নির্বাচনকমিশনার- অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব খান, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান।
প্রসঙ্গত, সরকার এনআইডি কার্যক্রম ইসির কাছ থেকে সরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের কাছে ন্যস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিবার্তা/সানজিদ/এসএফ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]