শিরোনাম
ক্যান্সার চিকিৎসায় আরো এক ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ
প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২১, ১৩:২৭
ক্যান্সার চিকিৎসায় আরো এক ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

দেশে এই প্রথম প্রাণঘাতী ক্যান্সার গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সাইক্লোট্রন সুবিধাদিসহ সর্বাধুনিক পেট-সিটি (পজিট্রন ইমিশন টোমোগ্রাফি) প্রযুক্তি স্থাপিত হয়েছে, যা দেশের ক্যান্সার চিকিৎসাকে আরো একধাপ এগিয়ে দিয়েছে।


বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের অধীনস্ত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্সেসের (নিনমাস) আওতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ২টি পেট-সিটি মেশিন, রেডিও কেমিস্ট্রি সুবিধাসহ ১টি সাইক্লোট্রন মেশিন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও ১টি পেট-সিটি মেশিন স্থাপন করা হয়।


রবিবার (২৪ অক্টোবর) বেলা ১১টায় বিএসএমএমইউয়ের এফ ব্লকের অনকোলজি বিভাগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় সৃষ্ট চিকিৎসা ও গবেষণা সুবিধা প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নুরুল ইসলাম বলেন, আজ বিএসএমএমইউতে ২টি পেট-সিটি মেশিন এবং রেডিওকেমিস্ট্রিসহ ১টি সাইক্লোট্রন মেশিন স্থাপন ও ঢামেকে ১টি পেট- সিটি মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। এই সাইক্লোট্রন সুবিধাদিসহ পেট-সিটি, দ্রুত ক্যান্সার শনাক্তে দেশের ক্যান্সার চিকিৎসায় যুগান্তকারী অবদান রেখে চলেছে।


তিনি বলেন, শরীরে যে সব স্থানের কোষগুলো বেশি সক্রিয় থাকে পেট স্ক্যান কেবল সেইসব স্থানের চিত্র/তথ্য প্রদান করে থাকে; অপরদিকে সিটি স্ক্যান কোন স্থানের গঠনগত এবং অবস্থানগত তথ্য/চিত্র সূক্ষ্মভাবে প্রদান করে। এই দুটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে গঠিত স্ক্যানারে একটি ফিউশন ইমেজ একই সময়ে পাওয়া যায়।


নুরুল ইসলাম আরো বলেন, এই দুটো ইমেজের সমন্বিত ইমেজটি একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসককে শরীরের যেসব স্থানের কোষগুলো বেশি সক্রিয় অর্থাৎ ক্যান্সার আক্রান্ত কোষগুলো খুঁজে বের করতে সাহায্য করে। এ পরীক্ষার মাধ্যমে পাওয়া তথ্য/চিত্র চিকিৎসককে কোন বেদনাদায়ক পরীক্ষা এবং সার্জারি ছাড়াই রোগ নির্ণয় করে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে সাহায্য করে। একটি নির্দিষ্ট রোগের চিকিৎসার ফলাফল পর্যবেক্ষণ করতেও এই পরীক্ষাটি করা হয়।


চিকিৎসকরা বলেন, এটি আধুনিক প্রযুক্তির অন্যতম উদাহরণ। অনেক সময় রোগীর জীবন ও মৃত্যুর মাঝে সহায়ক ভূমিকাটাই পালন করে। পেট সিটি অন্যান্য ইমেজিং টেকনোলজি যেমন- এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, আলট্রাসনোগ্রাম, এমআরআই প্রভৃতি প্রযুক্তি থেকে ভিন্নমাত্রার। কারণ ওগুলো শুধু শরীরে টিউমারের আকার, আকৃতি, অবস্থান সম্পর্কে ধারণা দেয়। কিন্তু পেট সিটি ক্যান্সার (ম্যালিগন্যান্ট টিউমার) বা ক্যান্সার নয়- (বিনাইন টিউমার) দুটো সর্ম্পকেই ধারণা দিতে সক্ষম।


পজিট্রন ইমিশন টোমোগ্রাফি টিউমার বা শরীরে অ্যানাটমিকাল অ্যাবনরমালিটি বা ক্যান্সার আক্রান্ত স্থান শনাক্ত করতে পারে। সেই সঙ্গে পারে শরীরের প্রতিটি কোষের অ্যাবনরমাল মেটাবলিক এবং বায়োক্যামিকাল অ্যাক্টিভিটি শনাক্ত করতে। পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, তখন বিশ্বে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১৪ দশমিক ১ মিলিয়ন আর মৃত্যু হার ছিল ৪ দশমিক ২ মিলিয়ন। আর ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বে ক্যান্সার রোগীর সংখ্য্যা দাঁড়াবে ২১ দশমিক ৭ মিলিয়নে। যেখানে মৃত্যুহার হবে ১৩ মিলিয়ন।


চিকিৎসকরা বলছেন, যেহেতু পেটসিটির মাধ্যমে দ্রুত ক্যান্সার শনাক্ত করা সম্ভব ,তাই এ পদ্ধতিটি হতে পারে ক্যান্সার নিরাময়ের কার্যকরি মাধ্যম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সানোয়ার হোসেন।


অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সদস্য (জীব বিজ্ঞান) অধ্যাপক ডা. অশোক কুমার পাল এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে আগত প্রায় ৩০০ জন অতিথিরা।


বিবার্তা/এমবি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com