ঢাকার কেরানীগঞ্জে প্লাস্টিক সামগ্রী তৈরির কারখানায় আগুনে দগ্ধ আরো দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- মেহেদী (২০) ও আব্দুর রাজ্জাক (৪৫)। এ নিয়ে ওই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৪ জনে।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) ভোর থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত বিভিন্ন সময় তাদের মৃত্যু হয়। তারা সবাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এ তথ্য বিবার্তাকে জানিয়েছেন বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন আ ফ ম আরিফুল ইসলাম।
এর আগে বুধবার রাতে ও বৃহস্পতিবার ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া।
তিনি জানান, ওই কারখানার ধ্বংসস্তূপ থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বুধবার এব যুবকের পোড়া দেহ উদ্ধার করেছিল, তার নাম জাকির হোসেন, বয়স ২২ বছর। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে ও সকালে মারা যান ওই কারখানার কর্মী খালেক, সালাউদ্দিন, ইমরান, বাবলু, রায়হান, সুজন, জিনারুল, আলম, জাহাঙ্গীর, ফয়সাল, রাজ্জাক ও রায়হান।
উল্লেখ্য, বুধবার বিকেলে কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় অবস্থিত ‘প্রাইম পেট অ্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড'র প্লাস্টিক কারখানায় আগুন লাগে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত একজনের মরদেহসহ ৩২ জনকে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন উইনিটে ভর্তি করা হয়। দগ্ধদের মধ্যে ১১ জনকে পাঠানো হয় নবনির্মিতি শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে। বাকিরা রয়েছেন ঢামেকের বার্ন ইউনিটে। অগ্নিদগ্ধদের মধ্যে অধিকাংশেরই ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
এদিকে, কেরানীগঞ্জে প্লাস্টিক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোল্লা জালাল উদ্দিনকে প্রধান করে গঠিত কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের শ্রম শাখা থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করে অফিস আদেশ জারি করা হয়।
তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- যুগ্মসচিব (শ্রম) এটিএম সাইফুল ইসলাম, শ্রম অধিদফতরের পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের ঢাকার উপ-মহাপরিদর্শক আহমেদ বেলাল এবং উপ-মহাপরিচালক (সেইফটি) মো. কামরুল হাসান। কমিটির সদস্যরা ইতোমধ্যে কাজও শুরু করেছেন বলে শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
কমিটিকে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের পরিদর্শকের মাধ্যমে ওই এলাকায় বিগত বছরে কতগুলো প্লাস্টিক কারখানা পরিদর্শন করা হয়েছে, এ সব পরিদর্শন প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়েছে কিনা; না হয়ে থাকলে তার কারণ এবং ওই এলাকার প্লাস্টিক কারখানাগুলোর ঝুঁকি নির্ধারণ, ঝুঁকি নিরসনের সুপারিশ দিতে বলা হয়েছে।
বিবার্তা/খলিল/জাই
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]