ভূমি মন্ত্রণালয় এবং এটুআই-এর যৌথ আয়োজনে সোমবার সচিবালয়ের ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘ই-নামজারির সক্ষমতা মূল্যায়নে গবেষণালব্ধ ফলাফল’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি।
সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে সারাদেশে ই-নামজারি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।এর মধ্য দিয়ে বর্তমানে ৪৮৫টি উপজেলা ভূমি অফিস ও সার্কেল অফিসে এবং ৩ হাজার ৬১৭টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ই-নামজারি কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়েছে।ই-নামজারি কার্যক্রমের মাধ্যমে ইতোমধ্যে ১ কোটির অধিক নাগরিককে সেবা প্রদান করা হয়েছে।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর দেশে প্রায় ৪২ লাখ ভূমি রেজিস্ট্রেশন হয় এবং উত্তরাধিকার সূত্রে আরো ২০ থেকে ২৫ লাখ নামজারির ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়। কিন্তু মালিকানা হালনাগাদ হয় ৩০ থেকে ৩৫ লাখ। প্রচলিত পদ্ধতিতে প্রায় ৩০ লাখ ভূমি হস্তান্তর নামজারি/ রেকর্ড হালনাগাদ এর বাইরে থেকে যায়। ই-নামজারির মাধ্যমে জনগণ সহজেই এখন সহজে, দ্রুততম সময়ে ও নির্ভুলভাবে অনলাইনে নামজারি করতে পারছেন।
ভূমিমন্ত্রী আরো বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ে নিরবচ্ছিন্ন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু না হলে পুরোপুরি ই-নামজারির সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এছাড়া নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে সৌর বিদ্যুৎ সংযোগের কথাও চিন্তা করা হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রকৃত লক্ষ্য পূরণে ভূমিমন্ত্রী সফলতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। ভূমি মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীদের কর্মকাণ্ডের রেটিং সিস্টেম করা গেলে আরো ভালো ভাবে সেবা দেয়া যাবে। দেশে ডিজিটাল পরিষেবা বাড়ানোর লক্ষ্যে আমরা বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিতকরণে, ইন্টারনেট সংযোগ বৃদ্ধি করাতে, সফটওয়্যার সিস্টেমের সল্যুশন উন্নয়নে ও ক্যাপাসিটি ডেভলপমেন্ট আধুনিকায়নে কাজ করছি।
সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েলে ইউনিভার্সিটির একটি গবেষক টিম ই-নামজারি সেবা প্রদান বিষয়ে একটি গবেষণালব্ধ ফল তুলে ধরেন।গবেষকবৃন্দ তাদের গবেষণায় এপ্রিল/১৮ থেকে জুন/১৯ পর্যন্ত প্রদত্ত ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে নামজারি সেবা ও ই-নামজারি সেবা প্রদানের বিষয়ে ১৫৫টি উপজেলায় প্রদত্ত নামজারি সেবা প্রদানের বিষয়ে গবেষণা করেছেন।
গবেষণালব্ধ ফলাফলে দেখা গেছে - ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে সেবা প্রদানের হার ই-নামজারির মাধ্যমে নামজারি সেবা প্রদানে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৪৫ দিনের ক্ষেত্রে ৩৬ শতাংশ সেবা প্রদানের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বর্তমান ২৮ দিনের ক্ষেত্রে নামজারি সেবা প্রদানের হার ২০ শতাংশ সেবা প্রদানের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লেখ্য, নামজারি সেবা প্রদানের সময়সীমা ৪৫ দিন থেকে বর্তমানে ২৮ দিনে নামিয়ে আনা হয়েছে। গবেষণায় আরো দেখা গেছে, ‘ই-নামজারি পদ্ধতিতে সেবা গ্রহণে, ‘সনাতন পদ্ধতি’র চেয়ে উপজেলা ভূমি অফিস ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সেবা প্রার্থীদের গমনের হার ১৭ শতাংশ কম এবং ভূমি অফিসে সময় ব্যয় করার হার ৭ শতাংশ কম।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যেগ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর আওতায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, আইসিটি বিভাগ, ইউএসএইড এবং ইউএনডিপি এর সহায়তায় পরিচালিত এটুআই-এর কারিগরি সহযোগিতায় ভূমি মন্ত্রণালয় ও ভূমি সংস্কার বোর্ড এর সরাসরি তত্ত্বাবধানে উক্ত ই-নামজারি কার্যক্রম সারাদেশে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান উম্মুল হাছনা ও এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক ড. মোঃ আবদুল মান্নান, পিএএ। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল গ্রোথ সেন্টার এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. ইমরান মতিন, কান্ট্রি ইকোনমিস্ট ফারিয়া নাইম, ইয়েলে ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক মার্টিন মাটসন এবং ভূমি মন্ত্রণালয় ও এটুআই এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ। এছাড়া প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বিবার্তা/জাই
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]