শিরোনাম
সাংবাদিক রাহাত খান আর নেই
প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২০, ২১:৫০
সাংবাদিক রাহাত খান আর নেই
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

দেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক ও কথাশিল্পী রাহাত খান আর নেই। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেনের বাসায় তিনি মারা যান। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। রাহাত খানের স্ত্রী অপর্ণা খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।


মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে তার মরদেহ রাখা হবে। প্রয়াতের শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। শনিবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তার মৃত্যুতেরাষ্ট্রপতি ওপ্রধানমন্ত্রীশোক প্রকাশ করেছেন।


অপর্ণা খান জানান, রবিবার বাসায় খাট থেকে নামতে গিয়ে কোমরে ব্যথা পান তিনি। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে এক্স-রে করা হলে পাঁজরে গভীর ক্ষত ধরা পড়ে। তারপর থেকে বাসায় বিশ্রামে ছিলেন তিনি। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে তার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে জরুরি ভিত্তিতে তাকে বারডেম হাসপাতালের আইসিউতে ভর্তি করা হয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, কিডনি, ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন বলে জানান তার স্ত্রী।


তিনি খান জানান, করোনা প্রাদুর্ভাবের পর থেকে তিনি সার্বক্ষণিকভাবে বাসাতেই অবস্থান করছিলেন। তবে গত দুই তিন দিন ধরে তিনি খাবার গ্রহণ করতে পারছিলেন না।


রাহাত খান ১৯৪০ সালের ১৯ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার পূর্ব জাওয়ার গ্রামের খান পরিবারের জন্ম গ্রহণ করেন। কর্মসূত্রে রাহাত খান আপাদমস্তক সাংবাদিক। ১৯৬৯ সালে দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় তার সাংবাদিকতা জীবনের হাতেখড়ি।


পরবর্তীতে ষাটের দশকে তিনি দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় যোগদান করেন। ২০০৯ সাল থেকে তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের সহকারী ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৩ সালে তার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় দৈনিক বর্তমান পত্রিকা। বর্তমানে তিনি দৈনিক প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।


রাহাত খান ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হন। জনপ্রিয় ও বিখ্যাত থ্রিলার সিরিজ সিরিজ মাসুদ রানার রাহাত খান চরিত্রটি তার অনুসরণেই তৈরি করা।


রাহাত খান ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। শিক্ষা জীবন শেষ করে রাহাত খান কিছুদিন জোট পারচেজ ও বীমা কোম্পানিতে চাকরি করে ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজে যোগদান করেন।


তারপর একে একে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, চট্টগ্রাম সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনা করার সুযোগ আসে তার।


বর্ণাঢ্য সাংবাদিকতা জীবনে রাহাত খান কথাশিল্প, ছোটগল্প, প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও উপন্যাসের নিপুণ কারিগর হয়ে উঠেন। ১৯৭২ সালে তার প্রথম গল্পগ্রন্থ অনিশ্চিত লোকালয় প্রকাশিত হয়। তার পরবর্তী উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে অমল ধবল চাকরি, ছায়াদম্পতি, শহর, হে শূন্যতা, হে অনন্তের পাখি, মধ্য মাঠের খোলোয়াড়, এক প্রিয়দর্শিনী, মন্ত্রিসভার পতন, দুই নারী, কোলাহল ইত্যাদি।


ইতিমধ্যেই বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭৩), সুহৃদ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭৫), সুফী মোতাহার হোসেন পুরস্কার (১৯৭৯), আবুল মনসুর আহমদ স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮০), হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮২), ত্রয়ী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৮) এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় একুশে পদক (১৯৯৬) পেয়েছেন।


বিবার্তা/জাই

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com