খ্রিষ্টান বিয়ের রীতি
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:৪৭
খ্রিষ্টান বিয়ের রীতি
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

প্রত্যেক মানুষের জীবনেই একজন জীবন সঙ্গীর দরকার। আর সেই জীবনসঙ্গী পাওয়ার সামাজিক পন্থা হলো বিয়ে। বিয়ে হলো একটি সামাজিক বন্ধন বা বৈধ চুক্তি, যার মাধ্যমে দুজন মানুষের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপিত হয়। বিভিন্ন দেশে সংস্কৃতিভেদে বিয়ের সংজ্ঞার সামান্য তারতম্য রয়েছে। তবে সাধারণ ভাবে বিয়ে এমন একটি বিষয়, যার মাধ্যমে দুজন মানুষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ ও যৌন সম্পর্ক সামাজিক স্বীকৃতি লাভ করে।


কিছু ধর্ম বা সংস্কৃতিতে বিবাহ সম্পন্ন করাকে বাধ্যতামূলক হিসেবে পরামর্শ দেওয়া হয় অথবা বিবেচনা করা হয়। কেননা বিয়ে হলো একটি বৈশ্বিক সার্বজনীন সংস্কৃতি। বিয়ে সাধারণত রাষ্ট্র, সংস্থা, ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ, আদিবাসী গোষ্ঠী, স্থানীয় সম্প্রদায় অথবা দলগত ব্যক্তিবর্গের দ্বারা স্বীকৃত হতে পারে। একে প্রায়ই একটি চুক্তি হিসেবে দেখা হয়।


সাধারণত আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মীয় অথবা ধর্মনিরপেক্ষ আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিয়ে সম্পন্ন করা হয়। ধর্মভেদে বিয়ের রীতিনীতি হয় আলাদা। একেক ধর্মে একেক ধরনের বিয়ের নিয়ম। এবার আমরা জানবো খ্রিষ্টানদের বিয়ের রীতিনীতি সম্পর্কে—


নির্বাচন-
খ্রিষ্টান সমাজে সাধারণত প্রথমে পাত্রী দেখা হয়। প্রথমত বরপক্ষই কনে নির্বাচন করে। বরপক্ষ কনে নির্বাচন করে কনের চরিত্র, দোষ-গুণ, বংশ পরিচয় জেনে নেয়।


প্রস্তাব-
শুভদিন দেখে বরপক্ষ কনের বাড়ি যায়। সাধারণত পাশের কোনো আত্মীয়ের বাড়ি গিয়ে তার সঙ্গে কনের বাড়ি যায় এবং তাদের উদ্দেশ্যের কথা জানায়।


বাগদান-
বরপক্ষের প্রস্তাবে কনেপক্ষ রাজি হলে বাগদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কোথাও এ অনুষ্ঠানকে ‘পাকা দেখা’ও বলা হয়। ভাওয়ালে এ অনুষ্ঠানকে ‘পানগাছ’ অনুষ্ঠান বলে। বাগদান উপলক্ষে পান, সুপারি, বিজোড় সংখ্যক মাছ নিয়ে যাওয়া হয়।


বাইয়র-
এ অনুষ্ঠানে বরপক্ষের লোকজন কনের বাড়িতে যায়। যা আগেই কথা বলে ঠিক করে রাখা হয়। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত বর-কনে সবার আশির্বাদ গ্রহণ করে।


নাম লেখা-
বিয়ের ৩ সপ্তাহ আগে কনের বাড়িতে যাজকের কাছে বর-কনে নাম লেখান। অনেকে এ অনুষ্ঠানে আতশবাজি ও বাজনার আয়োজন করেন।


বান প্রকাশ-
এই অনুষ্ঠানে বর-কনে বিয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। মণ্ডলীর বিধি অনুযায়ী এ সময় বিয়ের ক্লাস করতে হয়। এটি বিয়ে পূর্ব বাধ্যতামূলক ক্লাস ব্যবস্থা।


অপদেবতার নজর-
নাম লেখা থেকে শুরু করে বিয়ের আগ পর্যন্ত বর-কনেকে অতি সংযমী জীবনযাপন করতে হয়। অনেকে এ সময় ভূত-প্রেত ও অপশক্তির নজর থেকে রক্ষার জন্য ‘রোজারি মালা’ বা ‘জপমালা’ গলায় পরেন।


কামানি বা গা-ধোয়ানী-
বিয়ের আগের রাতের অনুষ্ঠানকে গা-ধোয়ানী বলে। অনেক খ্রিষ্টান সমাজে এই দিন গায়ে হলুদ মাখিয়ে জাঁকজমকের সঙ্গে অনুষ্ঠান করা হয়।


কনে তোলা-
বিয়ের দিন ভোরে বাদকদলসহ বরের আত্মীয়-স্বজন কনের বাড়ি গিয়ে কনেকে নিয়ে আসে। কনেকে ঘর থেকে আনার সময় তার হাতে পয়সা দেওয়া হয়। কনে বাড়ি থেকে আসার সময় সেই পয়সা ঘরের মধ্যে ছুড়ে ফেলে। এর অর্থ হলো, যদিও সে বাড়ি থেকে চলে যাচ্ছে, তারপরও বাড়ির লক্ষ্মী ঘর থেকে চলে যাচ্ছে না।


গির্জার অনুষ্ঠান-
শুরুতে গির্জার প্রবেশপথে যাজক বর-কনেকে বরণ করে নেন। তারপর বর-কনে দুজনের মধ্যে মালা বদল করা হয়।


ঘর তোলা-
এ অনুষ্ঠানে উঠানের দিকে মুখ করে বড় পিঁড়ির উপরে বর-কনেকে দাঁড় করানো হয়। এরপর বর-কনে সাদা-লাল পেড়ে শাড়ির ওপর দিয়ে হেঁটে ঘরে ওঠে। এ সময় বর ও কনে একে অপরের কনিষ্ঠ আঙুল ধরে থাকে।


তবে এর বাইরেও রীতিনীতি চালু থাকতে পারে। আধুনিক সময়ে আরও সংস্কৃতি যুক্ত হতে পারে। স্বেচ্ছা বিয়ের ক্ষেত্রে বর-কনের সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে ধর্মীয় অনুশাসন অনুযায়ী বাধ্যতামূলক রীতিসমূহ পালন করা হয়।


বিবার্তা/বর্ষা/জেএইচ


সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com