
আজ ২১ জুন, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ। প্রতি বছর ২১ জুনকে বিশ্বব্যাপী সংগীত দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এ শুধু গানের দিন। কিন্তু কেন এই দিনটি?সংগীতের সর্বজনীন রূপকে আন্তর্জাতিকভাবে বরণ করতেই ২১শে জুন পালন করা হয় বিশ্ব সংগীত দিবস।
মূলত, ১৯৮২ সালে ফ্রান্সে ‘ফেত দ্য লা মিউজিক’ বা ‘মেক মিউজিক ডে’ নামে একটি দিনের উদ্যাপন শুরু করা হয়। ফ্রান্সের সংস্কৃতিমন্ত্রী জ্যাক ল্যাং ১৯৮১ সালে প্রথম এ ব্যাপারে ভাবেন। তবে এ তো গেল ইতিহাসের একটি অংশ। অনেকের মতে, ১৯৭৬ সালে ফ্রান্সে মার্কিন সংগীতশিল্পী জোয়েল কোহেন ‘সামার সোলস্টাইস’ বা গ্রীষ্মকে উদ্যাপন করতে সারা রাত গান চালিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব করেন। সেই প্রস্তাবনার পরবর্তী ফলাফল হিসেবেই আসে ২১ জুনের সংগীত দিবস।
সংগীত নিয়ে জ্যাক ল্যাং এর মতো করে ফ্রান্সে খুব বেশি মানুষ ভাবেননি। তিনি ফ্রান্সের প্রথাগত গানের ধারাকে ভাঙতে মরিস ফ্লুরেটকে নিয়োগ দেন। ফ্লুরেট ১৯৮২ সালে বিশাল এক পরিসংখ্যান চালান। এই পরিসংখ্যানে উঠে আসে সংগীত নিয়ে কাজ করা প্রচুর মানুষের কথা। সে সময় ফ্রান্সে প্রতি দুইজন তরুণের মধ্যে একজন কোনো না কোনো বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারতেন। যেখানে তরুণেরা শুধু চিরাচরিত সংগীত শিখবেন না, শিখবেন রক, জ্যাজ, পপ—সব ধারার সংগীত। আর শেষমেশ জ্যাক ল্যাং, প্রকৌশলী ক্রিস্টিয়ান ডুপাভিলন আর মরিস ফ্লুরেটের চেষ্টায় এই উদ্যোগ সফলও হয়েছিল।
বর্তমানে আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, লুক্সেমবার্গ, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, কোস্টারিকাসহ প্রায় ১২০টি দেশে এবং ৪৫০টি শহরে এই দিবস উদ্যাপিত হয়। রেস্তোরাঁ, পার্ক, যানবাহন— সংগীত দিবসে সর্বত্র বিনা মূল্যে গান পরিবেশন করেন শিল্পীরা। শান্তি ও ইতিবাচক চিন্তাকে ছড়িয়ে দিতে মূলত দিবসটি পালিত হয়।
বাংলাদেশেও এ দিবসটিকে গুরুত্বের সঙ্গে পালন করা হয়। শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন আজ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এছাড়া বিভিন্ন শিল্পী ও সংগীত সংশ্লিষ্টরা এ দিবসটি আজ পালন করবে নানা আয়োজনে।
বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের এবারের শ্লোগান হচ্ছে “বিশ্বজনের বিচিত্র গান / এক সপ্তকে বেঁধেছে প্রাণ।” বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে ২১ জুন ২০২২, মঙ্গলবার বিকাল ৩ টায় শিল্পী সমাবেশের মাধ্যমে আয়োজনের প্রারম্ভিক কাজ শুরু হবে এবং বিকাল ৪ টায় দেশের প্রথিতযশা লোকশিল্পী জনাব আকরামুল ইসলাম উৎসবের বেলুন উড়িয়ে এই আয়োজনের আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন।
এরপর সংগীতশিল্পীদের নিয়ে সংক্ষিপ্ত শোভাযাত্রা। অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব কে এম খালিদ এম.পি প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করবেন।
এই অনুষ্ঠানে বিটিআরসি-র চেয়ারম্যান কবি শ্যামসুন্দর সিকদার ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় সচিব মোঃ আবুল মনসুর বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়াও আলোচনায় যুক্ত হবেন দেশবরেণ্য সুরস্রষ্টা জনাব শেখ সাদী খান। সমন্বয় পরিষদের সহ-সভাপতি, একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী মাহমুদ সেলিম এর সভাপতিত্বে শুভেচ্ছা জ্ঞাপনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব জনাব মোঃ আছাদুজ্জামান এবং স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ড. বিশ্বজিৎ রায় অংশ নেবেন।
আলোচনা পর্ব শেষে বিশ্ব সংগীত দিবসের তাৎপর্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দলীয় গান, একক সংগীত, নৃত্য পরিবেশিত হবে। দলীয় গানে সুরের ধারা, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, নিবেদন, গীতশতদল, সংগীত ভবন বাংলাদেশ একাডেমী অব ফাইন আর্টস, বিশ্ববীণা, সপ্তরেখা একাডেমী, বাঁশুরিয়া, লোকাঙ্গণ, মহীরুহ, নির্ঝরিনী একাডেমি।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)
১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]