শিরোনাম
‘ঐতিহাসিক হত্যাকাণ্ডের বিচারে স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল জরুরি’
প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০১৯, ১৪:২৬
‘ঐতিহাসিক হত্যাকাণ্ডের বিচারে স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল জরুরি’
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা ও সৈনিক হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার ড. তুরিন আফরোজ বলেছেন, ঐতিহাসিক হত্যাকাণ্ডের বিচারে দীর্ঘসূত্রিতা দেখা যায়। অনেক সময় রাজনৈতিক প্রভাবও কাজ করে। ফলে এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল জরুরি।


বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের মওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে মুক্তিযোদ্ধা ও সৈনিক হত্যার বিচারের দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন ও অভিমত প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম ট্রাস্ট এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।


ব্যারিস্টার তুরিন বলেন, বাঙালির যেমন অনেক গর্বের ইতিহাস আছে, তেমনি অনেক লজ্জারও ইতিহাস আছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সালের ৭ এপ্রিল পর্যন্ত যা কিছু হয়েছে, ইমডেননিটি আইন করে এসময়কার সবকিছুকে দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে। ফলে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরকে এর ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। যাতে কেউ বিচার করতে না পারে। পরবর্তীতে এই কালো আইনটি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে জাতীয় সংসদে বাতিল করা হয়। শুধু সংসদে নয়, আইনগতভাবেও এটিকে বাতিল করা হয়েছে। ৫ম সংশোধনীতে উচ্চ আদালত থেকে এই কালো আইনকে বাতিল করা হয়।


তিনি বলেন, ১৯৭৯ সালের কালো আইনটি বাতিলের ফলে এখন বলা যায়, সত্য উদ্ঘাটনে আর কোনো আইনগত বাধা নেই। আমি মনে করি, ঐতিহাসিক হত্যাকাণ্ডের বিচারের কোনো বিকল্প নেই। আমরা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার করেছি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি। কাজেই যে ঐতিহাসিক হত্যাকাণ্ডগুলোর বিচার হয়নি, সেগুলোরও বিচার করতে হবে।


বিচার প্রক্রিয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি যে লিটারেচারগুলো পড়েছি, গবেষণা করেছি কয়েক বছর ধরে, সেখানে দেখেছি আর এখনো দেখছি যে, বিচার প্রক্রিয়া ৩টি উপায়ে হতে পারে। তা হলো, তদন্ত কমিশন গঠন করে, ট্রুথ কমিশন গঠন করে এবং বিচারের মাধ্যমে।


তিনি আরো বলেন, জাতির দায়বদ্ধতা থেকে আমাদের সময় এসেছে সত্যকে স্বীকার করে নেয়ার। রাজনৈতিক বাস্তবতার উপর আমাদের ঐতিহাসিক বাস্তবতাকে স্থান দিতে হবে।



সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকাণ্ডের খুনিদের বিচারের দাবি জানান। একইসাথে তারা এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে যারা জড়িত তাদেরও চিহ্নিত করার দাবি জানান।


সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন খালেদ মোশাররফের জ্যেষ্ঠ কন্যা ও সাবেক সংসদ সদস্য মাহজাবীন খালেদ।


তিনি বলেন, আপনারা জানেন, কোন পরিস্থিতিতে কারা, কার ইঙ্গিতে মুক্তিযুদ্ধের লড়াকু সৈনিক খালেদ মোশাররফ বীর উত্তমকে হত্যা করে। খালেদ মোশাররফ কখনো কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত ছিলেন না। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের শায়েস্তা করে সেনাবাহিনীতে চেইন অব কমান্ড ফিরিয়ে আনাই ছিল তার লক্ষ্য।


তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে একজন বিচার বঞ্চিত ভুক্তভোগী, ২১টি বছর যাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে বিচার শুরু করতে, ৩৪ বছর লেগেছে বিচারের রায় কার্যকর করতে। যিনি বিশ্বাস করেন, বিচার চাওয়ার অধিকার সবারই রয়েছে। যিনি বহু চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এবং দেশীয়-আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় নিয়ে এসে জাতিকে কিছুটা হলেও কলঙ্কমুক্ত করেছেন। যিনি শত বাধা পেরিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছেন। তিনি নিশ্চয়ই মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানীদের বিচারের ব্যবস্থা করবেন, সেই আশাই করছি।


সংবাদ সম্মেলনে অভিমত প্রকাশ করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের (বোয়াফ) সভাপতি কবির চৌধুরী তন্ময়, মুক্তিযোদ্ধা আবু ওসমান চৌধুরীর কন্যা নাসিমা ওসমান প্রমুখ।


বিবার্তা/রাসেল/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com