
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের মধ্যেই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে মধ্য আমেরিকার ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ জ্যামাইকা। গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
২৪ এপ্রিল, বুধবার জ্যামাইকা সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে আলজাজিরা ও জ্যামাইকা অবজার্ভার।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের উপপর্যবেক্ষক রাষ্ট্রদূত মাজেদ বামিয়া ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া জ্যামাইকা সরকারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করেছেন।
গাজায় ইসরায়েলের ব্যাপক আগ্রাসন এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অনবরত গভীর মানবিক সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জ্যামাইকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, জাতিসংঘ সনদের প্রতি জ্যামাইকার দৃঢ় প্রতিশ্রুতির সঙ্গে মিল রেখে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাশাপাশি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের কথা বলা হয়েছে।
ঘোষণায় বলা হয়, জ্যামাইকা সরকার ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত সোমবার মন্ত্রিসভার আলোচনার পর পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্যমন্ত্রী সিনেটর কামিনা জনসন স্মিথ এই সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করেছেন।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী কামিনা জনসন স্মিথ বলেছেন, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধান দেখতে চায় তার দেশ। আর সেটা সামরিক পদক্ষেপের পরিবর্তে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে হতে হবে বলেই মত তার।
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে জ্যামাইকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এই সিদ্ধান্ত জাতিসংঘ সনদের নীতিগুলোর প্রতি জ্যামাইকার দৃঢ় প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাশাপাশি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের স্বীকৃতি প্রদান করতে চায়।’
বিবৃতিতে মন্ত্রী কামিনা জনসন স্মিথ বলেন, ‘জ্যামাইকা দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের সমাধান হিসেবে ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং ফিলিস্তিনিদের মর্যাদা ও অধিকার সমুন্নত রাখার একমাত্র কার্যকর বিকল্প হিসেবে একটি দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে ওকালতি করে চলেছে। ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়ে জ্যামাইকা একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে তার সমর্থন জোরদার করল।’
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে জ্যামাইকাসহ মোট ১৪০টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এদিকে, স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার পথে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেছে ইউরোপের দুই দেশ স্পেন ও আয়ারল্যান্ড। দেশ দুটি আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে জোট বাঁধার ঘোষণাও দিয়েছে। এছাড়া ইউরোপের দেশ নরওয়েও ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হলে দীর্ঘদিনের ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিরসনে আবারও আলোচনায় আসে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের বিষয়টি। ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র পাশাপাশি শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করবে, সেটাই দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের মূলকথা। এরই অংশ হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আসছে। এসব দেশের তালিকায় এবার যোগ হলো জ্যামাইকার নাম।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]