‌‘বংশগত কারণের চেয়ে পরিবেশগত কারণে অ্যাজমা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে’
প্রকাশ : ২৯ মে ২০২৪, ০১:৪৫
‌‘বংশগত কারণের চেয়ে পরিবেশগত কারণে অ্যাজমা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে’
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

দুই দশক আগেও দেশে অ্যাজমা বা হাঁপানির অধিকাংশ রোগী ছিল গ্রামাঞ্চলে। তবে এখন শহরাঞ্চলেও এই রোগী উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এই রোগের সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী শিশুরা।


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে ১০ বছরের বেশি বয়সী প্রায় সাড়ে ৩২ লাখ শিশু অ্যাজমায় ভুগছে। তাদের সিংহভাগ শহরাঞ্চলের বাসিন্দা। আর বায়ুদূষণ আর অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণেই শহরে এই রোগী বাড়ছে।


মঙ্গলবার (২৮ মে) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শহীদ ডা. মিল্টন হলে অ্যাজমা রোগ নিয়ন্ত্রণ, সর্বাধুনিক চিকিৎসা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া এবং জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ‘আপডেট অফ অ্যাজমা ম্যানেজমেন্ট’ শীর্ষক বৈজ্ঞানিক সেমিনারের বক্তারা এসব তথ্য জানান।


সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, বর্তমানে বিশ্বের ২৬ কোটিরও বেশি লোক অ্যাজমায় ভুগছেন, যা বিশ্বের জনসংখ্যার ৮ থেকে ১০ শতাংশ। বায়ুদূষণ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার বৃদ্ধির কারণে অ্যাজমা রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। তাই অ্যাজমা রোগ সম্পর্কে চিকিৎসক, রোগী সবাইকে সচেতনতা, অ্যাজমা শিক্ষা এবং এর চিকিৎসার অত্যাধুনিক তথ্যাদি জানা প্রয়োজন।


তিনি বলেন, বর্তমানে বংশগত কারণের চেয়ে পরিবেশগত কারণে অ্যাজমা রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এখন পরিবেশদূষণ, বায়ুদূষণ, রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহারের কারণে রোগী বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে এখন শহরে রোগী বেশি। তবে গ্রামেও প্রচুর রোগী রয়েছে। ইনহেলার ও অন্যান্য ওষুধ গ্রহণের হার বেড়েছে। তবে আশার কথা, আধুনিক চিকিৎসায় এই রোগে মৃত্যুর হার কমছে।


আতিকুর রহমান বলেন, গত এক দশক ধরে পালমোনারি হাইপারটেশন সোসাইটি এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা, পুনবার্সন ও সম্ভাব্য সব সহায়তা প্রদানে কাজ করে যাচ্ছে। মাল্টিডিসিপ্লিনারি অ্যাপ্রোচের মাধ্যমে জটিল এই কন্ডিশনে আক্রান্ত অসহায় রোগীদের পাশে থেকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এই সোসাইটি পালমোনারি হাইপারটেশনসহ বক্ষব্যাধি বিষয়ক রোগের সেবা দিতে অনন্য অবদান রাখছে।


অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক অ্যাজমা রোগের চিকিৎসার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ, রোগ নিয়ন্ত্রণসহ যথাযথ সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আরো বেশি করে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, অ্যাজমা নির্মূল নয়, নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। এই রোগের প্রকোপ বাড়ার পেছনে সবচেয়ে বেশি কাজ করে পরিবেশদূষণ।


এসময় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ তার বক্তব্যে দেশের সব চিকিৎসক বিশেষ করে যেসব চিকিৎসকবৃন্দ দেশের রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থাকেন তাদের এই রোগ ও চিকিৎসা বিষয়ে সম্যক ধারণা ও চিকিৎসা সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।


অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. মানাল মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. হারিসুল হক, বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক ডা. শামীম আহমেদ, সহযোগী অধ্যাপক ডা. রাজাশিস চক্রবর্তী, সহযোগী অধ্যাপক ডা. সম্প্রীতি ইসলামসহ সম্মানিত ডিনবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞগণ, চিকিৎসকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com