৮ টাকার ঘুমের ওষুধ লেবেল পাল্টে বিক্রি হতো ৬০০ টাকায়
প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৪, ২২:৩৮
৮ টাকার ঘুমের ওষুধ লেবেল পাল্টে বিক্রি হতো ৬০০ টাকায়
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

সন্তান জন্মের সময় ব্যথা উপশমের জন্য ব্যবহার করা হয় ‘জি-পেথিডিন’ ইনজেকশন। সংবেদনশীল এ ওষুধ অপারেশনের সময় চিকিৎসকরা সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করেন। অথচ ৮ টাকা দামের ঘুমের ইনজেকশন ‘জি-ডায়াজিপাম’ এর লেবেল পাল্টিয়ে ৬০০ টাকার চেতনানাশক ‘জি-পেথিডিন’ ইনজেকশন তৈরি করে বাজারজাত করে আসছিল একটি চক্র।


সোমবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর মতিঝিল, বাড্ডা ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।


১৯ মার্চ, মঙ্গলবার এসব তথ্য জানান ডিএমপি গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।


গ্রেফতারকৃত তিনজন হচ্ছেন- আলমগীর খাঁন (৪০), মাসুদ রানা (২৯) ও আহসান হাবীব শাওন (৩০)।


তাদের কাছ থেকে জি-পেথিডিন ইনজেকশন ২০০ পিস, ২২০ পিস জি-পেথিডিনের অ্যাম্পুল, এক হাজার ১০ পিস জি-ডায়াজিপামের অ্যাম্পুল, ৫২০ পিস জি-পেথিডিনের খালি বাক্স, ২০০ পাতা জি-পেথিডিন ইনটেক স্টিকার, ৫ কেজি এসিডসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। অথচ ‘জি-পেথিডিন’ তৈরির জন্য শুধু অনুমোদন রয়েছে গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের।


গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, সাধারণত সন্তান জন্মের সময় প্রসূতি মায়েদের ব্যথা উপশমের জন্য ‘জি-পেথিডিন’ ইনজেকশন ব্যবহার করা হয়।


অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া সহকারী পুলিশ কমিশনার এরশাদুর রহমান জানান, প্রচলিত ‘জি-ডায়াজিপাম’ ঘুমের ইনজেকশনকে ঘরোয়াভাবে ‘জি-পেথিডিন’ চেতনানাশক ইনজেকশন বানিয়ে আসছিল চক্রটি। তারা লেবেল পরিবর্তন করে গত ৭-৮ বছর ধরে এই কারবার চালিয়ে আসছিল।


ডিবি প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ জানান, উত্তর যাত্রাবাড়ীর একটি বাসায় নকল জি-পেথিডিন ইনজেকশন তৈরি করে চক্রটি প্রতিটি অ্যাম্পুল ৬০০ টাকা করে বিক্রি করছিল।


গোয়েন্দা প্রধান বলেন, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মো. আলমগীর খান রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকা থেকে ‘জি-ডায়াজিপাম’ ঘুমের ইনজেকশন প্রতিটি আট টাকায় কিনে বাসায় নিয়ে যান। পরে ইনজেকশন অ্যাম্পুলকে এসিড দিয়ে ভিজিয়ে রেখে গায়ে লেখা তুলে কাঠ ও প্লাস্টিক দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি স্কিন প্রিন্ট করার ফ্রেম দিয়ে ‘জি-পেথিডিন’ ইনজেকশনের নামে নামকরণ করে। পরে এসব অ্যাম্পুল প্লাস্টিকের ট্রেতে পাঁচটি করে সাজিয়ে হাতে চালানো চাপ মেশিন দিয়ে ‘জি-পেথিডিন’ ব্যথানাশক ফয়েল পেপার সংযুক্ত করা হয়। আর বাজারে এসব নকল ‘জি-পেথিডিন’ প্রতিটি ৬০০ টাকায় বাজারজাত করা হয়।


তিনি আরো বলেন, রাজধানীর অনেক খ্যাতনামা হাসপাতালের নিচের বিভিন্ন ফার্মেসিতে এসব ওষুধ ব্যবহার করা হয়। আমরা বারিধারা জেনারেল হাসপাতালের নিচের ফার্মাসিস্টের সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রমাণ পেয়েছি, তাকে আটক করা হয়েছে। একই সঙ্গে তদন্ত করে যাদের নাম পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।


এক প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশিদ বলেন, এসব ভেজাল ওষুধ বিক্রি করে একদিকে মুনাফা করে আসছিল, অন্যদিকে রোগীদের ঝুঁকির মুখে ফেলে দিচ্ছে চক্রটি। মিটফোর্ডে কারা কারা এসব ঘুমের ইনজেকশন বিক্রি করত এবং কোন কোন স্থানে এসব পেথিডিন বিক্রি করা হচ্ছে এসব বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই পেথিডিন ইনজেকশন প্রয়োগে কেউ মৃত্যুঝুঁকিতে পড়েছে কি না এ বিষয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com